আবু হায়াত বিশ্বাস, দিল্লি: মহারাষ্ট্রে পুর নির্বাচনের আগে বদলাচ্ছে সমীকরণ! ইঙ্গিত তেমনই। ভাষা বিতর্ককে সামনে রেখে পরস্পরের মধ্যে দূরত্ব সরিয়ে কাছাকাছি আসছেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে ও এমএনএস প্রধান রাজ ঠাকরে! আগামী ৫ জুলাই মুম্বইয়ে দুই ভাইকে দেখা যাবে একমঞ্চে! মহারাষ্ট্রের স্কুলে পাঠ্যক্রমে হিন্দি বাধ্যতামূলক করার পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ জানাবেন তারা! করবেন পদযাত্রাও। জানা গিয়েছে, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ অনুসারে স্কুলে তিন ভাষা বাধ্যতামূলক করার বিরোধিতায় একই পদযাত্রায় হাঁটবেন উদ্ধব এবং রাজ ঠাকরে। এই ইস্যুতে ঠাকরে ভাইদের পাশে রয়েছে শারদ পাওয়ারের এনসিপি। শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে ও মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার প্রধান রাজ ঠাকরের কাছাকাছি আসার বিষয়টি মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণের বার্তা দিচ্ছে।
চলতি বছরের শেষ দিকে বৃহন্মুম্বই পুরসভা নির্বাচন। অনেকেই মনে করছেন, হিন্দি ভাষা বাধ্যতামূলক করার প্রতিবাদে দুই ভাইয়ের কাছাকাছি আসার পিছনে রয়েছে রাজনৈতিক অঙ্ক। পুর নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে একজোট হচ্ছেন উদ্ধব এবং রাজ ঠাকরেরা। উল্লেখ্য, চলতি বছরের এপ্রিলে মহারাষ্ট্রের বিজেপি সরকার মহারাষ্ট্রের মারাঠি এবং ইংরেজিমাধ্যম স্কুলগুলিতে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত হিন্দি বাধ্যতামূলক তৃতীয় ভাষা হিসেবে ঘোষণা করে। সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে শোরগোল শুরু হয় রাজ্যে। বিতর্কের মধ্যে আপাতত এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার কথা জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীশ। সম্প্রতি রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে তৃতীয় ভাষা হিসেবে হিন্দিকে বাধ্যতামূলক করার বিষয়টি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যদিও এরপরেও ভাষা বিতর্ক থামছে না। বিরোধীদের দাবি, সরকার হিন্দি বাধ্যতামূলকের বিষয়টি পুরোপুরি বাতিল করেনি। জিইয়ে রেখেছে বিষয়টি। সেই নিয়েই এ বার এক জোট হয়ে পথে নামছেন উদ্ধব এবং রাজ।
২০০৫ সালের ২৭ নভেম্বর শিবসেনার উত্তারাধিকার উদ্ধব ঠাকরেকে ঘোষণা করে দেওয়ার পর রাজ ঠাকরে দল থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। তৈরি করেছিলেন মহারাষ্ট্র নবনির্মান সেনা। তারপর থেকেই দুই ভাইয়ের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। ২০ বছর পর উদ্ধবকে নিয়ে কিছুটা সুর নরম করেছেন রাজ ঠাকরে। কয়েকমাস আগে একটি সাক্ষাতকারে রাজ ঠাকরে জানিয়েছিলেন,‘আমার মনে হয়না একসঙ্গে কাজ করা, কাছাকাছি আসা খুব কঠিন কাজ হবে। কেবল এটা ইচ্ছাশক্তির ব্যাপার। কেবল আমার নিজের ইচ্ছা বা স্বার্থের ব্যাপার এটা নয়। আমি বিশ্বাস করি আমাদের মহারাষ্ট্রের বৃহত্তর চিত্রটি দেখা উচিত।’ উদ্ধবের সঙ্গে তার কাজ করতে অসুবিধা নেই বলেও জানিয়েছিলেন রাজ। তাঁর ওই বক্তব্যের পরেই ইতিবাচক বার্তা দিয়েছিল উদ্ধব শিবির।
