আজকাল ওয়েবডেস্ক: টোল প্লাজায় যদি ফাসট্যাগ না থাকে, তাহলে দ্বিগুণ টোল দিতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে, অনেকেই এক ব্যাঙ্ক থেকে ফাসট্যাগ সরিয়ে অন্য ব্যাঙ্ক থেকে নতুন ফাসট্যাগ নিতে চান। আসুন জেনে নেওয়া যাক, কীভাবে এই প্রক্রিয়াটি করবেন, এতে কত সময় লাগবে এবং কী কী বিষয় মনে রাখতে হবে।
ফাসট্যাগ কী?
২০২১ সাল থেকে ভারতে চার চাকার গাড়ির জন্য ফাসট্যাগ বাধ্যতামূলক হয়ে গিয়েছে। এটি RFID প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে একটি সিস্টেম যা হাইওয়ে টোল প্লাজায় অবিরাম অর্থ প্রদানের অনুমতি দেয়। এটি আপনার গাড়ির নথিভুক্ত নম্বরের সঙ্গে সংযুক্ত এবং একটি ব্যাঙ্ক-ইস্যু করা ওয়ালেটের সঙ্গে যুক্ত।
ফাসট্যাগ ব্যাঙ্ক কীভাবে পরিবর্তন করবেন?
Airtel Payments Bank এর সিওও গণেশ আনন্দনারায়ণন বলেন, "NPCI এর One Vehicle One FASTag নীতির অধীনে, যদি আপনার কাছে ইতিমধ্যেই শুধুমাত্র একটি সক্রিয় ফ্যসট্যাগ থাকে, তাহলে আপনি সরাসরি অন্য যেকোনও ব্যাঙ্ক থেকে একটি নতুন ফাসট্যাগ পেতে পারেন।"
ফাসট্যাগ ব্যাঙ্ক বদলের নিয়ম (অনলাইন)
১. যে ব্যাঙ্ক থেকে আপনি একটি নতুন ফাসট্যাগ পেতে চান তার ওয়েবসাইট বা অ্যাপে যান।
২. সেখানে ফাসট্যাগ বিভাগে যান এবং ফাসট্যাগ এর জন্য আবেদন করুন অথবা ফাসট্যাগ কিনুন-এ ক্লিক করুন।
৩. আপনার গাড়ির নম্বর, মোবাইল নম্বর, ইমেল এবং অন্যান্য বিবরণ লিখুন।
৪. ঠিকানা নিশ্চিত করুন এবং অর্থ প্রদান করুন।
৫. নতুন ফাসট্যাগ তিন-চার দিনের মধ্যে আপনার বাড়িতে পৌঁছে যাবে।
৬. আরসি, গাড়ির ছবি, পাশের ছবি এবং ফাসট্যাগ ছবি আপলোড করুন।
৭. ডকুমেন্ট যাচাইয়ের চার ঘন্টার মধ্যে ফাসট্যাগ সক্রিয় হবে।
ফাসট্যাগ ব্যাঙ্ক বদলের নিয়ম (অফলাইন)-
১. একটি ব্যাঙ্ক শাখা বা ফ্যসট্যাগ এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
২. এজেন্ট আপনার নথি আপলোড করবে এবং আপনাকে একটি যাচাইকরণ লিঙ্ক পাঠাবে।
৩. লিঙ্কটি খুলুন, ওটিপি এর মাধ্যমে লগইন করুন, বিস্তারিত পরীক্ষা করুন এবং অর্থ প্রদান করুন।
৪. ফাসট্যাগ সেখানেই সক্রিয় হয়ে যায়।
মনে রাখবেন যে অনলাইন ফাসট্যাগ তিন-চার দিনের মধ্যে পৌঁছায় এবং যাচাইয়ের চার ঘন্টার মধ্যে সক্রিয় হয়ে যায়। অন্যদিকে অফলাইন ফ্যসট্যাগ রিয়েল টাইমে সক্রিয় হয়ে যায়।
ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়া এর নতুন নিয়ম অনুযায়ী, যে সমস্ত ফাসট্যাগ গাড়ির উইন্ডশিল্ডে লাগানো থাকবে না, সেগুলিকে সঙ্গে সঙ্গে ব্ল্যাকলিস্ট করে দেওয়া হবে। এই ধরনের ফাসট্যাগ-কে ‘লুজ ফাস্ট্যাগ’ বলা হচ্ছে। ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়া-এর মতে, এই ধরনের ফাসট্যাগ ব্যবহার করার ফলে টোল প্লাজায় যানজট, ভুল চার্জব্যাক এবং ইলেকট্রনিক টোল সংগ্রহ ব্যবস্থায় নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
কেন এই পদক্ষেপ?
ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়া-এর এই কঠোর পদক্ষেপ করারর নেপথ্যে বেশ কিছু কারণ রয়েছে:
-যানজট কমানো: হাতে ফাসট্যাগ নিয়ে টোল পার হওয়ার সময় স্ক্যানিং-এ সমস্যা হয়, যার ফলে টোল প্লাজায় যানজট সৃষ্টি হয়।
- ভুল চার্জব্যাক রোধ: অনেক সময় এই ধরনের ফাসট্যাগ ব্যবহার করার ফলে ভুল করে অন্য গাড়ির অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়, যা পরে চার্জব্যাক করতে হয়।
- ব্যবস্থার উন্নতি: ভবিষ্যতে NHAI অ্যানুয়াল পাস সিস্টেম এবং মাল্টি-লেন ফ্রি ফ্লো টোলিং ব্যবস্থা চালু করার পরিকল্পনা করছে। এই ব্যবস্থাগুলির জন্য ফাসট্যাগ সিস্টেমের নির্ভরযোগ্যতা অত্যন্ত জরুরি। তাই ‘লুজ ফাস্ট্যাগ’-এর মতো সমস্যাগুলি এখনই সমাধান করা প্রয়োজন।
কীভাবে অভিযোগ জানানো যাবে?
ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়া টোল সংগ্রহকারী সংস্থাগুলিকে ‘লুজ ফাস্ট্যাগ’ ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর নির্দেশ দিয়েছে। এর জন্য একটি বিশেষ ইমেল আইডিও তৈরি করা হয়েছে। যদি কোনও টোল প্লাজায় কোনও গাড়ির চালক হাতে ফাসট্যাগ নিয়ে টোল পার হওয়ার চেষ্টা করেন, তাহলে টোল কর্মীরা সরাসরি ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়া-কে অভিযোগ জানাতে পারবেন।
