আজকাল ওয়েবডেস্ক: সারা জীবন জুড়ে লড়াই নোভাক জকোভিচের। সেই ছোটবেলায় তাঁর কোচ রেডিওয় শুনতেন শত্রুপক্ষ কোথায় বোমা ফেলেছে। সেই মতোই পরের দিন ছোট্ট নোভাককে নিয়ে সেই জায়গায় যেতেন অনুশীলনের জন্য। কারণ একই জায়গায় দু' বার বোমা ফেলবে না শত্রুরা।
সার্বিয়ায় বোমা পড়লে বাঙ্কারের ভিতর ঢুকে যেতেন নোভাকরা। খুব নাকি আনন্দ পেতেন। কারণ পড়াশোনা, স্কুল সব বন্ধ। ছোটবেলায় এক শিক্ষক তাঁর টেনিস কিট গোছানো দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। নোভাককে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ''কে গুছিয়ে দিয়েছে কিট?'' আজকের জোকোভিচ বলেছিলেন, ''সাম্প্রাস আমার পছন্দের। ওর কিট গোছানো দেখে শিখেছি।''
সেই জকোভিচ সার্বিয়া ছেড়ে দিলেন অবশেষে। দেশত্যাগ করলেন তিনি। তাঁর নতুন ঠিকানা গ্রিস। জোকারকে নিয়ে কত গল্প। কত মিথ।
পেটের রোগে ভুগতেন জকোভিচ। পরে জানা যায়, গ্লুটেন জাতীয় খাবার বেশি খান তাই পেটের সমস্যা হয়। ডাক্তারের পরামর্শে গ্লুটেন খাওয়া বন্ধ করে দিলেন। উইম্বলডন জিতে উঠে ঘাস মুখে নিয়ে বললেন, ''গ্লুটেন ফ্রি।''
আরও পড়ুন: রোহিত, বিরাট, ধোনির থেকে অধিনায়ক হিসেবে বহু এগিয়ে সূর্য, পরিসংখ্যান সেরকমই বলছে
গোড়ার দিকে ফেডেরার, নাদালদের বন্ধু ছিলেন। জোকারের বাবা বলেছেন, "যেই আমার ছেলে ওদের হারাতে শুরু করল,ওরা আমার ছেলের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিল।'' মারিয়া শারাপোভার সাংবাদিক বৈঠকে তাঁকেই নকল করতে শুরু করে দিলেন। টেনিসমহলে তিনি জোকার। সবাইকে হাসান। কিন্তু সেই জকোভিচই প্রবল চাপ নিয়ে দেশ ছাড়লেন। চাপ বাড়ছিল তাঁর উপরে। অবশেষে জন্মভূমি ছেড়ে চলে গেলেন অন্য দেশে। কিন্তু কেন?
গত ডিসেম্বর থেকে সার্বিয়ায় শিক্ষার্থীদের সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে তিনি সমর্থন করছিলেন। তাঁর এহেন অবস্থানের জন্য ‘শত্রু’ হয়ে গিয়েছিলেন। সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার ভুকিচের সমর্থকদের ঘনিষ্ঠ সংবাদমাধ্যমগুলো জকোভিচকে ‘দেশবিরোধী’ আখ্যা দিয়েছিল। এবার সেই দেশের সরকারের রোষে পড়ে সার্বিয়া ছেড়ে চলে গেলেন জকোভিচ। খবর অনুযায়ী, জকোভিচ গ্রিসে থাকা শুরু করেছেন। তাঁর ছেলেমেয়েরা সেখানকার স্কুলে পড়াশোনা করছে।
২৪টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী জকোভিচ আন্দোলন শুরুর দিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছিলেন,''যুব সমাজের উপরে আমার আস্থা রয়েছে। তাদের ক্ষমতায় বিশ্বাস করি। উন্নত ভবিষ্যতের জন্য ওদের কথা শোনা জরুরি।''
অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ের পর আন্দোলনে নিহত ছাত্রের স্মৃতিতে শিরোপা উৎসর্গ করেন এবং বেলগ্রেড বাস্কেটবল ডার্বি দেখতে গিয়ে ‘স্টুডেন্টস অ্যান্ড চ্যাম্পিয়ন্স’ লেখা একটি টি-শার্ট পরেছিলেন। এসব পদক্ষেপের জন্যই তিনি সরকারের রোষানলে পড়েন।
গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোসের সঙ্গে বেশ কয়েকবার বৈঠকও করেছেন জকোভিচ বলেই জল্পনা ছড়িয়েছিল। সৌজন্য সাক্ষাৎকার বলে উল্লেখ করেছিলেন জোকার। এবার সত্যি সত্যিই তিনি সার্বিয়া ছেড়ে গ্রিসে গিয়ে পাকাপাকিভাবে থাকতে শুরু করে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: 'বাবর-রিজওয়ান অনেক সুযোগ পেয়েছে...এবার নতুনদের', পাক ক্রিকেট নিয়ে বড় মন্তব্য আক্রমের
