পরমা দাশগুপ্ত | | Editor: উপালি মুখোপাধ্যায় ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০০ : ৩১

তাঁদের প্রেমে ছোটপর্দা তোলপাড়। ভালবাসার মরসুমে এমনই জুটিদের ফিরে দেখলেন পরমা দাশগুপ্ত 

এলোমেলো হাওয়ায় ভালবাসাবাসি মাখা। তাকে দেখে মনের ভিতরটায় ভায়োলিনের সুর। মুখ ফুটে বলতে চাওয়া, যদি বল হ্যাঁ…। ঠিক যেমন পাহাড়ি পথের বাঁকে মেঘলাকে দেখে বুকের ভিতরটায় তোলপাড় হয়েছিল অনুরাগের। কিংবা পুরোটাই না বলা, বুঝতে না পারা এক প্রেমের উচাটন। বোঝে না সে বোঝে না! শহর জুড়ে এই ভালবাসার মরসুমে আসুন ফিরে দেখা যাক বাংলা সিরিয়ালের সেই সব নায়ক-নায়িকা জুটিকে, নানা সময়ে যাঁরা নিজগুণেই দর্শকের কাছে হয়ে উঠেছেন প্রেমের শেষ কথা। 



আকাশ-নন্দিনী 
নব্বইয়ের দশকে তখন কোথায় সোশ্যাল মিডিয়া! সে সময়েই ঝড় তুলেছিল আকাশ-নন্দিনী। তুমুল জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘এক আকাশের নীচে’-র নায়ক-নায়িকা। শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রথমে অদিতি চট্টোপাধ্যায়, পরে দেবলীনা দত্ত। কয়েক দশক পেরিয়েও যাঁরা এখনও দর্শকের স্মৃতিতে অমলিন। 

গোরা-পুপে
রক্ষণশীল বাড়ির টানটান বেণী বাঁধা পুপে-র জীবনে এক ঝলক খোলা হাওয়ার মতোই প্রেম এনেছিল গোরা। ‘গানের ওপারে’ তাদের সেই প্রেমের গল্প মন ছুঁয়েছিল সবারই। পর্দার মিমি চক্রবর্তী এবং অর্জুন চক্রবর্তীর প্রেমে বাস্তবে হাবুডুবু খাওয়া দর্শকের সংখ্যাটাও নেহাত কম ছিল না কিন্তু!

উজান-হিয়া
সেই যে একদিন কার্শিয়াঙে দেখা কন্যের গান ভরিয়ে দিয়েছিল উজানকে, সেই শুরু। গল্পের হাত ধরে ডক্টর উজান চ্যাটার্জির পেশেন্ট হয়ে আসা হিয়া জড়িয়ে গেল ভালবাসার বাঁধনে। এমনই সে প্রেম, ২০০৮ থেকে এই ২০২৪-এও ঋষি কৌশিক আর অপরাজিতা ঘোষকে এখনও ‘এখানে আকাশ নীল’-এর উজান-হিয়া বলেই ডাকতে ভালবাসে বাংলা সিরিয়ালের দর্শক। 

রাশি-উজ্জ্বল
এক লড়াকু মেয়ে রাশির বিয়ে এক শিল্পপতির ছেলে উজ্জ্বলের সঙ্গে। স্বভাবে একেবারে উল্টো। তবু একটু একটু করে তাদের জড়িয়ে ফেলল ভালবাসা। ‘রাশি’-তে নতুন মুখ হয়ে পর্দায় এসেই দর্শক মনে পাকাপাকি জায়গা করে নিতে বিশেষ সময় নেননি গীতশ্রী রায় এবং ইন্দ্রনীল ব্যানার্জি।
  
অরণ্য-পাখি
দু’জনেই কেমন অটুট এক টানে বাঁধা পড়ে একে অন্যের সঙ্গে। ‘বোঝে না সে বোঝে না’, বুঝলেও বলতে পারে কই! না বলা ভালবাসায় মোড়া সেই কাহিনি এখনও যে কত বুকে ঝড় তোলে। আর অরণ্য-পাখি হয়ে সেই যে দর্শকমনে বাসা বেঁধেছেন যশ দাশগুপ্ত এবং মধুমিতা সরকার, বেরোনোর নামটি নেই!

