আজকাল ওয়েবডেস্ক: মহম্মদ সিরাজ ম্যাজিক  ওভালে। হায়দরাবাদির আগুনে স্পেলে সিরিজে সমতা ফিরিয়ে আনে ভারত। দ্বিতীয় ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেন সিরাজ। ম্যাচে ৯ উইকেট। ম্যাচের সেরাও তিনি। হায়দরাবাদ উচ্ছ্বসিত। সিরাজের দাদা মহম্মদ ইসমাইল জানান সবাই উচ্ছ্বসিত। তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে কী কথাবার্তা হয়েছে সেটাও প্রকাশ করেন ইসমাইল। 

ভারতকে জেতানোর পরে সিরাজকে ফোন করেছিলেন ইসমাইল। তিনি বলেন, ''কিছুক্ষণ আগেই সিরাজের সঙ্গে কথা হয়েছে। পরিবারের তরফ থেকে সিরাজকে অভিনন্দন জানাই। সেই সময়ে টিম বাসে করে হোটেলে ফিরছিল ও। আমাকে বলল, ভাই আমি খুব ক্লান্ত। শরীর ছেড়ে দিয়েছে।'' ক্লান্তি-শ্রান্তি বলে কিছু নেই সিরাজের অভিধানে। 

আরও পড়ুন: শেষ ভারত–ইংল্যান্ড সিরিজ, ফের কবে মাঠে নামবেন গিলরা জানুন 

ইসমাইল বলছেন, সেই ছোটবেলা থেকেই সিরাজের ইচ্ছাশক্তি বেশি। মানসিক দিক থেকে দারুণ শক্তিশালী। বয়স বাড়লেও, মহল্লার ক্রিকেট থেকে রাজ্যস্তর ঘুরে জাতীয় দলের তারকা হওয়ার পরেও বদলাননি সিরাজ। আগে যেমন ছিলেন, এখনও তাই আছেন। 

ইসমাইল বলছেন, ''টেনিস বল ক্রিকেট যখন খেলত, সেই সময় থেকে একটুও বদলায়নি সিরাজ। ২০১৫ পর্যন্ত চামড়ার বলে খেলেনি সিরাজ। কিন্তু হারার আগে কখনওই হার মানেনি ও।'' 

সিরাজের পছন্দ ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। তাঁর বাড়িতে রয়েছে সিআর সেভেনের পোস্টার। পর্তুগিজ মহাতারকা প্রেরণা জুগিয়ে যান সিরাজকে। ওভালে পঞ্চম দিন জয় ছিনিয়ে নেওয়ার পরে সাংবাদিক বৈঠকেও সিরাজ সেই রোনাল্ডোর ছবি সম্বলিত ওয়ালপেপারের উল্লেখ করেন। ম্যাচ শেষের পরেই মহম্মদ সিরাজ একাধিকবার তাঁর ফোনের ওয়ালপেপারের কথা উল্লেখ করেছেন। অবশেষে নিজেই সেই ওয়ালপেপার প্রকাশ্যে আনলেন তিনি। ম্যাচের পর সাংবাদিক সম্মেলনে এসে নিজের ফোন বের করে সেই ওয়ালপেপার দেখালেন তিনি। কী রয়েছে সেখানে? ওয়ালপেপারে রয়েছে একটি ছবি যার সামনে লেখা রয়েছে ‘বিলিভ’।

পিছনে রয়েছে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে খেলার সময়কার একটি ছবি। সিআরসেভেনের বড় ভক্ত সিরাজ জানিয়েছেন, রোনাল্ডোর এই ছবিই ম্যাচের আগে দেখেছিলেন তিনি যা তাঁকে বিশ্বাস জুগিয়েছিল যে তিনি পারবেন।

বিরাট কোহলি এই ভারতীয় দলের সদস্য নন। ইংল্যান্ড সফরের আগে পাঁচদিনের ফরম্যাট থেকে অবসর নেন কোহলি। সিরাজের উত্থানের পিছনে বিরাটের অবদান কোনও অংশে কম নয়। ইসমাইল বলেন, ''বিরাট ভাই সিরাজকে খুব সাহায্য করেছেন। ২০১৮-র আইপিএলে সিরাজের পারফরম্যান্স ভাল ছিল না। সেই সময়ে বিরাট ভাই ওকে উৎসাহ জাগিয়েছিল।''  

‘ওয়ার্কলোড’ আবার কী? দেশের প্রতিনিধিত্ব করছো, যতক্ষণ দম আছে, সেবা করে যাও, সেই মন্ত্রেই চলেন সিরাজ। হায়দরাবাদের ডিএসপি স্যার। একটানা নিজের ১০০% দিয়ে বল করে গিয়েছেন সিরিজ জুড়ে। উইকেট না পেলেও এক মুহূর্তের জন্যও হাঁপাতে দেখা যায়নি। চলতি সিরিজের লিডিং উইকেট টেকার হিসেবে শেষ করেন তিনি। লর্ডসে শেষ মুহূর্তে আউট হয়ে বসে পড়েছিলেন পিচের মধ্যেই। ওভালে মাঠ ছাড়লেন মাথা উঁচু করে, এক হাতে স্টাম্প আর এক হাতে ফাইফারের বল নিয়ে।

আরও পড়ুন: ভারত–ইংল্যান্ড সিরিজের সব টেস্টই গড়াল পাঁচ দিন অবধি, ইতিহাসে এরকম কতবার হয়েছে জানুন ...