কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ২৪ সেপ্টেম্বর রেলকর্মীদের জন্য বড়সড় সুখবর ঘোষণা করল। মন্ত্রিসভার বৈঠকে ১,৮৬৬ কোটি টাকার উৎপাদন-সংযুক্ত বোনাস মঞ্জুর করা হয়েছে, যা সরাসরি উপকৃত করবে ১০.৯ লক্ষেরও বেশি রেলকর্মীকে।
2
10
সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, চলতি বছরে প্রতিটি যোগ্য কর্মীকে সর্বাধিক ১৭,৯৫১ টাকা পর্যন্ত বোনাস দেওয়া হবে। এই অর্থ উৎসব মরশুমের আগেই হাতে পৌঁছে যাবে, ফলে লক্ষ লক্ষ পরিবারের কাছে এটি যেমন আর্থিক স্বস্তি এনে দেবে, তেমনই মনোবলও বাড়াবে।
3
10
রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, এই সিদ্ধান্ত রেলকর্মীদের “অসাধারণ পারফরম্যান্সকে স্বীকৃতি” জানায়। তিনি আরও জানান, এবারও বোনাস হিসাবে কর্মীরা ৭৮ দিনের সমপরিমাণ মজুরি পাবেন।
4
10
কেন্দ্রের এই পদক্ষেপ একদিকে যেমন দুর্গাপুজো ও দীপাবলির আগে কর্মীদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। অন্যদিকে নির্বাচনের আগে বিশেষত বিহার-সহ বিভিন্ন রাজ্যে রাজনৈতিকভাবেও তা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
5
10
উৎপাদন-সংযুক্ত এই বোনাস মূলত রেলের বিভিন্ন স্তরে কর্মরত অরাজপদস্থ কর্মীদের জন্য। এর মধ্যে রয়েছেন ট্র্যাক মেইন্টেনার, লোকো পাইলট, ট্রেন ম্যানেজার, স্টেশন মাস্টার, সুপারভাইজর, টেকনিশিয়ান, হেলপার, পয়েন্টসম্যান, মন্ত্রিসভার স্টাফ এবং গ্রুপ ‘সি’-র অন্যান্য কর্মীরা। এককথায়, যাঁরা প্রতিদিন রেলের চলাচল নির্বিঘ্ন রাখার জন্য নিরলস পরিশ্রম করেন, তাঁদের সকলকেই এই বোনাসের আওতায় আনা হয়েছে।
6
10
প্রসঙ্গত, রেলকর্মীদের উৎপাদন-সংযুক্ত বোনাস দেওয়ার এই প্রথা নতুন নয়। বহু বছর ধরেই দুর্গাপুজো ও দশহারার আগে রেলওয়ে কর্মীদের হাতে বোনাস পৌঁছে যায়।
7
10
উদ্দেশ্য একটাই—তাঁদের কর্মদক্ষতাকে স্বীকৃতি জানানো ও আগামী দিনে আরও ভাল পারফরম্যান্সে উৎসাহিত করা। গত বছরও প্রায় ১১ লক্ষ কর্মী এই বোনাস পেয়েছিলেন, যা তাঁদের মনোবল বাড়িয়েছিল এবং সারা দেশে উৎসবের বাজারে কেনাকাটার গতি বাড়িয়েছিল।
8
10
অর্থনীতিবিদদের মতে, চলতি বছরও একই প্রভাব পড়বে। কারণ সাম্প্রতিক জিএসটি কমানোর ফলে বাজারে ক্রেতাদের আগ্রহ কিছুটা বেড়েছে। তার উপর রেলকর্মীদের বোনাস যোগ হলে উৎসবকেন্দ্রিক বাজার আরও চাঙ্গা হবে বলেই আশা খুচরো ব্যবসায়ীদের।
9
10
এই ঘোষণার সময়কালও নজর কেড়েছে। সামনে দুর্গাপুজো ও দীপাবলি তো আছেই, তার পাশাপাশি এ বছর শেষের দিকে বিহারে বিধানসভা নির্বাচন। সে ক্ষেত্রে রেলকর্মী ও তাঁদের পরিবারকে সরাসরি খুশি করা নিঃসন্দেহে রাজনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে। বিশেষ করে বিহারে রেলকর্মীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি হওয়ায় এই সিদ্ধান্তের প্রভাব ভোটব্যাঙ্কের উপরও পড়তে পারে।
10
10
সব মিলিয়ে বলা যায়, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্ত শুধু উৎসবের মরশুমে কর্মীদের হাতে বাড়তি টাকা পৌঁছে দিচ্ছে না, বরং তাঁদের পরিশ্রম ও অবদানের প্রতি সরকারের কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করছে। একই সঙ্গে এটি দেশের অর্থনীতি ও বাজারে একটি ইতিবাচক বার্তা পাঠাচ্ছে। উৎসবের আমেজে যখন সারা দেশ রঙে-আলোয় ভাসবে, তখন রেলকর্মীদের বাড়িতেও এই বোনাস এক আনন্দের স্রোত বইয়ে দেবে।