আজকাল ওয়েবডেস্ক: ঐতিহ্যের সঙ্গে নবজাতকদের লড়াই। ইস্টবেঙ্গল-আর্কাদাগের ম্যাচের ট্যাগলাইন এটা হতেই পারে। বুধবার ঘরের মাঠে তুর্কমেনিস্তানের দলের বিরুদ্ধে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে নামবে লাল হলুদ। একটানা ম্যাচ জেতার নজির রয়েছে এই ক্লাবের। দেশের স্থানীয় লিগ জিতেছে। তবে ক্লাবের বয়স মাত্র দু'বছর ছুঁইছুঁই। সেখানে ইস্টবেঙ্গল একশো বছরের ক্লাব। দুই দলের মধ্যে আসম লড়াই। এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের সেমিফাইনালে যাওয়ার এটাই সুবর্ণ সুযোগ কলকাতার ক্লাবের সামনে। ঘরের মাঠে সমর্থকদের উপস্থিতিতে প্রথম লেগে বড় ব্যবধানে জিতে নতুন ক্লাবের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে ইস্টবেঙ্গল। তবে লড়াইটা খুব মসৃণ হবে না। রবিবার পর্যন্ত আইএসএলের সুপার সিক্সে যাওয়ার লড়াইয়ে ছিল অস্কার ব্রুজোর দল। বেঙ্গালুরুর সঙ্গে ড্র করায় প্লে অফের আশা শেষ হয়ে গিয়েছে। এবার একমাত্র ফোকাস এএফসিতে। তবে মাঝে মাত্র একদিন সুযোগ। তাতেই সরাতে হয়েছে ফোকাস। তবে ক্লাবের ঐতিহ্য, ইতিহাস ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর স্প্যানিশ কোচ। অস্কার বলেন, 'আমাদের জন্য গর্বের মুহূর্ত। কারণ আমরা দেশকে প্রতিনিধিত্ব করছি। দলের মোমেন্টাম ভাল। বর্তমানে যে ছন্দে আছে ছেলেরা, তাতে আমাদের ভাল খেলা উচিত। প্রতিপক্ষ আনকোরা নতুন দল। আমরা ক্লাবের ইতিহাসের কথা মাথায় রেখে খেলব।' 

আর্কাদাগের মরশুম সবে শুরু হয়েছে। একদিন আগেই স্থানীয় লিগ শুরু হয়। সেখানে ইস্টবেঙ্গলের মরশুম শেষ হওয়ার পথে। আইএসএলের একটি মাত্র ম্যাচ বাকি। শিবিরে চোট-আঘাত, ক্লান্তি সবই আছে। সেখানে বিপক্ষের ফুটবলাররা অনেকটাই শারীরিক এবং মানসিকভাবে টাটকা। এটা কি কোনও পার্থক্য গড়ে দিতে পারে? তেমন মনে করছেন না অস্কার। বরং জানালেন, একটানা খেলার মধ্যে থাকায় তাঁদেরই কিছুটা সুবিধা হতে পারে। ব্রুজো বলেন, 'আমরা এই মুহূর্তে মরশুমের শেষদিকে চলে এসেছি। তবে আমরা নিয়মিত খেলার মধ্যে আছি। সেটাই চালিয়ে যাব। দুই দলেরই কিছু সমস্যা এবং ইতিবাচক দিক রয়েছে। ওরা সবে মাত্র লিগ শুরু করেছে। প্লেয়ারদের মধ্যে ক্লান্তি থাকবে না। দুটো দলই সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিস্থিতি থেকে আসছে।' একটানা খেলায় ইস্টবেঙ্গলের প্লেয়ারদের মধ্যে ক্লান্তি আছে। তবে সেই নিয়ে কথা বলতে চান না অস্কার ব্রুজো। প্রথমে হোম বা অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলার সুবিধা, অসুবিধা নিয়েও ভ্রুক্ষেপ নেই ইস্টবেঙ্গল কোচের। তবে জানিয়ে দিলেন, বিপক্ষের ফুটবলারদের শারীরিক গঠন ভাল। তাঁদের বিরুদ্ধে খেলা খুব সহজ হবে না। 

আইএসএলে নিজেদের সবটুকু নিংড়ে দিয়েছে লাল হলুদ ফুটবলাররা। এবার পাখির চোখ এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ। আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভুটানের সাফল্য অব্যাহত রাখার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী অস্কার। আইএসএলে বেশ কয়েকবার রেফারির সিদ্ধান্ত তাঁদের বিরুদ্ধে গিয়েছে। কিন্তু এএফসির ম্যাচের আগে রেফারিং নিয়ে বিশেষ মন্তব্য করতে চাইলেন না ইস্টবেঙ্গল কোচ। চোটের জন্য মঙ্গলবার আলোয়ার আলিকে পাওয়া যাবে না। তবে দেশের সেরা ডিফেন্ডারকে মাঠের বাইরে রেখে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামতে ভয় পাচ্ছেন না সল ক্রেসপোরা। ভুটানের পারফরম্যান্স দিয়ে নিজেদের উদ্বুদ্ধ করছে লাল হলুদের ফুটবলাররা। ক্রেসপো বলেন, 'ড্রেসিংরুম জানে এই ম্যাচটা দেশের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা নিজেদের সেরাটা দিতে তৈরি। আমরা ভুটানে সব সুযোগ কাজে লাগিয়ে গোল করেছিলাম। সেটা করার চেষ্টা করব। আনোয়ার দলের গুরুত্বপূর্ণ প্লেয়ার। তবে আরও ২৫ জন প্লেয়ার আছে। আমরা সেমিফাইনালে যাওয়ার জন্য সেরাটা দেব।' ইস্টবেঙ্গল নিয়ে হোমওয়ার্ক করে এসেছেন আর্কাদাগের কোচ ভ্লাদিমির বায়রামো। জানান, কলকাতার ক্লাব আগের তুলনায় ভাল জায়গায় রয়েছে। দাবি, নতুন ক্লাব হলেও তাঁদের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা আছে। তাই ইস্টবেঙ্গলকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে তৈরি।