আজকাল ওয়েবডেস্ক: ইরানের কাছে তিন-তিনটি গোল হজম। কাফা নেশনস কাপে তাজিকিস্তানকে হারিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিল খালিদ জামিলের ভারত।
ইরানের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষ পার্থক্যটা বুঝিয়ে দিল চোখে আঙুল দিয়ে। ফিফার ক্রমতালিকায় ইরান ২০ নম্বরে। ভারত সেখানে ১৩৩ নম্বরে। এই অসম লড়াইয়ে ভারতের ছেলেরা প্রথমার্ধে দাঁত কামড়ে লড়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: রোহিত–বিরাটের শূন্যস্থান ভরবে কে? প্রশ্ন তুলে দিলেন সতীর্থ ক্রিকেটারই
কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের ভাগ্য বদলে দেন মেহেদি তারেমিরা। ভারতের এই চোয়াল চাপা লড়াই একসময়ে থেমে যেতই। খালিদ জামিল ম্যাচের শেষে বলেছেন, কঠিন বাস্তব যাচাই করা গেল। খালিদ হারের জন্য রক্ষণের দুর্বলতাকে দায়ী করেছেন। সেই সঙ্গে চাপের মুখে রুখে দাঁড়াতে না পারার জন্য হার বলে দাবি করেছেন খালিদ। ইরান ম্যাচের ফলাফল ভুলে গিয়ে পরবর্তী আফগানিস্তান-লড়াইয়ের প্রতি ছেলেদের মনোনিবেশ করতে বলছেন 'হেডস্যর' খালিদ।
ইরানের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষ শুরু থেকেই যে আক্রমণের ঝড় তুলবে, তা জানতেন খালিদ। সেই কারণে রক্ষণ মজবুত করার উপরে জোর দেওয়া হয়েছিল। প্রথম হাফে ইরানের আক্রমণ রুখে দিলেও দ্বিতীয়ার্ধে ভারতের প্রতিরোধ থেমে যায়। আফগানিস্তানের শক্তি ভারতের মতোই। ফলে সেই ম্যাচে খালিদের দল আক্রমণাত্মক খেলবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। আফগানদের বিরুদ্ধে খালিদ কি রণনীতি গ্রহণ করেন, সেটাই দেখার।
ভারতে খেলে যাওয়া প্রাক্তন ইরানি ফুটবলার মজিদ বিশকরের মতে, রেজাল্ট ভারতের জন্য ভাল হলেও ইরান কিন্তু ম্যাচের ফলাফল নিয়ে সন্তুষ্ট নয়। আরও বেশি গোল প্রত্যাশা করেছিল ইরান।
আইএসএলে জামশেদপুর ও নর্থ ইস্টের কোচ হিসেবে দুর্দান্ত কাজ করেছেন। আইজলকে আই লিগ জেতান। আবার দুই প্রধানে কোচিং করাতে এসে তিনি ব্যর্থ। অপমানের জ্বালা নিয়েই তিনি কোচিং করিয়েছেন আইএসএলের মঞ্চে।
কলকাতায় কোচিং করানোর সময়ে তাঁর নাম হয়ে গিয়েছিল ‘তুকতাক কোচ’। একবার এক বৈদ্যুতিন মাধ্যমের চিত্রসাংবাদিক তাঁর ছবি তুলতে গিয়ে মহা সমস্যায় পড়েছিলেন। খালিদ তখন ইস্টবেঙ্গলের কোচ। তিনি সেই চিত্রসাংবাদিককে বলে দেন, ‘তুমি সরে যাও এখান থেকে। নইলে আমি অভিশাপ দেব তোমাকে। সেই অভিশাপ লেগে যাবে তোমার’।
খেলার আগে বা পরে খালিদের সাংবাদিক বৈঠক থেকে বিশেষ কিছুই বেরতো না। খুব অল্প কথা বলতেন। ফোন করলে অধিকাংশ সময়ে ধরতেন না। ধরলেও সেই দু-একটা কথা। তার মধ্যে বিশেষত্ব কিছু থাকত না। ইস্টবেঙ্গলের কোচ থাকার সময় তাঁর একটা ‘গুমঘর’ ছিল। লেসলি ক্লডিয়াস সরণীর ক্লাবে খালিদের ঘরকে ওই নামেই ডাকা হত। সেখানে পছন্দের ফুটবলারদের ডেকে কথা বলতেন। বাকিদের ডাকতেনই না।
লাল-হলুদের কোচ থাকার সময়ে একবার ডার্বির আগে ও পরে মোহনবাগানের মিডিয়া ম্যানেজারের সঙ্গে জোর ঝামেলা করেছিলেন। শোনা যায় খালিদ জামিল নাকি তাঁকে ধাক্কা দিয়েছেন। অনেকেই খালিদের মধ্যে ছায়া দেখতে পেতেন সৈয়দ নইমুদ্দিনের। ইস্টবেঙ্গলের কোচ থাকার সময়ে খালিদের সঙ্গে সমস্যা হয়েছিল সুভাষ ভৌমিকের। সুভাষ তখন ছিলেন লাল-হলুদের টিডি। সুপার কাপ চলাকালীন দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল লাল-হলুদ। সুভাষ সবার সামনেই বলে ফেলেছিলেন, ‘কী দুর্বিনীত ছেলেরে বাবা!’
সেই খালিদ জামিলের দিকে এখন তাকিয়ে গোটা দেশ। কাফা নেশনস কাপে জাতীয় দলের কাছ থেকে জয় দেখতে চাইছেন সমর্থকরা। খালিদ জামিল কি আরও একটা জয় উপহার দিতে পারবেন দেশবাসীকে?
আরও পড়ুন: 'ভারতের জন্য ভাল হল কিন্তু ইরান খুশি নয় রেজাল্টে', বাদশাহি মন্তব্য মজিদের
