আজকাল ওয়েবডেস্ক: দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। ২৮৬ দিন পর পৃথিবীতে ফিরলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস এবং বুচ উইলমোর। তাঁদের সঙ্গে ফিরেছেন নাসার নিক হগ এবং রুশ নভশ্চর আলেকজ়ান্ডার গর্বুনভ। বুধবার ভারতীয় সময় ভোর ৩টে ২৭ মিনিটে ফ্লোরিডার গাল্ফ অফ মেক্সিকোয় সফলভাবে অবতরণ করে ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেসএক্সের মহাকাশযান ড্রাগন। 

অনেকের মনে প্রশ্ন, বিমানের মতো কেন বিমানবন্দরে অবতরণ করল না এই মহাকাশযান, কেন আকাশ থেকে ঝুপ করে নেমে এল মাঝ সমুদ্রে। তার কারণ অবশ্যই গতিবেগ। মহাকাশযানটি যখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে তখন তার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২৮হাজার কিলোমিটার। ধীরে ধীরে একাধিক প্যারাস্যুট খুলে গিয়ে এর গতবেগ কমিয়ে আনা হয়। তবে তাতেও স্থলভাগে অবতরণের মতো হয় না। অর্থাৎ যে বিরাট গতিবেগে তা এগিয়ে আসে, তা স্থলভাগে অবতরণ করলে বিরাট সংঘর্ষে মুহূর্তে টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। আর ঠিক সেই কারণেই জলভাগে অবতরণ।

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময় মহাকাশযানটির গতিবেগই কেবল অতিদ্রুত ছিল না, মহাকাশযানটির তাপমাত্রা ছিল চমকে দেওয়ার মতো। মহাকাশ থেকে ঘরে অর্থাৎ পৃথিবীতে ফিরে আসার শেষ ধাপ, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করাই ছিল সবথেকে জটিল, চিন্তার। ওই সময় অর্থাৎ মহাকাশযানটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় তীব্র ঘর্ষণ, যার ফলে এক ধাক্কায় বেড়ে যায় তার তাপমাত্রা। সেই সময় মহাকাশযানের বাইরের আবরণের তাপমাত্রা ছিল প্রায় ১৬০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এক কথায় আগুনের গোলা হয়েছিল সমগ্র মহাকাশযানের বাইরের অংশ। একই সঙ্গে উল্লেখ্য, আগুনের গোলার রূপে মহাকাশযানটি বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গেই মূলত শুরুর হয় তাঁদের ঘএ ফেরার উদযাপনের উচ্ছ্বাস। 

তবে, স্পেসএক্সের ড্রাগন ক্যাপসুলটি পিআইসিএ-এর ফেনোলিক-ইমপ্রেগনেটেড কার্বন অ্যাবলেটরের একটি তাপ-প্রতিরোধী আবরণ দিয়ে তৈরি। যা বাইরের তাপ থেকে ভিতরে থাকা মহাকাশচারীদের রক্ষা করে। উইলিয়ামস এবং উইলমোরকে নিয়ে মহাকাশযান সমুদ্রে নামার পরে দেখা যায়, তা বাদামী রঙের হয়ে গিয়েছে। সাদা ধবধবে মহাকাশযানের রং দেখলেই বোঝা যায়, কীভাবে ঝলসে গিয়েছে তা।