আজকাল ওয়েবডেস্ক: পহেলগাঁও হামলার পর থেকেই আরও জোরদার নিরাপত্তা। এবার খোঁজ মিলল গুহার! সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর তেমনটাই। জানা গিয়েছে, জঙ্গি ঘাঁটি সন্দেহে সোমবার সেনা বিস্ফোরণে ধূলিস্যাত করেছে একটি গুহা।

রবিবার থেকেই জম্মু ও কাশ্মীরের কিশ্বর জেলায় সন্ত্রাস-বিরোধী অভিযান চালাচ্ছে সেনা। ভারতীয় সেনা সূত্রে খবর, রবিবার সকালে গোপন সূত্রে খবর মেলে, ওই নির্দিষ্ট এলাকায় রয়েছে সন্তারসীদের উপস্থিতি। শুরু হয় খোঁজ। সোমবার সকালে একটিগুহার উপর বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেনার ধারণা, ওই গুহাকেই গোপন আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করে, লুকিয়ে নিজেদের কাজ চালায় সন্ত্রাসী জঙ্গিরা। 

আরও পড়ুন: 'মন্দিরের উপর বানানো হয়েছে, এসব চলবে না', ফতেপুরে নবাবের সমাধিক্ষেত্র ভাঙছেন বিজেপি নেতা? আজই পুজোর


গুহার খোলা স্থানে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সর্বভারতীয় সংবাদ  মাধ্যম সূত্রে খবর, মুহূর্তেই বিশাল আগুন ছড়িয়ে পড়ে চতুর্দিকে।  সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে জম্মু ও কাশ্মীরের কিশতওয়ারা এবং আরও সাত জেলার নিরাপত্তা নিয়ে বড় চিন্তা। ২০২১ সাল পর্যন্ত ওই অঞ্চল সন্ত্রাস মুক্ত ছিল। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করে হয়েছে ওই নির্দিষ্ট অঞ্চলগুলিতে এখন পাকিস্তান থেকে উচ্চ প্রশিক্ষিত সন্ত্রাসীদের নজর বলে ধারণা।

নিরাপত্তা বাহিনী যখন কিশতওয়ার পাহাড় থেকে সন্ত্রাসীদের হটানোর চেষ্টায়, ঠিক  তখনই শত শত সেনা কুলগাম জেলার আখালের জঙ্গলে দীর্ঘতম সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের একটিতে নিযুক্ত রয়েছেন। ১১ দিন ধরে চলছে লড়াই।  শনিবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর দুই জওয়ান নিহত  হন এবং আরও দু' জন আহত হন। ঘন জঙ্গলে তল্লাশি অভিযানের মাঝেই সন্ত্রাসীরা গ্রেনেড ছুড়ে মারে।

এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ১ আগস্ট আখলে অভিযান শুরু হয়। প্রাথমিক গুলিবিনিময়ের সময় একজন স্থানীয় সন্ত্রাসী নিহত হয় কিন্তু সংঘর্ষ বনাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাহিনীর জন্য পরিস্থিতি কঠিন হয়ে পড়ে। সরকারি সূত্র জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত এই সংঘর্ষে ১০ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য আহত হয়েছেন।

 

এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ২২ এপ্রিলের ঘটনা। ২২ এপ্রিল। পহেলগাঁও হামলা। ভূস্বর্গ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিল সেদিন। নৃশংস জঙ্গি হামলায় রক্তাক্ত হয়েছিল উপত্যকা। প্রাণ গিয়েছিল ২৬ জন সাধারণ মানুষের। পহেলগাঁও হামলার প্রত্যাঘাত, ৭ মে। অপারেশন সিঁদুর। ১৯৭১-এর পর প্রথমবার একযোগে তিন সেনা বাহিনীর হামলা পাকিস্তানের উপর। হামলার পরেই, সেনাবাহিনী বিবৃতিতে স্পষ্ট জানিয়েছে, পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত জঙ্গিঘাঁটিগুলিতে আক্রমণ চালানো হয়েছে, যেখানে ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল এবং হামলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তারপর থেকে ভারত-পাক দুই দেশের সংঘর্ষ চলে। ভারত প্রথম থেকেই দাবি করেছিল, কেবল বেছে বেছে জঙ্গি ঘাঁটিই গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ ছিল, পাকিস্তান জঙ্গিদের পাশে দাঁড়িয়েছে। টানা কয়েকদিনের সংঘর্ষের পর, দুই দেশ রাজি হয় অস্ত্রবরতিতে। 

অপারেশন সিঁদুর। কোন কৌশলে পাক-মাত। একের পর এক তথ্য উঠে আসছে সামনে। এবার সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী মাদ্রাজ আইআইটির এক অনুষ্ঠানে খোলসা করলেন গোপন কথা। পাকিস্তানকে মাত দেওয়ার গোপন কৌশলকে তিনি দাবার ঘুঁটি সাজানোর সঙ্গে তুলনা করেছেন। 

 

আইআইটি মাদ্রাজের ভারতীয় সেনা গবেষণা সেল 'অগ্নিষোধ'-এর উদ্বোধনকালে তিনি এই বিষয়ে আলোকপাত করেন। সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে জেনারেল দ্বিবেদী অপারেশনের কৌশলকে দাবা খেলার মতো বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, অপারেশন সিন্দুর একটি "ধূসর অঞ্চলে" পরিচালিত হয়েছিল, যা অপ্রত্যাশিত এবং সম্পূর্ণ প্রচলিত সামরিক অভিযানের চেয়ে কিছুটা আলাদাই ছিল। তাঁর মতে,  অপারেশন সিঁদুরের সময়, ভারত পদক্ষেপ নিয়েছে, ঘুঁটি সাজিয়েছে যেমন ঠিক, তেমনি শত্রুপক্ষ কী করছে, করতে চলছে, তা সম্পর্কে ধারণা ছিল না বিন্দুমাত্র। তাঁর মতে, উরি, বালাকোটের চেয়ে এই অভিযান চজিল একেবারে আলাদা।