আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিহারের দীর্ঘতম সময়ের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পরিচিত নীতীশ কুমার বিধানসভা নির্বাচনের প্রতি তাঁর দূরত্ব বজায় রাখার জন্যই বিশেষভাবে পরিচিত। ১৯৮৫ সালের পরে তিনি আর বিধানসভা ভোটে অংশ নিয়ে পদ নেননি।
১৯৯৫ সালে একবার হারনৌট কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে লড়েছিলেন তিনি। কিন্তু জেতার পরও সে আসন ধরে রাখেননি; বদলে তিনি লোকসভা সাংসদ হিসেবেই দায়িত্ব চালিয়ে যান।
প্রায় তিন দশক ধরে তিনি নিয়মিতভাবে আইন পরিষদের পথেই রাজ্য বিধান পরিষদের সদস্যপদ বজায় রেখেছেন। ২০০০ সালে প্রথমবার মুখ্যমন্ত্রী হন নীতীশ কুমার। তখন তিনি বিধানসভার বা পরিষদের কোনও কক্ষেরই সদস্য ছিলেন না।
মাত্র আট দিন পর সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের আগেই তাঁকে পদত্যাগ করতে হয়। ২০০৫ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফিরেও তিনি বিধানসভা ভোটে দাঁড়াননি। মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পর আইন পরিষদের সদস্য হন।
এরপর থেকে প্রতি মেয়াদেই তিনি এই পথই বেছে নিচ্ছেন। বিহার হল ভারতের ছ’টি রাজ্যের একটি, যেখানে দুই কক্ষের বিধান পারিষদ রয়েছে। ফলে বিধানসভা ভোটে না লড়েও আইন পরিষদের মাধ্যমে মন্ত্রিসভায় থাকা যায়।
২০১২ সালে তাঁর প্রথম পরিষদ সদস্যপদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নীতীশ ফের নির্বাচিত হন। সেই সময় থেকেই শুরু হয় প্রশ্ন—কেন তিনি বিধানসভা ভোটে অংশ নেন না?
২০১২ সালে আইন পরিষদের শতবর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে নীতীশ জানান, ‘আমি এমএলসি হয়েছি নিজের ইচ্ছায়, কোনও বাধ্যবাধকতায় নয়। উচ্চকক্ষ একটি সম্মানজনক প্রতিষ্ঠান।’
তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতেও তিনি পরিষদের পথেই থাকতে চান। ২০১৫ সালের নির্বাচনের আগে তিনি আবারও স্পষ্ট করে জানান, তিনি বিধানসভা আসনে লড়বেন না, কারণ তিনি ‘নিজেকে একটি কেন্দ্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চান না।’
২০১৮ সালে তিনি টানা তৃতীয়বারের জন্য আইন পরিষদে প্রবেশ করেন। তাঁর মেয়াদ শেষ হয় ২০২৪ সালে। এর পর ২০২৪ সালের মার্চে তিনি ফের এমএলসি নির্বাচিত হন। যা তাঁকে ২০৩০ সালের মে পর্যন্ত পরিষদের সদস্যপদ নিশ্চিত করেছে।
২০২৫ সালে বিহারে দু’দফায় বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে। তার ফলাফল বেরিয়েছে শুক্রবার। নিরঙ্কুশ জয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ)-র।
বিকেল সাড়ে ৪টে পর্যন্ত প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী, এনডিএ ২০৯টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। মহাগঠবন্ধন এগিয়ে রয়েছে ২৯টি আসনে। বাকি আসনে এগিয়ে রয়েছে অন্যান্যরা। ২৪৩ আসনের বিহার বিধানসভার জাদুসংখ্যা ১২২।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বিহারে এনডিএ জোটের বিজেপি ৯৫টি, নীতিশ কুমারের জেডিইউ ৮৫টি, চিরাগ পাসওয়ানের এলজেপি ১৯টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। অন্যদিকে, বিরোধী মহাগঠবন্ধনের তথৈবচ অবস্থা।
একা কুম্ভ তেজস্বী যাদবে আরজেডি। তারা ২৫টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। ধুলোয় মিশে গিয়েছে কংগ্রেস। রাহুলের দল মাত্র দু’টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। বামেরাও এক সংখ্যক আসনেই এগিয়ে রয়েছে।
বিহারে একমাত্র খবরে রয়েছেন তেজস্বী যাদব। রাঘোপুরে ২২ রাউন্ডের গণনার শেষে আট হাজার ভোটে এগিয়ে রয়েছেন তিনি। মোকামায় জয়ী শাসকজোটের জেডিইউয়ের জেলবন্দি প্রার্থী অনন্ত সিংহ ২৮ হাজারেরও বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন।
