ইতিহাসের পাতাতেই সীমাবদ্ধ সিধু-কানহুর গল্প। তাঁদের লড়াই, আত্মত্যাগ সবকিছুই যেন থেকেও নেই। মনে নেই মানুষের। 'হুল' বিদ্রোহ পালন হয় ঠিকই। কিন্তু সিধু-কানহুর আসল গল্প ক'জনের জানা? দুই বীরকে এবার বড়পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে প্রস্তুত কিঞ্জল নন্দ ও দেবাশিস মণ্ডল।
১৮৫৫ সালের ৩০ জুন সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর নেতৃত্বে এক বৃহৎ বিদ্রোহের সূচনা হয়, যা ইতিহাসে 'সাঁওতাল হুল' বা 'সাঁওতাল বিদ্রোহ' নামে পরিচিত। 'হুল' শব্দের অর্থ হল, 'বিদ্রোহ' বা 'মুক্তিযুদ্ধ'। ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে আদিবাসীদের প্রথম সঙ্ঘবদ্ধ আন্দোলন ছিল 'সাঁওতাল বিদ্রোহ' বা 'সাঁওতাল হুল'। যার নায়ক সিধু ও কানহু মুর্মু। ছবিতে এই মূল দুই চরিত্রেই দেখা যাবে কিঞ্জল নন্দ এবং দেবাশিস মণ্ডলকে। এছাড়াও আছেন চন্দন সেন, বিশ্বরূপ বিশ্বাস, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, উমা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শ্রীতমা দে। ছবিতে গানের একটি বিশেষ দৃশ্যে দেখা যাবে অভিনেত্রী দীপান্বিতা রক্ষিতকে।
সেই ইতিহাস নিয়েই তৈরি হচ্ছে বাংলা ছবি 'হুল' ৷ ইতিমধ্যে ঝাড়খণ্ড ও ঝাড়গ্রামে হয়েছে এই ছবির বড় অংশের শুটিং। বাকি অংশের শুট হয়েছে কলকাতায়। এই দুই বিপ্লবীকে নিয়ে হাজির হচ্ছেন প্রযোজক অনুপল সাউ এবং পরিচালক আবির রায়। ১৫ আগস্ট, স্বাধীনতা দিবসের দিন 'সিধু ও কানু' রূপে ধরা দিলেন কিঞ্জল ও দেবাশিস। প্রকাশ্যে এল ছবিতে দুই মুখ্য চরিত্রের প্রথম ঝলক। আগুনের শিখার মাঝে যেন জ্বলছে তাঁদের দুই জোড়া চোখ।

এর আগে হুল দিবসের দিন ছবির প্রথম পোস্টার ভাগ করে কিঞ্জল লিখেছিলেন, 'পাহাড়ে জঙ্গলে ঘেরা ছোট্ট একটা গ্রাম ভোগনাডিহি। সেখানকার দুই অসীম সাহসী সাঁওতাল ভাই নিজেদের বাকি চার ভাই বোনকে সাথে করে গোটা আদিবাসী সমাজকে একত্র করে যুগ যুগ ধরে হয়ে আসা অন্যায় অত্যাচার আর সামাজিক শোষণের বিরুদ্ধে যে মহা বিদ্রোহের ডাক দেয়, তা যেন বীজ বপন করে আগামী দিনের দেশ স্বাধীন করার সমস্ত মহা সংগ্রামের! হাজার হাজার আদিবাসী বিদ্রোহী মাটির লড়াইয়ে শহীদ হন! প্রথমবার বড় পর্দায় আসতে চলেছে সেই মহা গাথা!
সিধু, কানু, চাঁদ, ভৈরব, ফুলো, ঝানোর রক্ত-রঞ্জিত এই হূল সংগ্রামের ইতিহাস জানা উচিত আপামর দেশবাসীর।'
আরও পড়ুন: শ্রুতি-আরাত্রিকার নায়ক হবেন অভিষেক বীর শর্মা! দুই বোনের গল্পে তৈরি হবে কোন নতুন সমীকরণ?
ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে ছবির শুটিং। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৬-এর জানুয়ারিতে বড়পর্দায় মুক্তি পাবে এই ছবিটি।
প্রসঙ্গত, এর আগেও বিপ্লবী চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে কিঞ্জলকে। '৮/১২ বিনয় বাদল দীনেশ' ছবিতে বিনয় বসুর চরিত্রে নজর কেড়েছিলেন তিনি। স্বাধীনতা দিবসে সমাজচিত্র প্রসঙ্গে প্রতিবাদী কিঞ্জল আজকাল ডট ইন-কে বলেন, "আমরা চাকরি পাওয়ার জন্য পড়াশোনা করি। কিন্তু আমরা পড়াশোনার সময় ভারতবর্ষে যে ইতিহাস পড়েছি, তাতে যে সততার কথা, চারিত্রিক গঠন, মানসিক দৃঢ়তার কথা বলা আছে, তা-ই যদি অর্জন না করতে পারি তাহলে সবটাই বৃথা। আমাদের মানুষ হয়ে ওঠার শিক্ষা অর্জন করতে হবে।”
