আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতীয় ফুটবল টিমের নতুন কোচ হিসেবে নিয়োজিত হলেন খালিদ জামিল। এতদিন আইএসএল খেলা জামশেদপুর এফসির কোচ ছিলেন তিনি। কিছুদিন আগেই যে তিনজন কোচের নাম ফেডারেশন শর্টলিস্ট করেছিল তার মধ্যে নাম ছিল খালিদ জামিলের। আগেই আন্দাজ করা গিয়েছিল আগস্টের প্রথম দিনেই নতুন কোচের নাম ঘোষণা করতে পারে ফেডারেশন। সেই মতোই এদিন খালিদ জামিলের নাম ঘোষণা করা হয় ফেডারেশনের তরফে। অনেকদিন পর ভারতীয় ফুটবলে কোনও ভারতীয় কোচকে দেখা যাবে। ভারতীয় ফুটবলপ্রেমী সহ বহু প্রাক্তনরাও ভারতীয় ফুটবলের উন্নতির জন্য ভারতীয় কোচ নিয়োগের কথা বলেছেন। এবার খালিদ জামিলের নতুন অভিযান শুরু হচ্ছে ভারতীয় ফুটবল টিমের কোচ হিসেবে। প্রসঙ্গত, যারা ভারতীয় দলের কোচের জন্য আবেদন করেছিলেন তাদের মধ্যে থেকে বর্তমানে তিনজনকে শর্টলিস্ট করেছে ফেডারেশন। সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিলেন স্টিফেন কনস্ট্যানটাইন, খালিদ জামিল এবং স্টেফান টার্কোভিচ।
কনস্ট্যানটাইন এর আগে কোচিং করিয়েছিলেন ভারতীয় দলকে। তাঁর কোচিংয়ে বহুদিন খেলেছেন ছেত্রীরা। তবে খালিদ জামিলও এবার দাবিদার ছিলেন কোচের দায়িত্ব পাওয়ার। এর আগে অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন (AIFF) টানা দ্বিতীয়বারের জন্য জামশেদপুর এফসির প্রাক্তন হেড কোচ খালিদ জামিলকে 'AIFF বর্ষসেরা কোচ' (Men’s Coach of the Year) পুরস্কারে সম্মানিত করেছিল। এবারেরটা যোগ করে এই নিয়ে পরপর দ্বিতীয়বার এই সম্মান পেলেন খালিদ। গত মরশুমে তিনি জামশেদপুর এফসি-কে প্রথমবারের মতো কলিঙ্গ সুপার কাপ ফাইনালে পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি ইন্ডিয়ান সুপার লিগেও এক ঐতিহাসিক পালাবদলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। জামশেদপুর এফসির কোচের দায়িত্বে থাকাকালীন মূলত দেশীর প্রতিভা তুলে আনার দায়িত্বে জোর দিয়েছিলেন তিনি। এর আগে এএফসি প্রো লাইসেন্সধারী খালিদ জামিল ২০২০–২১ মরশুমে FPAI কোচ অফ দ্য ইয়ার পুরস্কার জিতে খ্যাতি অর্জন করেন। আইজল এফসির হয়ে আই-লিগ জিতে ইতিহাস গড়েন।
পরিসংখ্যান বলছে, তিনিই একমাত্র ভারতীয় কোচ যিনি একটি আইএসএল দলকে প্লে-অফে নিয়ে গেছেন। ২০২৩–২৪ মরশুমে যখন জামশেদপুর এফসি মাত্র ১১ ম্যাচে ২টি জয় পেয়েছিল, তখন দলের দায়িত্ব গ্রহণ করেন খালিদ জামিল। তাঁর কোচিংয়ে দলটি ২০২৪ কলিঙ্গ সুপার কাপ জুড়ে অপরাজিত থেকে সেমিফাইনালে পৌঁছায়। এমনকি, আইএসএলেও পরপর প্রথম পাঁচ ম্যাচে অপরাজিত থাকে। তবে, খালিদ জামিল কোচ হিসেবে নিযুক্ত হলেও তাঁর চুক্তি হবে ডিসেম্বর পর্যন্ত। ভারতীয় পুরুষ ফুটবল দলের কোচ হিসেবে খালিদ জামিলের প্রথম অভিযান কাফা নেশনস কাপে। এশিয়ানের আগে এই টুর্নামেন্ট যে খালিদের কাছে বড় পরীক্ষা তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
কাফা নেশনস কাপে ভারতের সঙ্গে একই গ্রুপে রয়েছে ইরান, তাজিকিস্তান এবং আফগানিস্তান। উল্লেখ্য, মার্কুয়েজের পদত্যাগের পর ভারতীয় ফুটবল দলের কোচ নিয়ে অনেক জলঘোলা হয়েছিল। খবর আসে, বার্সেলোনার কিংবদন্তি জাভি হার্নান্দেজ ভারতীয় দলের হেড কোচ হওয়ার ইচ্ছা নিয়ে নাকি মেল করেছিলেন ফেডারেশনকে। গুরপ্রীত-সুনীলদের হেডস্যর হওয়ার জন্য পেপ গুয়ার্ডিওলাও মেল করেছিলেন। এই দুই হাই প্রোফাইল ব্যক্তিত্বকে নিয়ে জল্পনা চলেছিল গোটা দেশজুড়ে। অর্থের অভাবে জাভির কথা আর ভাবেনি ফেডারেশন। এমনও এক থিওরির জন্ম হয়েছিল। কিন্তু ফেডারেশনের তরফ থেকে গত শনিবার জানানো হয়, জাভি ও গুয়ার্ডিওলার নাম করে ভুয়ো মেল পাঠানো হয়েছিল সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থায়। ফেডারেশন জানিয়ে দেয় কেউ বা কারা তাঁদের নাম নিয়ে ভুয়ো মেল পাঠিয়েছে। ফেডারেশনের সঙ্গে মজা করে কেউ জাভি ও পেপের নাম নিয়ে মেল করেছেন। ভারতীয় ফুটবলকে নিয়ে হাসি-মস্করা করা হচ্ছে!
ফেডারেশনের এহেন ঘোষণার পরে এক ভারতীয় তরুণ স্বীকার করে নেন, জাভি সেজে তিনিই বোকা বানিয়েছেন সবাইকে। সবকিছুর শুরু একটা ইনস্টাগ্রাম পোস্ট দিয়ে। ৪ জুলাই এআইএফএফ লিখেছিল, ‘'ভারতের পুরুষদের সিনিয়র জাতীয় দলের জন্য কোচ খোঁজা হচ্ছে।' একটি ইংরেজি দৈনিকের খবর অনুযায়ী, ভেলোরের ভিআইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ বছর বয়সী এক ছাত্র দাবি করেন, তিনিই ওই ভুয়ো মেল পাঠিয়েছেন। সেই ছাত্রটি জানান, তিনি জাভির নামে ভুয়ো মেল আইডি বানান। এরপর চ্যাটজিপিটির সাহায্য নেন। জাভির পক্ষ থেকে একটা মেইল লেখার কমান্ড দেওয়া হয় চ্যাটজিপিটিকে। ৪ ও ৫ জুলাই দু'বার ফেডারেশনকে মেল পাঠানো হয়। সিভি অবশ্য মেলের সঙ্গে পাঠানো হয়নি। জাভির নামে তিনি মেল পাঠালেও গুয়ার্দিওলার নাম করে তিনি মেল পাঠাননি বলেই জানান।
