আজকাল ওয়েবডেস্ক: ঘরে-বাইরে শোচনীয় পরিস্থিতিতে যাদব পরিবার। লালু প্রসাদ যাদবের কন্যা রোহিণী আচার্যের পরিবার ত্যাগের একদিন পরেই যাদব পরিবারে সঙ্কট আরও গভীর চেহারা নিল।
রোহিনী আচার্যের প্রকাশ্যে বিস্ফোরক ক্ষোভ এবং পরিবারের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণার পর রবিবার পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠল।
পরিবারের আরও তিন কন্যা রাজলক্ষ্মী, রাগিনী ও চন্দা নিজেদের সন্তানদের নিয়ে পাটনার সরকারি বাসভবন ছেড়ে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিলেন।
এতে স্পষ্ট, বিহারের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারে ভাঙন আরও প্রশস্ত হচ্ছে। বিহার বিধানসভা নির্বাচনে আরজেডির ফল একেবারেই ভাল হয়নি।
৭৫টি আসন থেকে তারা নেমে এসেছে প্রায় ২৫ আসনে। নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর থেকেই দল এবং পরিবারে অস্থিরতা তুঙ্গে।
এই অশান্তির মধ্যেই সোমবার ভোরে নিঃশব্দে ১০ সার্কুলার রোড ছাড়েন রাজলক্ষ্মী, রাগিনী ও চন্দা। সূত্রের খবর, গত দু’দিনের ঘটনাবলি তাঁদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলেছিল।
এই প্রস্থানের পর আরজেডির একসময়ের জমজমাট ‘পাওয়ার সেন্টারে’ এখন শুধু লালু প্রসাদ যাদব, রাবড়ি দেবী এবং মিসা ভারতী থেকে গিয়েছেন।
অন্যদিকে, নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকে সমালোচনার মুখে থাকা তেজস্বী যাদব জনসমক্ষেই আসেননি। উল্লেখ্য, শনিবার রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা করেন লালু-কন্যা এবং তেজস্বী যাদবের বোন রোহিণী আচার্য।
পরিবারের সঙ্গেও সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা জানিয়েছেন তিনি। এক্স-পোস্টে রোহিণী আচার্য জানিয়েছেন, আরজেডি-র দুই বিদ্রোহী নেতা সঞ্জয় যাদব এবং রমিজ আলমের পরামর্শেই তিনি এই পদক্ষেপ করেছেন।
উল্লেখ্য, রমিজ আলম রোহিনীর স্বামী। এক্স পোস্টে রোহিণী লিখেছেন, ‘আমি রাজনীতি ছেড়ে দিচ্ছি এবং আমার পরিবারকে ত্যাগ করছি... সঞ্জয় যাদব এবং রমিজ আমাকে এটাই করতে বলেছিলেন... এবং আমি সমস্ত দোষ নিজের কাঁধে নিচ্ছি।’
পেশায় চিকিৎসক লালু-কন্যা রোহিণী আচার্য বছর কয়েক আগে আরজেডি-তে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিহারের সরণ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করেছিলেন।
কিন্তু বিজেপির রাজীব প্রতাপ রুডির কাছে বিপুল ভোটের ব্যবধানে হেরে যান। চলতি বছরের মে মাসে লালু প্রসাদ যাদব তাঁর বড় ছেলে তেজ প্রতাপ যাদবকে তেজ্যপুত্র বলে ঘোষণা করেছিলেন।
তেজপ্রতাপ, অনুষ্কা যাদবের সঙ্গে তাঁর প্রেমের কথা ঘোষণা করতেই তাঁকে আরজেডি থেকে বহিষ্কার করা হয়। তার কয়েক মাস পরেই ফের লালু-তেজস্বীর পরিবারের কলহ সামনে এল।
লালু-রাবড়ি দম্পতির মোট সাত কন্যা ও দুই পুত্র। বিহারের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে তাঁদের পরিবার দীর্ঘদিন ধরেই সবচেয়ে পরিচিত নাম।
সন্তানদের মধ্যে বড় মেয়ে মিসা ভারতী, তার পর রোহিনী আচার্য, চন্দা সিংহ, রাগিনী যাদব, হেমা যাদব এবং অনুষ্কা রাও (ধন্নু)। দুই পুত্রসন্তান তেজ প্রতাপ ও তেজস্বী যাদব বিহার রাজনীতির সক্রিয় মুখ।
পরিবারের সবচেয়ে ছোট মেয়ে রাজলক্ষ্মী সিং যাদব। প্রতিটি কন্যাই বিবাহসূত্রে যুক্ত প্রভাবশালী পরিবারে। রোহিনীর স্বামী সমরেশ সিং, চন্দার স্বামী বিক্রম সিং, ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের পাইলট, রাগিনীর স্বামী সমাজবাদী পার্টির নেতা রাহুল যাদব, হেমার স্বামী বণীত যাদব, অনুষ্কার স্বামী চিরঞ্জীব রাও হরিয়ানার নেতা অজয় সিংহ যাদবের পুত্র। রাজলক্ষ্মীর স্বামী তেজ প্রতাপ সিং যাদব।
