আজকাল ওয়েবডেস্ক: কলকাতা লিগেও এই হাল। সাদা কালোর অবস্থা একেবারে ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইটের মতোই। এবার রেনবোর কাছেও ১–২ গোলে হারতে হল সাদা–কালো ব্রিগেডকে। কলকাতা লিগের গত ম্যাচে ডায়মন্ড হারবারের কাছে ০–১ গোলে হেরে গিয়েছিল তারা। শুক্রবারের ম্যাচে মেহরাজউদ্দিন ওয়াডুর ছেলেরা জয়ের সরণিতে ফিরতে পারেন কি না, সেটাই ছিল দেখার। কিন্তু শেষপর্যন্ত হতাশ করলেন বৈদ্যনাথ মুর্মু, সজল বাগরা।
শুক্রবার নৈহাটি স্টেডিয়ামে শুরু থেকে খারাপ খেলেনি মহামেডান। যদিও রেনবোও ছেড়ে কথা বলেনি। প্রতিপক্ষের খেলার গতি বুঝে তারাও আক্রমণে উঠে আসছিল। যদিও প্রথমার্ধে কোনও পক্ষই কোনও গোল দিতে পারেনি। দুই দলই বিরতিতে যায় গোলশূন্য অবস্থায়।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই অবশ্য মহামেডানকে এগিয়ে দেন শিবা মাণ্ডি। তাঁকে অনবদ্য ক্রস বাড়িয়েছিলেন সাদা–কালো অধিনায়ক সজল বাগ। গোলের পর আরও উজ্জীবিত ফুটবল খেলতে থাকেন মহামেডান ফুটবলাররা। বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করলেও সেখান থেকে গোল আসেনি।
৭৬ মিনিট পর্যন্ত এগিয়েই ছিল মহামেডান। কিন্তু এরপরেই পুরনো রোগে ভুগতে দেখা যায় সাদা–কালো ফুটবলারদের। রেনবোকে ৭৭ মিনিটে সমতায় ফেরান সৌভিক ঘোষাল। ৮২ মিনিটে রেনবোকে এগিয়ে দেন অমরনাথ বাস্কে। কলকাতা লিগের অপর ম্যাচে এরিয়ান ক্লাব ৩-১ গোলে হারিয়ে দিয়েছে সাদার্ন সমিতিকে।
এদিকে শনিবার কল্যাণীতে হবে মরসুমের প্রথম ডার্বি। যদিও কলকাতা লিগের এই ডার্বিতে জুনিয়রদেরই নামাবে মোহন–ইস্ট। আর বিতর্কহীন ডার্বি আয়োজনের চেষ্টায় ত্রুটি রাখছে না আইএফএ। দর্শক স্বাচ্ছন্দ্য, সাজসজ্জা এসব তো রয়েছেই। মাঠের ভিতরেও বিতর্ক এড়াতে বড় ম্যাচের জন্য রেফারি নিয়ে আসা হচ্ছে ভিনরাজ্য থেকে। মাঠের বাইরের আয়োজনেও তৎপরতা চোখে পড়ছে কল্যাণীতে।
কল্যাণী শহরে ডার্বির প্রচারের জন্য গোটা শহর মুড়ে ফেলা হয়েছে লাল–হলুদ আর সবুজ–মেরুন পতাকায়। সপ্তাহখানেক আগেও এই কল্যাণীতেই বড় ম্যাচ আয়োজনে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল স্টেডিয়ামের পরিকাঠামো। শেষপর্যন্ত তা তৈরির জন্য ইস্ট–মোহন ম্যাচ এক সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়া হয়। আর মাঝের এই সময়টা কতটা কাজে দিয়েছে স্টেডিয়াম চত্বরে পা রাখলেই তা টের পাওয়া যাচ্ছে।
নিরাপত্তার জন্য টিন দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে স্টেডিয়ামের আশপাশ। বসানো হয়েছে অস্থায়ী গেট। প্রতিটি গেটে তো বটেই, নজরদারির জন্য মোট ৩৬টি সিসিটিভি ক্যামেরা থাকছে। বাড়ানো হয়েছে গ্যালারির রেলিং। মূল রাস্তা থেকে গ্যালারি পর্যন্ত যাওয়ার জন্য পাকা রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। রাস্তার ধারে বসেছে বাঁশের ব্যারিকেড। ব্যবস্থাপনা পরিদর্শন করে গিয়েছেন কল্যাণী পুলিশের আধিকারিকরা। পরিকাঠামোয় তারা সন্তুষ্ট। স্টেডিয়ামের আশপাশে নিরাপত্তা তো থাকছেই, সঙ্গে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ম্যাচের দিন দুপুর থেকে শহরে টহল দেবে পুলিশ।
এদিকে স্টেডিয়াম চত্বরে ‘ফ্যান পার্ক’ তৈরির অনুমতি মেলেনি। তবে তারই আদলে স্টেডিয়াম লাগোয়া বীর সিধো–কানহো উদ্যানে মোহনবাগান সমর্থকদের জন্য ও নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু উদ্যানে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের জন্য অবহনযোগ্য সামগ্রী রাখার জায়গা তৈরি করা হয়েছে। গ্যালারির পাশে তৈরি হয়েছে দর্শকদের মেডিকেল সেন্টার। স্টেডিয়াম চত্বরে ইস্টবেঙ্গল–মোহনবাগান সমর্থক ও ভিআইপি মিলিয়ে আলাদা আলাদা জায়গায় প্রায় তিনশো গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকছে। মাঠের অবস্থাও বেশ ভাল। মোহনবাগান–কালীঘাট এমএস ম্যাচের পর কল্যাণীর ওই মাঠে কোনও খেলা হয়নি। ফলে পরিচর্যার জন্য অনেকটাই সময় পাওয়া গিয়েছে। ম্যাচে টিকিটের চাহিদাও রয়েছে তুঙ্গে। মোহনবাগান গ্যালারির সব টিকিট শেষ। তবে ইস্টবেঙ্গল গ্যালারির অল্প কিছু টিকিট এখনও রয়েছে।