রাজা-দুষ্টু
গোটা পরিবারের ভারী আদরের দু’জনে। অল্পবয়য়ে বিয়ে করা এক দম্পতি। আদুরে দুষ্টু আর তার বর রাজার দুষ্টুমিষ্টি প্রেমের হাত ধরে প্রথম সিরিয়ালেই বাজিমাত বিক্রম চট্টোপাধ্যায় আর ঐন্দ্রিলা সেনের। তখন থেকেই দর্শকের সঙ্গে ভালবাসার ‘সাত পাকে বাঁধা’ দু’জনে। 

অনুরাগ-মেঘলা
গানে গানে ভরিয়ে রাখা এক মেয়ে প্রেমের জোয়ারে ভাসাল অনুরাগকে। তার ‘ইচ্ছেনদী’ বেয়ে এগিয়ে চলা সম্পর্কের উজান-ভাটির টানে। অনুরাগ-মেঘলার প্রেম সাড়া ফেলেছিল ঘরে ঘরে। বিক্রম চট্টোপাধ্যায়-শোলাঙ্কি রায়ের ভালবাসায় আজও ভাসে বাঙালি দর্শক। 

সানি-তিতলি
শব্দ ধরা দেয় না তিতলির কানে। মেয়ে তবু ওড়ার স্বপ্ন দেখে। সেই স্বপ্নেরই শরিক হয়ে প্রতি পদে পাশে থাকে তার বর সানি। ‘তিতলি’র নতুন দুই মুখ, মধুপ্রিয়া চৌধুরী এবং আরিয়ান ভৌমিককে এখনও তিতলি আর সানি হিসেবেই মনে রেখেছেন বহু দর্শক। 

শ্যামা-নিখিল
এক কালো মেয়ের আলো হয়ে ওঠার কাহিনি ‘কৃষ্ণকলি’। শ্যামার গান, স্বামী নিখিলের সঙ্গে তার প্রেমের উপাখ্যানে ভরপুর মজে গিয়েছিলেন দর্শক। পর্দায় তিয়াশা আর নীল ভট্টাচার্যর সেই ভালবাসার কাহিনি আজও তাঁদের ততটাই কাছের করে রেখেছে দর্শকমনে। 



সৌজন্য-গুনগুন
শান্ত, পরিণত সৌজন্য আর তার খ্যাপাটে মিষ্টি বৌ গুনগুন। এক বছরের বেশি এই বিয়েতে থাকতে না চাওয়া মেয়ে কী করে যেন তার শান্ত বরকেই ভালবেসে ফেলল ভীষণ। আর ‘খড়কুটো’য় তৃণা সাহা-কৌশিক রায়ের সেই জুটিকেও ঠিক ততটাই ভালবেসে ফেললেন দর্শকও।  

শঙ্খ-মোহর
ডাক্তারির ছাত্রী মোহরের সঙ্গে মেডিক্যাল ইনস্টিটিউটের প্রোফেসর শঙ্খ-র জমাটি প্রেম এবং বিয়ে। ‘মোহর’ ধারাবাহিকের হাত ধরে সোনামনি সাহা-প্রতীক সেনের পাকাপাকি বসত দর্শক-মনে। এবং এমনই সে ভাল লাগা, যে তাদের বিপরীতে অন্য নায়ক-নায়িকা মেনে নিতেও আর রাজি নন কেউই!

মিঠাই-উচ্ছেবাবু 
মিষ্টির স্বাদে মোড়া মিষ্টি প্রেমের গল্প। গ্রামের মেয়ে মিঠাই আর তার শহুরে বর উচ্ছেবাবুর কাণ্ডকারখানায় দর্শক কখনও হেসে খুন, কখনও বা চোখের জলে ভেজা। ‘মিঠাই’-জুটি সৌমিতৃষা কুণ্ডু আর আদৃত রায়কে ভালবাসবেন না?  
 
পর্দা পেরিয়ে এভাবেই তো নেমে আসে ভালবাসা টুপ করে!