আজকাল ওয়েবডেস্ক: মণিপুরের টাংখুল নাগা-অধ্যুষিত কামজং জেলায় আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের ৫,০০০-র বেশি শরণার্থী বোমা হামলার ভয় কাটিয়ে সম্প্রতি নিজ দেশে ফিরে গিয়েছেন বলে দাবি করেছে ইম্ফল-ভিত্তিক সংবাদপত্র সাংঘাই এক্সপ্রেস। জুন ২৮ তারিখে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে "বিশ্বস্ত সূত্র" উদ্ধৃত করে পত্রিকাটি জানায়, কেন্দ্রীয় সরকার নতুন করে আর শরণার্থী প্রবেশে অনুমতি দিচ্ছে না, কারণ পরিস্থিতি "উন্নত হয়েছে"।

তবে এই প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে একাধিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন। ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক আইনজীবী সংস্থা আইসিজে (ICJ) জানায়, ৭৭ জন শরণার্থীকে বলপূর্বক ফেরত পাঠানো আন্তর্জাতিক নন-রিফাউলমেন্ট নীতির লঙ্ঘন। ২০২৪ সালের জুনে কামজং জেলায় মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসেন প্রায় ৫,৪০০ জন। ভারতের অসম রাইফেলস-এর ডিজি প্রদীপ চন্দ্রন নায়ার জানান, তারা মূলত সেনাবাহিনীর বিমান হামলা থেকে বাঁচতে সীমান্ত পেরিয়েছেন।

বর্তমানে জেলার বিভিন্ন নাগা গ্রামে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ৭,০০০ শরণার্থী। তাঁদের মধ্যে ৬,০০০ জনের বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করেছে রাজ্য সরকার। শরণার্থীদের হাতে পরিচয়পত্র তুলে দেওয়া হয়েছে যাতে স্থানীয়দের থেকে আলাদা করে চিহ্নিত করা যায়। তাঁরা নামলি, ওয়াংলি, কে আশাং খুল্লেন, চোরো, পিলং, ফাইকক, হুইমিন থানা, শ্যাংকালক প্রভৃতি গ্রামে শিবিরে রয়েছেন। অনেকেই দিনে নিজ গ্রামে কৃষিকাজে যান এবং সন্ধ্যায় কামজংয়ে ফিরে আসেন। জেলার প্রশাসনের সহযোগিতায় অসম রাইফেলস ও অন্যান্য সংস্থারা শরণার্থীদের পরিচয় নিশ্চিত করতে তৎপর। পাশাপাশি মানবিক দিক বিবেচনা করে খাদ্য, বাসস্থান এবং প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের মে মাসে মণিপুরে মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে জাতিগত সংঘর্ষে উত্তেজনা ছড়ায়। কুকিরা মিয়ানমারের চিন সম্প্রদায়ের আত্মীয়গোষ্ঠী হওয়ায় এই শরণার্থী ইস্যু সেই সংঘাতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।