আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভরসন্ধ্যায় ব্যস্ত রাস্তায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ। গতকাল সন্ধ্যায় কেঁপে উঠেছিল লালকেল্লা মেট্রো স্টেশন চত্বর। গতকাল পর্যন্ত আটজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছিল। মঙ্গলবার মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ল। দিল্লি বিস্ফোরণে এখনও পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত অবস্থায় এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২০ জন।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, গতকালের বিস্ফোরণের পর আজ লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনে পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। ঐতিহাসিক লালকেল্লা পর্যটক ও দর্শনার্থীদের জন্য আগামী তিনদিনের জন্য বন্ধ থাকবে। গতকালের পর আজ মঙ্গলবার সকালেও উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। গতকাল রাতেই তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এর আগে হাসপাতালে আহতদের সঙ্গেও দেখা করেছিলেন অমিত শাহ।
মঙ্গলবার সকালে নিজের বাসভবনে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করছেন অমিত শাহ। এই বৈঠকে উপস্থিত রয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব গোবিন্দ মোহন, ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর ডিরেক্টর, ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি বা এনআইএ-এর ডিরেক্টর জেনারেল, দিল্লি পুলিশ কমিশনার। পাশাপাশি ভার্চুয়ালি উপস্থিত আছেন জম্মু ও কাশ্মীরের ডিজিপি।
মঙ্গলবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের কথায়, 'গতকাল দিল্লি বিস্ফোরণে মৃতদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রয়েছে। আমি আমার সহ-নাগরিকদের আশ্বস্ত করতে চাই যে দেশের শীর্ষস্থানীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি এই ঘটনার দ্রুত এবং পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত পরিচালনা করছে। তদন্তের ফলাফল শীঘ্রই জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে। আমি জাতিকে দৃঢ়ভাবে আশ্বস্ত করতে চাই যে এই ট্র্যাজেডির জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা হবে এবং কোনও অবস্থাতেই তাদের রেহাই দেওয়া হবে না।'
মঙ্গলবার সকালে ভুটানের থিম্পু থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দিল্লি বিস্ফোরণ নিয়ে মুখ খোলেন। সাফ জানিয়ে দেন, সোমবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে বিস্ফোরণের খবর মিলেছে। কেন্দ্রীয় সরকার মৃত এবং আহতদের পরিবারের পাশে আছে। তিনিও নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমি এখানে আসব বলে কথা দিয়েছিলাম। কিন্তু মন আমার অন্য দিকে পড়ে আছে। সোমবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে ভয়াবহ ঘটনায় গোটা দেশবাসীর মন খারাপ। আমি মৃতদের পরিবারের অবস্থা বুঝতে পারছি।'
প্রধানমন্ত্রীর কথায়, 'রাতভর আমি এই ঘটনায় সঙ্গে যুক্ত সমস্ত এজেন্সি, প্রত্যেক আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলেছি। আমি কথা দিচ্ছি আমাদের এজেন্সি এর পূর্ণ তদন্ত করবে। এর পিছনে যাদের ষড়যন্ত্র আছে তাদের কাউকে ছাড়া হবে না।'
তিনি আরও জানান, 'যারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের প্রত্যেকের যথাযথ বিচার হবে।' উল্লেখ্য, দিল্লিতে বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন অমিত শাহ। হাসপাতালেও আহতদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি।
এই ঘটনায় গোটা দিল্লিতে উচ্চ সতর্কতা জারি হয়েছে। তদন্তে নেমেছে এনআইএ ও দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল। নিরাপত্তা বাহিনীর প্রাথমিক অনুমান, হামলার উদ্দেশ্য ছিল আতঙ্ক সৃষ্টি করা এবং গ্রেপ্তারের পর জঙ্গি যোগাযোগের প্রমাণ নষ্ট করা।
দিল্লির লালকেল্লার সামনে গাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনায় এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। তদন্তভার হাতে পাওয়ার পরেই জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) দল ঘটনাস্থলে পৌঁছোয়। শুধু তা–ই নয়, এনএসজি এবং ফরেন্সিক দলও রয়েছে ঘটনাস্থলে।
প্রসঙ্গত, বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে সন্ধে ৬টা ৫২ মিনিটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, আচমকা বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা। এটা ঘটনা, বিস্ফোরণের পরই দিল্লি জুড়ে কড়া সতর্কতা (হাই অ্যালার্ট) জারি করা হয়। শুধু দিল্লিতে নয়, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, কলকাতাতেো কড়া সতকর্তা জারি করা হয়েছে। দিল্লি পুলিশের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন শাহ। গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন তিনি।
সূত্রের খবর, ঘটনার পর পরই মোদির সঙ্গে কথা বলেন শাহ। তাঁকে পুরো পরিস্থিতি জানিয়েছেন বলে খবর। ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নয়াদিল্লিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় আমি গভীরভাবে মর্মাহত। যাঁরা প্রিয়জনদের হারিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের প্রতি রইল আমার আন্তরিক সমবেদনা।’
