আজকাল ওয়েবডেস্ক: বাড়ির কন্যা সন্তানদের কেমন করে শাসন করতে হবে হিন্দু পরিবারগুলি তা নিয়েই নিদান দিলেন ভোপালের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর। তাঁর সাফ কথা, কোনও হিন্দু ঘরের মেয়েদের কোনও অহিন্দুর বাড়ি যাওয়া চলবে না। কথা না শুলেই মারুন, মেরে ঠ্যাং ভেঙে দিতে হবে। স্বাভাবিকভাবেই প্রজ্ঞার এ হেন নিদানকে কেন্দ্র করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। প্রাক্তন বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে 'বিদ্বেষ' ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস।
অক্টোবর মাসের শুরুর দিকে ভোপালে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় প্রজ্ঞা ঠাকুর বলেন, "তোমার মনকে এতটাই শক্তিশালী করো যে, যদি আমাদের মেয়ে আমাদের কথা না মানে, যদি সে কোনও অহিন্দুদের বাড়িতে যায়, তাহলে তার পা ভেঙে ফেলার কথা ভাবতে দ্বিধা কোরো না। যারা মূল্যবোধ মানে না এবং তাদের বাবা-মায়ের কথা শোনে না তাদের শাস্তি পেতে হবে। যদি তোমাদের সন্তানদের মঙ্গলের জন্য মারধর করতে হয়, তাহলে পিছপা হলে চলবে না। যখন বাবা-মা এই ধরনের কাজ করে, তখন তা তাদের সন্তানদের ভাল ভবিষ্যতের কথা ভেবেই করে।"
ইতিমধ্যেই এই বক্তব্য শোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
আরও পড়ুন- দীপাবলিতে প্রদীপ জ্বালিয়ে খরচ না করার পরামর্শ অখিলেশের, ফোঁস করে উঠল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বিজেপি
প্রজ্ঞা ঠাকুর আরও বলেন, "এই ধরনের মেয়েরা যারা মূল্যবোধ মানে না, বাবা-মায়ের কথা শোনে না, বড়দের সম্মান করে না এবং বাড়ি থেকে পালিয়ে যেতে প্রস্তুত... তাদের প্রতি আরও সতর্ক থাকো। তাদের বাড়ি ছেড়ে যেতে দিও না, মারধর করে, বুঝিয়ে, শান্ত করে, ভালবাসা দিয়ে বা তিরস্কার করে তাদের থামাতে হবে।"
প্রজ্ঞা ঠাকুরের সমালোচনা করে কংগ্রেস মুখপাত্র ভূপেন্দ্র গুপ্ত বলেন: "মধ্যপ্রদেশে মাত্র সাতটি মামলায় (ধর্মান্তকরণের মামলা) খালাস পেয়েও কেন এত গোলমাল এবং ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে?"
উল্লেখ্য, সম্প্রতি প্রজ্ঞা ঠাকুর বলেছেন যে- অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের শৃঙ্খলা এবং "সাংস্কৃতিক লালন-পালন" নিশ্চিত করতে হবে।
আরও পড়ুন- মুসলিমরা 'নমক হারাম', বিহারে নির্বাচনের আগে চাঁচাছোলা মন্তব্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর! তুঙ্গে বিতর্ক
বরাবারই তাঁর মন্তব্যের বিতর্কে জড়িয়েছেন প্রজ্ঞা সিং ঠাকুর। ২০০৮ মহারাষ্ট্রের মালেগাঁওয়ে এক বিস্ফোরণে জড়িয়ে গিয়েছিল তাঁর নাম। ওই ঘটনায় ১০ জনের মৃত্যু হয় ৮০ জন আহত হন। অভিযোগ, বিস্ফোরণস্থলে পাওয়া গিয়েছিল প্রজ্ঞার বাইক। ওই ঘটনায় প্রজ্ঞার জেল হয়। ২০১৭ সালের তিনি জামিনে মুক্ত হন। শেষপর্যন্ত বিজেপির হয় নির্বাচনেও লড়াই করেন ও জেতেন। চলতি বছরের ৩১ জুলাই মালেগাঁও বিস্ফোরণ মামলায় প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুর ওরফে সাধ্বী প্রজ্ঞা-সহ সাত অভিযুক্তকেই বেকসুর খালাস করে দেয় মুম্বইয়ের বিশেষ এনআইএ আদালত।
