আজকাল ওয়েবডেস্ক: চায়ের প্রতি ব্রিটেনের প্রেম সর্বজনবিদিত। তার ওপর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যিনি একসময় রেলস্টেশনে চা বিক্রি করতেন তিনি যুক্তরাজ্যে সফরে গেলে ‘চায়ে পে চর্চা’ না হয়ে কি আর পারে? সম্প্রতি, মোদি এবং ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের মধ্যে এক ঐতিহাসিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (FTA) স্বাক্ষরের পর দুই নেতা একসঙ্গে চায়ের কাপ ভাগ করে নেন চেকার্সে। চেকার্স হল ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীদের সরকারি বাসভবন। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর এই সফর উপলক্ষ্যে একটি চায়ের স্টল বসানো হয়েছিল লনের ওপর। দোকানে ছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত উদ্যোক্তা অখিল প্যাটেল। তিনি অমলা চায়ের প্রতিষ্ঠাতা।
রঙিন নেহরু জ্যাকেট পরে দাঁড়িয়ে থাকা প্যাটেল জানান, ‘আমার চা ভারতের মাটি থেকে সংগৃহীত, কিন্তু লন্ডনে বানানো’। তিনি যখন চা তৈরি করছিলেন, তখন বলেন, ‘মশলা চা। এই চা এসেছে অসম থেকে, মশলা কেরালা থেকে’। এরপর তিনি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী স্টারমারকে এক কাপ চা এগিয়ে দেন। তবে এরপরেই আসে আসল মুহূর্তটি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাতে চা তুলে দিয়ে অখিল হেসে বলেন, ‘এক চা-ওয়ালা থেকে আরেক চা-ওয়ালার জন্য’। অখিলের মুখে এই সংলাপটি শুনে মোদি হেসে মাথা নাড়েন, আর স্টারমার চা পান করে প্রশংসায় বলেন, ‘ওহ, দারুণ। একেবারে দারুণ, অসাধারণ’। দু’পক্ষের এই উষ্ণ বিনিময় এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। পরে প্রধানমন্ত্রী মোদী নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একটি ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘চায়ে পে চর্চায় প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে চেকার্সে। ভারত-যুক্তরাজ্য সম্পর্ক আরও দৃঢ় হচ্ছে চায়ের কাপে’।
?utm_source=ig_embed&utm_campaign=loading" data-instgrm-version="14">
?utm_source=ig_embed&utm_campaign=loading" target="_blank" rel="noopener">
View this post on Instagram
?utm_source=ig_embed&utm_campaign=loading" target="_blank" rel="noopener">A post shared by Mihir Pandya (@me_here1401)
অন্যদিকে, অখিল প্যাটেল নিজেও ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও শেয়ার করে লেখেন, ‘একটা সাধারণ বৃহস্পতিবার। আর আমি চা বানাচ্ছি নরেন্দ্র মোদি এবং কিয়ার স্টারমারের জন্য! এই সম্মান পেয়ে অভিভূত। অনুপ্রেরণামূলক আলাপ, স্মরণীয় মুহূর্ত’। উল্লেখ্য, অমলা চা প্রতিষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালে। বর্তমানে লন্ডনে এই চায়ের বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে। বিশেষ করে ভারতীয় মশলা চায়ের প্রতি ভালবাসার জন্য। এই চা ভাগ করার মুহূর্তটি শুধু দুই দেশের নেতার মধ্যে নয়, ভারত-যুক্তরাজ্য সম্পর্কের ঐতিহ্য ও উষ্ণতার প্রতীক হয়ে উঠেছে। উল্লেখ্য, শুক্রবার নিজের রাজনৈতিক কেরিয়ারে এক নতুন রেকর্ড গড়েছেন মোদি। তিনি ইন্দিরা গান্ধীর রেকর্ডকে অতিক্রম করে ভারতের ইতিহাসে টানা দ্বিতীয় সর্বাধিক সময় প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন রইলেন। আজ তাঁর প্রধানমন্ত্রিত্বের ৪,০৭৮তম দিন, যেখানে ইন্দিরা গান্ধী ১৯৬৬ সালের ২৪ জানুয়ারি থেকে ১৯৭৭ সালের ২৪ মার্চ পর্যন্ত টানা ৪,০৭৭ দিন দায়িত্বে ছিলেন।
এই মুহূর্তে মোদি দেশের প্রথম স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনবার ধারাবাহিকভাবে প্রধানমন্ত্রিত্বে আসীন আছেন (২০১৪, ২০১৯, ২০২৪)। জওহরলাল নেহরুর পরে এটাই প্রথমবার কোনও প্রধানমন্ত্রী টানা তিনটি সাধারণ নির্বাচনে দলকে জয়ী করে নিজের নেতৃত্ব অক্ষুণ্ণ রাখলেন। মোদি মোট ১১ বছর ও ৬০ দিন (চলমান) ধরে প্রধানমন্ত্রীর পদে রয়েছেন। তিনি দেশের প্রথম ও একমাত্র প্রধানমন্ত্রী যিনি স্বাধীনতা-পরবর্তী জন্মগ্রহণকারী এবং গুজরাটের মতো অ-হিন্দিভাষী রাজ্য থেকে দীর্ঘতম সময়ের জন্য দেশের শীর্ষ পদে অধিষ্ঠিত। তিনি দেশের সবচেয়ে দীর্ঘকালীন অ-কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রীও বটে। বর্তমানে ভারতের ১০ জন দীর্ঘতম সময়ের প্রধানমন্ত্রীর তালিকায় মোদি দ্বিতীয় স্থানে। এই তালিকায় ৬ জনই কংগ্রেস দলের, ২ জন বিজেপির (মোদি ও বাজপেয়ী), এবং বাকি ২ জন জনতা দল ও জনতা পার্টির (মোরারজি দেশাই ও ভি.পি. সিং)।