এক সময় বলিউডের প্রথম সারির নায়িকাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন জুহি চাওলা। জুহি মানেই হাসিখুশি মুখ, প্রাণখোলা অভিনয় আর সুন্দরীর পাশাপাশি মিষ্টি একটা ব্যাপার। ফিল্মি কেরিয়ারের শুরুতেই আমির খান, শাহরুখ খানের সঙ্গে পর্দায় তাঁর রসায়ন দর্শকের মন জয় করে নিয়েছিল। তবে সেই তালিকায় সানি দেওলও ছিলেন গুরুত্বপূর্ণ এক নাম। ‘ডর’ ছবিতে টানটান থ্রিলের মধ্যেও জুহি-সানির অন-স্ক্রিন রসায়ন নজর কেড়েছিল। তারপর তাঁরা ফের জুটি বাঁধেন ‘লুটেরে’ ছবিতে।
সম্প্রতি , ছবি নির্মাতা সুনীল দর্শন স্মৃতিচারণায় ফিরে দেখলেন জুহি চাওলার সেই সময়টা। তাঁর কথায়, ‘সুলতানাত’ ও ‘কয়ামত সে কয়ামত তক’-এর মতো ছবির পর থেকেই জুহি হয়ে উঠেছিলেন বলিপাড়ার ছবি নির্মাতাদের কাছে এক নির্ভরযোগ্য তারকা। সেই বিশ্বাস থেকেই তাঁকে ‘লুটেরে’-র মতো গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে কাস্ট করার সিদ্ধান্ত।
তবে সুনীল দর্শন স্বীকার করেছেন, জুহিকে ‘সেক্স সিম্বল’ হিসেবে পর্দায় তুলে ধরা মোটেই সহজ ছিল না। বাস্তবে তিনি ছিলেন একেবারেই ঘরোয়া, সহজ-সরল। তবু চরিত্রের প্রয়োজনে সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে রাজি হয়েছিলেন জুহি। এমনকী সানি দেওলের সঙ্গে একটি ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে চুম্বন দৃশ্যে অভিনয়েও সম্মতি দেন। তাঁর সঙ্গে চুক্তিতেই সেই দৃশ্যের উল্লেখ ছিল।
কিন্তু ঘটনার মজার মোড় আসে শুটিংয়ের সময়। দর্শনের কথায়, ওই বিশেষ দৃশ্যটি ছবির একেবারে শেষে শুট করা হবে বলে ঠিক হয়েছিল। বাইরে আলাদা সেট তৈরি করা হয়। কিন্তু শুটিংয়ের দিন দেখা গেল, জুহি সেটে অনুপস্থিত। পরে জানা যায়, উদয়পুরে অন্য একটি ছবির শুটিংকে অজুহাত করেই তিনি সেদিন আসেননি।
পরিচালকের জোরাজুরিতে শেষমেশ দৃশ্যটির শুট হয়। একাধিক ক্যামেরায় একসঙ্গে শুট করা হয়, যাতে একবারেই কাজ শেষ করা যায়। শট শেষ হতেই জুহি গায়ে রোব চাপিয়ে সেট ছাড়েন। নির্মাতারা চাইছিলেন আরও একটি টেক। কিন্তু সুনীল দর্শনের কাছে জুহির উত্তর ছিল একেবারে সোজাসাপটা- “মিস্টার দর্শন, চুক্তি অনুযায়ী আমি একটাই চুম্বন দৃশ্য করার কথা ছিল। আর সেটা আমি করে ফেলেছি!” আজ তা শুনতে শিশুসুলভ মনে হলেও, সুনীল দর্শনের মতে বিষয়টি ছিল ভীষণ মিষ্টি। তাই ওই প্রথম টেকটাই চূড়ান্ত ছবিতে রাখা হয়।
পরিচালকের কথায়, ‘লুটেরে’ জুহি চাওলার কেরিয়ারের এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। সে সময় পুরো গল্পকে ঘিরে একটি নায়িকাকেন্দ্রিক ছবি তৈরি করা ছিল বড় ঝুঁকি। সেখানে ছবিতে সানি দেওলের মতো একজন প্রথম সারির নায়ক থাকলেও, আসল কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন জুহিই। আর সেই চ্যালেঞ্জ তিনি অনায়াসেই উতরে গিয়েছিলেন।
