আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতের নিন্দা না করে অন্য কোনও দেশের প্রশংসা করা রাষ্ট্রদ্রোহিতা নয়। এমনই পর্যবেক্ষণ হিমাচল প্রদেশ হাইকোর্ট। আদালত জানিয়েছে, অন্য দেশের প্রশংসা মানেই তা বিচ্ছিন্নতাবাদী অনুভূতি বা ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপকে উস্কে দেওয়া নয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুখে "পাকিস্তান জিন্দাবাদ" (পাকিস্তান দীর্ঘজীবী হোক) শব্দযুক্ত একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-নির্ভর ভিডিও পোস্ট করার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি রাকেশ কাইন্থলা অভিযুক্তকে জামিন দিয়েছেন।

বিচারপতি রাকেশ কাইন্থলার বেঞ্চ বলেছে যে, পোস্টটি ভারত সরকারের বিরুদ্ধে ঘৃণা বা অসন্তোষ তৈরি করেছে এমন কোনও অভিযোগ নেই। আদালত উল্লেখ করেছে, "মাতৃভূমির নিন্দা না করে অন্য কোনও দেশের প্রশংসা করা রাষ্ট্রদ্রোহিতার মতো অপরাধ নয়। কারণ এটি সশস্ত্র বিদ্রোহ, ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপকে উস্কে দেয় না বা বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপের অনুভূতিকে উৎসাহিত করে না। অতএব প্রাথমিকভাবে, আবেদনকারীকে অপরাধ সংঘটনের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য পর্যাপ্ত তথ্য নেই।"

মামলাটি কী ছিল?
চলতিু বছরে মে মাসে সিরমোর জেলার পাওন্তা সাহিবের পুলিশ অভিযুক্ত সুলেমানকে নতুন ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস)-এর ১৫২ ধারার অধীনে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করে। পুলিশের যুক্তি ছিল, সুলেমানের কার্যকলাপ ভারতের ঐক্য ও অখণ্ডতাকে বিপন্ন করেছে। ফলে এমন কার্যকলাপকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা হিসেবে গণ্য করে। এই বিধানটি ভারতীয় দণ্ডবিধির বাতিলকৃত ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪এ ধারার মধ্যে নিহিত, যা রাষ্ট্রদ্রোহকে অন্তর্ভুক্ত করে। সুলেমান ৮ জুলাই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তদন্তকারীরা বলেছেন যে, পোস্টটি উস্কানিমূলক, বিশেষ করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের কারণে।

সুলেমানের আইনজীবী আদালতকে বলেছেন যে, তাতাঁর মক্কেলকে মিথ্যাভাবে জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং চার্জশিট দাখিলের অর্থ হেফাজতে রাখার অর্থ আর কোনও উদ্দেশ্য সাধন করা হয়নি। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী যুক্তি দিয়েছিলেন যে, পাকিস্তানের সমর্থনে স্লোগান তোলা দেশবিরোধী আচরণের সমান। আদালত উল্লেখ করেছে যে, পুলিশ ইতিমধ্যেই পোস্টে ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক ডিভাইসটি বাজেয়াপ্ত করেছে এবং ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে।

আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, "পুলিশ চার্জশিট দাখিল করেছে, এবং আবেদনকারীকে হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন আছে এমন কিছু দেখানোর নেই। অতএব, আবেদনকারীকে হেফাজতে রেখে কোনও ফলপ্রসূ উদ্দেশ্য সাধিত হবে না।"

আরও পড়ুন- ১০০ নেতার সঙ্গে আলোচনা, তাতেও হিমশিম অবস্থা! জাতীয় সভাপতি খুঁজতে ল্যাজেগোবরে বিজেপি