আজকাল ওয়েবডেস্ক: দিল্লির এক প্রতিষ্ঠানের প্রধান সালমান সেলিম নামক এক ব্যক্তি সম্প্রতি ব্লিঙ্কিট-এর একজন ডেলিভারি পার্টনার হিসেবে নাম লেখান, শুধুমাত্র এই পেশায় যুক্ত মানুষদের প্রতিদিনের বাস্তবতা নিজে অভিজ্ঞতা করার জন্য। তার অভিজ্ঞতা জানিয়ে তিনি যে পোস্টটি লিঙ্কডইনে শেয়ার করেছেন, তা এখন ভাইরাল।
সেলিম লেখেন, “অস্পৃশ্যতা শুধু জাতির ভিত্তিতে নয়, শ্রেণির ভিত্তিতেও আজ বিদ্যমান। ডেলিভারি নিতে গিয়ে ট্রাফিক, তীব্র রোদ আর ধুলোয় পথ চলতে গিয়ে বুঝলাম—এই পেশাটি এখনও প্রাপ্য সম্মান থেকে বঞ্চিত।”
সবচেয়ে ব্যথা পেয়েছেন তিনি তথাকথিত 'উন্নত' সমাজের আচরণ দেখে—যারা অনলাইনে বড় বড় কথা বলেন, বাস্তব জীবনে তার উল্টো।
“অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে, অনেক বাড়িতেই আমাকে লিফট ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি। কখনও ৪ তলা পর্যন্ত সিঁড়ি দিয়ে উঠতে হয়েছে, কখনও বলা হয়েছে ‘সার্ভিস লিফট’ ব্যবহার করতে। এই আচরণ মূলত সেইসব আবাসিক এলাকায়, যেখানে তথাকথিত শিক্ষিত ও উচ্চবিত্ত মানুষ থাকেন,” বলেন সেলিম।
তিনি আরও লেখেন, “সম্মান কি পোশাক দেখে নির্ধারিত হবে? একজন ডেলিভারি কর্মীরও সম্মানের অধিকার আছে। সমাজ হিসেবে আমাদের বুঝতে হবে—পেশা বা পোশাক নয়, মানুষের মানবিকতা বড়।”
সেলিম অনুরোধ করেছেন ব্লিঙ্কিট, জেপ্টো-র মতো সংস্থাগুলিকে, যাতে তারা সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য জনসচেতনতামূলক প্রচার চালায়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় বহু ব্যবহারকারী এই বক্তব্যের প্রতি সহমত প্রকাশ করেছেন এবং নিজেদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন। কেউ লিখেছেন, “ডেলিভারি ছেলেদের জন্য লিফট ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা—এটা আমাদের সমাজের দ্বিচারিতার প্রতিফলন।”
আরেকজন লেখেন, “একদিন দেখি, এক মহিলা লিফটে থাকা জেপ্টো ডেলিভারিকে বললেন, ‘আপনি তো ডেলিভারি করেন? তাহলে এই লিফট কেন?’ উত্তরে সে বলল, অন্যটা খারাপ আর গার্ড তাকে এখানেই উঠতে বলেছেন। অথচ মহিলার মুখের ভঙ্গি তখন ছিল অবজ্ঞাসূচক।”
অনেকেই লিখেছেন, “এই তো আধুনিক অস্পৃশ্যতা। জাতিভেদ হয়তো আইনত নিষিদ্ধ, কিন্তু শ্রেণিবৈষম্যের রূপে তা এখনও টিকে আছে।”
