আজকাল ওয়েবডেস্ক: বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম একেবারেই সুরক্ষিত নয়। তাই সেখানে বড়মাপের বা কোনও আন্তর্জাতিক মানের টুর্নামেন্ট কিংবা ইভেন্ট আয়োজন সম্ভব নয়। সম্প্রতি আরসিবির ঘরের মাঠ নিয়ে এমনই রিপোর্ট দিয়েছে বিচারবিভাগীয় কমিশন। ফলে চলতি বছর আদৌ সেখানে মহিলা ওয়ানডে বিশ্বকাপের আসর বসবে কিনা, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিরাট প্রশ্ন।
 
 চলতি বছর বিরাট কোহলির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়। তার পরের দিনই ঘটে যায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। দলের সেলিব্রেশনের সময় স্টেডিয়ামের বাইরে পদপিষ্ট হয়ে ১১ জনের মৃত্যু হয়। প্রাথমিক ভাবে আহতের সংখ্যা ৪৭ বলে জানা গিয়েছিল। মর্মান্তিক ঘটনায় স্বতোঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করে কর্নাটক হাইকোর্ট। তারপর থেকেই ঘটনার দায় ঠেলাঠেলি চলছে কর্নাটক সরকার এবং কর্নাটক ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের মধ্যে। এবার জাস্টিস জন মাইকেল ডি’কুনহা কমিশনের তরফে জানানো হয়, স্টেডিয়ামের ডিজাইন এবং পরিকাঠামো বড় কোনও ইভেন্ট আয়োজনের অনুকূল নয়। কারণ এহেন পরিকাঠামোয় প্রচুর সংখ্যক দর্শক সামলানো সম্ভব নয়। কমিশন স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে যদি বড় টুর্নামেন্ট আয়োজনের পরিকল্পনা করে স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ, তবে তা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হবে। জনসাধারণের নিরাপত্তা নিয়ে আরও সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন আছে বলেই জানানো হয়েছে।
 
 এদিকে, চলতি বছর সেপ্টেম্বর থেকে মহিলা ওয়ানডে বিশ্বকাপের আসর বসতে চলেছে ভারতে। চিন্নাস্বামীতেই উদ্বোধনী ম্যাচ এবং একটি সেমিফাইনাল হওয়ার কথা। পাশাপাশি অন্যান্য বছরের মতো আইপিএল ১৯ মরশুমেও আরসিবির হোম ম্যাচ খেলার কথা এই মাঠেই। কিন্তু কমিশনের এই রিপোর্টের পর সবটাই বিশ বাঁও জলে। কারণ কমিশন স্পষ্ট করে দিয়েছে, যে স্টেডিয়ামে ভিড় সামলানো, আপৎকালীন পদক্ষেপ করা এবং যানজট নিয়ন্ত্রণে রাখার দক্ষতা থাকবে, তাদেরই এই ধরনের বড় ইভেন্ট আয়োজন করা উচিত।
আরও পড়ুন: সপ্তাহান্তে এই শাখায় বাতিল থাকছে একাধিক লোকাল, জেনে নিন তালিকা
 
 তবে এও প্রশ্ন উঠেছে, ১৯৭৪ সালে তৈরি এই মাঠেই এতদিন নানা নামী টুর্নামেন্ট আয়োজিত হয়েছে। তাহলে এখন সুরক্ষা নিয়ে কেন প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। কমিশনের দাবি, আন্তর্জাতিক মানের একাধিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা চিন্নাস্বামীতে নেই। যেমন, মাঠের বাইরে দর্শকদের অপেক্ষার জায়গা নেই। প্রবেশ এবং বাইরে গেটের সংখ্যা কম। পাশাপাশি স্টেডিয়ামের আশপাশের পরিবহন ব্যবস্থাও বিশেষ ভাল নয়। এই রিপোর্টের পর এবার কোন পথে হাঁটে কর্তৃপক্ষ, সেটাই দেখার। 
এদিকে পদপিষ্টের ঘটনার পর বিসিসিআই সচিব দেবজিৎ সইকিয়া জানিয়েছিলেন, ‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। জনপ্রিয়তার নেতিবাচক দিক। সমর্থকরা ক্রিকেটারদের নিয়ে পাগলামি করে। যারা এর আয়োজক, আরও ভাল ভাবে এর পরিকল্পনা করা উচিত ছিল।’ বোর্ড সচিব আরও বলেছিলেন, ‘এমন ধরনের বিজয় মিছিল এবং উৎসবের জন্য পর্যাপ্ত সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা থাকা প্রয়োজন। এখানে কিছু না কিছু ঘাটতি ছিল। দুর্দান্ত একটা আইপিএল মরসুম শেষে এমন ঘটনা পুরো আনন্দই বিষাদে পরিণত করেছে।’ ভারতের টি২০ বিশ্বকাপ জয়ের উৎসবকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেছিলেন বোর্ড সচিব। পাশাপাশি গত মরসুমে কেকেআর আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার বিষয়টির সম্পর্কেও বলেন। বোর্ড সচিব বলেছিলেন, ‘অতীতেও আইপিএল জয়ের সেলিব্রেশন হয়েছে। গতবার কেকেআর চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। সেখানেও এমন কিছু হয়নি। আর টি২০ বিশ্বকাপ জয়ের সেলিব্রেশনের কথাই ধরা যাক। মুম্বইতে জনসমুদ্র তৈরি হয়েছিল। পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসন খুব মসৃণ ভাবে বিষয়টা সামলে নিয়েছিল।’
