আজকাল ওয়েবডেস্ক: পারিবারিক অশান্তি চরমে। স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে শুধু নয়। আসল ঝামেলা ননদ ও বৌদির মধ্যে চলছিল। নিত্যদিন অশান্তিই ছিল তাঁদের সঙ্গী। পারিবারিক ঝামেলা আর সহ্য করতে না পেরে চরম পদক্ষেপ করার ছক কষে গৃহবধূ। ননদের উপর রাগের চোটে শ্বশুরবাড়ির সকলেই শেষ করতে চেয়েছিল সে। কিন্তু পরিণতি হল ভয়ঙ্কর।
গৃহবধূর পরিকল্পনা ছিল, একসঙ্গে শ্বশুরবাড়ির সকলের জীবন শেষ করে দেবে সে। তাই খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু খাবার তৈরির আগেই সেই গন্ধ রান্নাঘরে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি ঘিরে সন্দেহ হয় সেই ননদের। অবশেষে বধূর কুকীর্তিও ফাঁস হয়ে যায়। পরিবারের সকলকে শেষ করতে গিয়ে, অবশেষে শ্রীঘরে ঠাঁই হল ওই বধূর।
জানা গেছে, ননদ ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের সঙ্গে নিত্যদিন ঝামেলার কথা বাবাকে জানিয়েছিল গৃহবধূ। বাবা ও মেয়ে মিলে প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিল। শ্বশুরবাড়ির সকলের চরম পরিণতি দেখতে, খাবারে বিষ মিশিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে দু'জনে মিলে। ভেবেছিল, কেউই এই ঘটনাটি ঘিরে সন্দেহ করবে না। এদিকে বিষয়টি জানাজানি হতেই মেয়ের সঙ্গে বাবাও এখন পুলিশি হেফাজতে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের কৌসাম্বি জেলায়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত গৃহবধূর নাম মালতী দেবী। শ্বশুরবাড়ির আটজন সদস্যকে একসঙ্গে খুন করার করার পরিকল্পনা ছিল তার। খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু সেই খাবার আর কেউ খাননি। আটজন সদস্যের মর্মান্তিক পরিণতি রোখা গেছে।
আরও পড়ুন: ফের গণধর্ষণের শিকার ১৮ বছরের কিশোরী, বিজেপি শাসিত রাজ্যে একের পর এক যৌন নির্যাতনে তোলপাড়
জানা গেছে, মালতীর ননদের নাম মঞ্জু দেবী। মঞ্জুর সঙ্গে মালতীর রোজ অশান্তি হত। এমনকী স্বামী ও স্ত্রীর ব্যক্তিগত সম্পর্কে নাক গলাতেন ননদ। মঞ্জুর কারণেই মালতীর জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। ননদের কারণেই বাকিদের সঙ্গেও মালতীর সম্পর্কের অবনতি হচ্ছিল। এই কারণেই মঞ্জু সহ মোট আটজনকে খুনের পরিকল্পনা সে করে।
শ্বশুরবাড়িতে রান্নার দায়িত্ব সামলাতে হত মালতীকে। দিন কয়েক আগে ময়দার সঙ্গে বিষাক্ত পদার্থ সালফোস মিশিয়ে দেয় সে। সেই ময়দা দিয়ে লুচি খাওয়ানোর পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু রান্নাঘরে ঢুকেই বোঁটকা গন্ধ নাকে আসে মঞ্জুর। গন্ধটি ঘিরে তাঁর সন্দেহ হয়। এরপর পরিবারের সকলকে ডেকে বিষয়টি জানান। মালতীর উপর সন্দেহ হতেই তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
এরপরই পরিবারেকে জানায়, ময়দার মধ্যে সে বিষ মিশিয়ে দিয়েছে। মালতীর কীর্তি শুনেই সকলে চমকে ওঠেন। তড়িঘড়ি করে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেই ময়দার পাত্রটি নিজেদের হেফাজতে নেয়। পাশাপাশি মালতী ও তার বাবাকে গ্রেপ্তার করে তারা। বর্তমানে পুলিশি হেফাজতেই তারা রয়েছে। ঘটনাটি ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, মালতী দেবী ও তার বাবার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার পর তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পারিবারিক অশান্তির জেরেই আটজনকে খুন করতে চেয়েছিল গৃহবধূ। আটজনের মর্মান্তিক পরিণতি ঘটেনি। মঞ্জুর কারণেই সকলে প্রাণে বেঁচে যান। ঘটনার মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্ত জারি রয়েছে।
