আজকাল ওয়েবডেস্ক: মার্সিডিজ জি-ক্লাস কেবল একটি গাড়ি নয়, এটি আভিজাত্য এবং মর্যাদার প্রতীক। সাধারণত তারকা বা শিল্পপতিদের গ্যারাজেই এই গাড়ির দেখা মেলে। কিন্তু এ বার প্রচারের আলোয় এমন এক জন, যাঁকে দেখে চোখ কপালে উঠেছে সকলের। সম্প্রতি ইন্টারনেটে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, এক কৃষক প্রায় ৩ কোটি টাকা মূল্যের একটি নতুন মার্সিডিজ জি-ওয়াগন এসইউভি কিনছেন। সবচেয়ে চমকপ্রদ বিষয় এখানে তাঁর সাদামাঠা সাজ। ধুতি-পাঞ্জাবি পরে, স্ত্রীর সঙ্গে একটি সাদা মার্সিডিজ জিএলএস গাড়িতে চেপে তিনি শোরুমে আসেন।

 

শোরুমের ভিতরে ঢুকে ওই কৃষক তাঁর নতুন গাড়ির উপর থেকে পর্দা সরিয়ে দেন। এর পর চাবি নেওয়ার আগে তাঁর স্ত্রী আরতি করেন। বিলাসবহুল গাড়িতে বসার পর কৃষক প্রথমে প্রার্থনা করেন এবং তার পর এক তৃপ্তির হাসি মুখে নিয়ে গাড়িটি ভালভাবে খুঁটিয়ে দেখেন। কিছুক্ষণ পরেই তিনি গাড়ি চালু করে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে শোরুম থেকে বেরিয়ে যান। এক জন কৃষকের এমন বিলাসবহুল গাড়ি চালানোর দৃশ্য নিমেষেই নেটদুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই তাঁর এই সাফল্যের প্রশংসা করলেও, নানা কারণে সমালোচনা করতেও ছাড়েননি কেউ কেউ।

 

পোস্টটিতে এক জন মন্তব্য করেছেন, "আয়কর দপ্তরের নজর না লাগে যেন!"

আর এক জন লিখেছেন, "কোথায় গেল তারা, যারা কৃষকদের গরিব বলে?"

এক জনের কটাক্ষ, "জমি বেচে গাড়ি কেনাকে উন্নতি বলে না।"

অন্য এক ব্যক্তি মন্তব্য করেন, "খেতের পাশ দিয়ে হাইওয়ে গিয়েছে বোধহয়।"

 

তবে এক জন প্রশংসার সুরে লিখেছেন, "ঐতিহ্যবাহী পোশাকই সংস্কৃতির গর্ব, এতে অস্বাভাবিক কী আছে? আমরা পশ্চিমি সংস্কৃতি অনুসরণ করি, কিন্তু আমাদের আসল সংস্কৃতি তো এই। এই হল আভিজাত্য।"

 

মার্সিডিজ জি-ওয়াগন গাড়িটিতে রয়েছে একটি ৩.০ লিটারের ছয়-সিলিন্ডার ডিজেল ইঞ্জিন। এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে একটি নাইন-স্পিড স্বয়ংক্রিয় ট্রান্সমিশন, যা শক্তি এবং আরামের ভারসাম্য বজায় রাখে। ২৪১ মিমি গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স থাকায় এই এসইউভিটি সহজেই বিভিন্ন ধরনের রাস্তায় চলতে সক্ষম। আয়তনে বড় হওয়া সত্ত্বেও গাড়িটি অত্যন্ত দ্রুতগামী। এর সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ২১০ কিমি এবং মাত্র ৫.৮ সেকেন্ডে এটি ০ থেকে ১০০ কিমি প্রতি ঘণ্টা গতি তুলতে পারে।

 

প্রসঙ্গত গাড়িটির দৈর্ঘ্য ৪,৮২৫ মিমি, প্রস্থ ২,১৮৭ মিমি এবং উচ্চতা ১,৯৭৩ মিমি। এতে হাই-গ্লস ব্ল্যাক ফিনিশের ২০-ইঞ্চি এএমজি ৫ টুইন-স্পোক লাইট-অ্যালয় চাকা লাগানো রয়েছে। গাড়িটির কার্ব ওজন ২,৫৫৫ কেজি এবং এটি ৬৪৫ কেজি পর্যন্ত পেলোড বহন করতে পারে।

আরও পড়ুন: ট্রাম্পের মন্তব্যে কি প্রকাশ্যে চলে এল মোদির কূটনৈতিক ব্যর্থতা? ভারতের প্রধানমন্ত্রীর রিমোট মার্কিন প্রেসিডেন্টের হাতে?

 

তবে এই ঘটনা এই প্রথম নয়৷ এর আগেও তামিলনাড়ুর কাঞ্চিপুরমের ৮৮ বছর বয়সী এক কৃষক প্রায় ৩১.৯৮ লক্ষ টাকা মূল্যে একটি মার্সিডিজ-বেঞ্জ বি-ক্লাস কিনে সংবাদ শিরোনামে এসেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, মাত্র আট বছর বয়সে প্রথম এই ব্র্যান্ডের প্রতি তাঁর মুগ্ধতা তৈরি হয়। সেই সময় মার্সিডিজ গাড়ি সম্পর্কে কিছুই জানতেননা তিনি। প্রথম বার দেখেই নিজেকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে এক দিন তিনি নিজের জন্য মার্সিডিজ কিনবেন। বহু বছর পর, ২০১৮ সালে অবশেষে তিনি তাঁর শৈশবের স্বপ্ন পূরণ করেন।