আজকাল ওয়েবডেস্ক: মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের উদ্দেশ্যে কৌতুকশিল্পী কুণাল কামরা বিতর্কিত 'গদ্দার' (বিশ্বাসঘাতক) রসিকতা রাজনৈতিক ঝড় তুলেছে। বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা কামরার বক্তব্যের নিন্দা করেছেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। কুণাল এর পর থেকেই একের পর এক খুনের হুমকি পাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন তাঁর ঘনিষ্ঠরা। তাঁদের দাবি, কমপক্ষে ৫০০টি হুমকি ফোন পেয়েছেন কুণাল। এমনকি তাঁকে টুকরো টুকরো করা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।
এক অনুষ্ঠানে কুণাল কামরা মহারাষ্ট্রের রাজনীতি, এবং শেষভাগে একনাথ শিন্ডেকে নিয়ে বেশ কৌতুক করে গান বেঁধেছেন। তিনি শিবসেনা ভেঙে দুই দল, এনসিপি ভেঙে দুই দল তৈরি হওয়ার কথা যেমন বলেছেন নিজের মন্তব্যে, তেমনই একনাথ শিন্ডেকে নিয়ে গান বেঁধেছেন বিখ্যাত বলিউড গানে ‘দিল তো পাগল হ্যায়’-র সুরে। তাতে শিন্ডেকে নাম না করে গদ্দার বলেছেন খোলাখুলি, বালাসাহেব-পুত্র উদ্ধব রাজনীতিতে থাকার পরেও যেভাবে শিন্ডে-সেনা ‘আসল সেনা’-র তকমা পেয়েছে, রসিকতা করেছেন তা নিয়েও। কটাক্ষ করে ‘বাবা-চুরি’র উল্লেখ করেছেন।
এই মন্তব্যের পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। শিবসেনা সমর্থক এবং কর্মীরা যেখানো শো-টি আয়োজিত হয়েছিল সেই স্টুডিওটিতে ভাঙচুর চালিয়েছেন। কুণালের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। শিবসেনা বিধায়কদের অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে মানহানিকর মন্তব্য করার অভিযোগে মামলা করেছে মুম্বই পুলিশ। কৌতুকশিল্পীকে হাজিরা দেওয়ার জন্য সমনও পাঠিয়েছে তারা। যদিও তাঁর আইনজীবী জানিয়েছেন, পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন কুণাল। হাজিরা দেওয়ার জন্য এক সপ্তাহ সময়ও চাওয়া হয়েছে। তবে মুম্বই পুলিশের পাল্টা দাবি, কুণালকে তাঁর মন্তব্যের জন্য তলব করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি হাজিরা দেননি। আইনি পরামর্শ নিয়ে এই বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। অনুষ্ঠানস্থল ভাঙচুরের জন্য শিন্ডের নেতৃত্বাধীন শিবসেনার ৪০ জন কর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশ মামলাও দায়ের করেছে। সোমবার পুলিশ শিবসেনা নেতা রাহুল কানাল এবং আরও ১১ জনকে গ্রেপ্তার করে। স্থানীয় একটি আদালত ওই দিনই তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেছে।
মঙ্গলবারও কুণাল একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন যেখানে তিনি শিবসেনা কর্মীদের সমালোচনা করেছেন যারা স্টুডিওতে ভাঙচুর করেছিলেন। ভিডিওতে, কুণালকে 'হাম হোঙ্গে কাঙ্গাল' গানটি গাইতে শোনা যাচ্ছে। সেই গানের সঙ্গে শিন্ডের শিবসেনা কর্মীদের স্টুডিওতে ভাঙচুরের ভিডিও ক্লিপগুলি দেখা যাচ্ছে।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এই বিতর্কের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, "মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে 'ব্যক্তিগত আক্রমণ' করার জন্য ব্যবহার করা যাবে না।" বুধবার সকালে প্রচারিত এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন, "কিছু মানুষ বাকস্বাধীনতাকে জন্মগত অধিকার হিসেবে বিবেচনা করেছেন। দেশকে আরও বিভক্ত করার জন্য।"
