মিল্টন সেন, হুগলি: নর্দমার পাশে জঞ্জাল, বর্জ্য পদার্থ। তার মাঝেই ভাসছে মানুষের মাথার খুলি? ঘটনায় তাজ্জব সাফাই কর্মীরা। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার চুঁচুড়া পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের দাসপাড়ায় কঙ্কাল পড়ে থাকতে দেখেন সাফাই কর্মীরা। খবর চাউর হতেই ভিড় বাড়তে শুরু করে স্থানীয়দের। তৎক্ষণাৎ খবর দেওয়া হয় পুলিশে।
পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করেছে। কে বা কারা ওই জায়গায় কঙ্কাল ফেলে গিয়েছেন তা জানা যায়নি এখনও। ওই নির্দিষ্ট এলাকায় সিসিটিভি না থাকায় ফুটেজ দেখে খোঁজ শুরুর বিষয়টি সম্পন্ন করা যায়নি।
আরও পড়ুন: নিক্কো পার্কে যুবকের মৃত্যু কি জলে ডুবেই! না কি পিছনে অন্য কোন বড় কারণ, ময়নাতদন্তে সত্যি এল সামনে
স্থানীয়রা জানান,এলাকায় কেউ মারা গিয়েছেন এমন খবর নেই। ওয়ার্ডের বাইরে থেকে কেউ ফেলে গেল কিনা তা দেখছে পুলিশ। চিকিৎসা বজ্ঞানের পড়াশোনার জন্যও কঙ্কাল প্রয়োজন হয়। উদ্ধার হওয়া কঙ্কাল যেহেতু পুরোনো তাই এই কঙ্কাল সেই রকম কোনো কাজে ব্যবহার করার জন্য আনা হয়েছিল কিনা তা তার খোঁজ নিচ্ছে পুলিশ। কঙ্কালের ফরেনসিক পরীক্ষা হবে বলেও জানা গিয়েছে প্রাথমিকভাবে।
এর আগেও একাধিকবার কঙ্কাল উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে। গত বছরের জুন মাসে বাগুইআটি জর্দা বাগানে একটি পরিত্যক্ত বাড়ির জঞ্জাল থেকে সন্দেহভাজন ব্যাগ উদ্ধার হয়। ব্যাগে মাথার খুলি, হাড় দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। ঘটনাস্থলে আসে বাগুইআটি থানার পুলিশ। ব্যাগের মধ্যে কঙ্কাল উদ্ধার ঘিরে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
গত বছর ডিসেম্বর মাসে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল চত্বরে উদ্ধার হয় মানুষের মাথার খুলি, হাড়গোড়।হাসপাতালের পরিত্যক্ত মর্গের বাইরে ঝোপে হাড়গোড়গুলি পড়ে থাকতে দেখা যায়।
অতি সম্প্রতি হায়দরাবাদের একটি পরিত্যক্ত বাড়ির ভিতর থেকে আচমকা স্থানীয় এক যুবক কঙ্কাল, দেহাবশেষ দেখেন। তিনি তৎক্ষণাৎ ঘরের ভিতরের ওই অংশের ভিডিও করেন এবং তা ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তের পর জানান, ওই বাড়িতে এক ব্যক্তি একাই থাকতেন। মনে করা হচ্ছে অন্তত ১০ বছর আগে তাঁর মৃত্যু হয় ঘরের ভিতরেই। সেখানেই দেহ পচে, হাড়গোড় বেরিয়ে পড়ে। সেগুলিও ক্ষয়ে যাওয়ার পথে।
জানা গিয়েছে ওই বাড়িটি ছিল মুনীর খান নামে এক ব্যক্তির। তাঁর দশ সন্তান ছিল। আমির মুনিরের চতুর্থ সন্তান। একটা সময় পড়ে ওই বাড়িতে আমির ছাড়া আর কেউ থাকতেন না। আমির অববাহিত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে, এবং তিনি প্রায় কারও সঙ্গে কথাবার্তা বলতেন না। একা একাই জীবন কাটাতেন বলে খবর।
ওই ঘর থেকে একটি পুরনো নোকিয়ার ফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে ওই ফোনটি বন্ধ হয়ে পড়েছিল। পুলিশ ফোনটি পুনরায় চালু করেছে। জানা গিয়েছে ২০১৫ সালে ওই ফোনে মোট ৮৪টি মিসড কল এসেছিল। এছাড়াও আমিরের ঘরে, বালিশের তলা থেকে কিছু টাকা উদ্ধার হয়েছে। যা নোট বাতিলের আগের টাকা। তা থেকে আরও ধারণা করা হচ্ছে, এই ঘটনা নোট বন্দির আগে ঘটেছে।
পুলিশের অনুমান, ওই ব্যক্তির ভাই-বোন, আত্মীয়রা কেউই দীর্ঘদিন তাঁর খোঁজ নেননি। সেই কারণেই তিনি বেঁচে আছেন, না মারা গিয়েছেন তা বুঝতে পারেননি কেউই।
