আজকাল ওয়েবডেস্ক: মুম্বই হামলা-সহ হাই-প্রোফাইল একাধিক মামলায় সাড়া ফেলে দেওয়া আইনজীবী উজ্জ্বল নিকম এবং প্রাক্তন বিদেশ সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা-সহ চারজনকে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু রাজ্যসভায় মনোনীত করেছেন। আইনজীবী নিকম এবং প্রাক্তন আমলা শ্রিংলা ছাড়াও, রাষ্ট্রপতির মনোনয়ন তালিকায় রয়েছেন, সমাজকর্মী সি সদানন্দন মাস্টার এবং ইতিহাসবিদ মীনাক্ষী জৈন। 

রাষ্ট্রপতি রাজ্যসভায় সর্বাধিক ১২ জন সদস্যকে মনোনীত করতে পারেন। এই মনোনয়ন সাহিত্য, বিজ্ঞান, শিল্প এবং সমাজসেবা ক্ষেত্রের বিশিষ্ট্যদের করা হয়ে থাকে। ভারতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় বর্তমানে চারটি আসন খালি হচ্ছে। একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই চার আসনের জন্য প্রধান আইনজীবী উজ্জ্বল নিকম, প্রাক্তন বিদেশ সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা, মাজকর্মী সি সদানন্দন মাস্টার এবং ইতিহাসবিদ মীনাক্ষী জৈনকে মনোনিত করেছেন রাষ্ট্রপতি মুর্মু। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে, পূর্বে মনোনীত সদস্যদের অবসর গ্রহণের পরে নতুন মনোনয়নগুলি কার্যকর হবে। 

উজ্জ্বল নিকম
বাহাত্তর বছর বয়সী উজ্জ্বল নিকম ১৯৯৩ সালের মুম্বই বিস্ফোরণ এবং ২৬/১১ হামলার মতো গুরুত্বপূর্ণ সন্ত্রাসবাদী হামলা মামলায় বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি বিশিষ্ট্য সঙ্গীতশিল্পী গুলশান কুমার এবং বিজেপির প্রবীণ নেতা তথা বাজপেয়ী মন্ত্রিসভার মন্ত্রী প্রমোদ মহাজনের হত্যা মামলায়ও কাজ করেছেন। গত বছর লোকসভা নির্বাচনে, বিজেপি মুম্বই উত্তর মধ্য আসন থেকে সঞ্জয় নিকমকে প্রার্থী করেছিল। কিন্তু তিনি কংগ্রেসের বর্ষা গায়কোয়াড়ের কাছে পরাজিত হন। আইনজীবী নিকম ২০১৬ সালে 'পদ্মশ্রী' সম্মানে ভূষিত হন।

হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা
আইএফএস হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ভারতের বিদেশ সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ২০২৩ সালে ভারতে আয়োজিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের প্রধান সমন্বয়কারীও ছিলেন। এর আগে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রাষ্ট্রদূত হয়ে কাজ করেন। বাংলাদেশে হাই কমিশনার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

সি সদানন্দন মাস্টার
কেরলের একজন শিক্ষাবিদ এবং সমাজসেবী সি সদানন্দন মাস্টার। তাঁর পা তিন দশক আগে সিপিএম কর্মীদের নৃশংস আক্রমণে বাদ পড়েছিল। তিনি ২০১৬ সালের কেরলের নির্বাচনে কুথুপারাম্বা থেকে বিজেপির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, কিন্তু পরাজিত হন। ভোটের ফলে সদানন্দন মাস্টার তৃতীয় স্থানে ছিলেন।

মীনাক্ষী জৈন 
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এবং ইতিহাসবিদ মীনাক্ষী জৈন, শিক্ষাক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ২০২০ সালে 'পদ্মশ্রী' সম্মানে ভূষিত হন। তিনি এর আগে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ হিস্টোরিক্যাল রিসার্চের সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

আরও পড়ুন- বিহারে বেনিয়মের বিরাট পর্দা ফাঁস! গিজগিজ করছে নেপাল-বাংলাদেশ-মায়ানমারের ভোটার...

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাজ্যসভার মনোনীত এই চারজন কৃতীকেই অভিনন্দন জানিয়েছেন। এক্স-বার্তায় তিনি লিখেছেন, 'আইন ও সংবিধানের প্রতি উজ্জ্বল নিকমের নিষ্ঠা অনুকরণীয়।' সি সদানন্দন মাস্টারের প্রশংসা করে তিনি লেখেন, 'তাঁর জীবন সাহস এবং অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করার প্রত্যাখ্যানের প্রতীক'। তাঁর মঙ্গল কামনাও করেছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রাক্তন বিদেশ সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা সম্পর্কে মোদি লিখেছেন, 'একজন কূটনীতিক, বুদ্ধিজীবী এবং কৌশলগত চিন্তাবিদ হিসেবে শ্রিংলা অসাধারণ ছিলেন এবং ভারতের বিদেশনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।' এ-পোস্টে প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, 'ডঃ মীনাক্ষী জৈন একজন গবেষক এবং ইতিহাসবিদ হিসেবে নিজেকে পৃথক করেছেন এবং তাঁর কাজ একাডেমিক আলোচনাকে সমৃদ্ধ করেছে।'