আজকাল ওয়েবডেস্ক:‌ বদলা নিলেন কার্লোস আলকারাজ। ইউএস ওপেনের সেমিফাইনালে উড়িয়ে দিলেন নোভাক জকোভিচকে। দ্বিতীয় বাছাই আলকারাজ ৬–৪, ৭–৬ (‌৭–৪)‌, ৬–২ গেমে হারালেন সপ্তম বাছাই সার্বিয়ান তারকাকে।


এটা ঘটনা, আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে পুরুষদের সিঙ্গলসের প্রথম সেমিফাইনালের শুরুর দিকের খেলা দেখা মনে হচ্ছিল, কোনও অবাছাই খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছেন কার্লোস আলকারাজ। শেষ অবধি সেটাই হল। আরও এক বার গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে ওঠার আগেই বিদায় নিলেন পুরুষদের সর্বাধিক গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক। চলতি বছর গ্র্যান্ড স্ল্যামে ট্রফিহীন থাকলেন জকোভিচ। বিশ্বের প্রথম টেনিস খেলোয়াড় হিসাবে বছরের চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যামেরই সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হল সার্বিয়ার তারকাকে।


হার্ড কোর্টে প্রথম বার জকোভিচকে হারালেন আলকারাজ। ম্যাচ জিততে আড়াই ঘণ্টাও লাগেনি তাঁর। চলতি ইউএস ওপেনে স্বপ্নের ফর্মে রয়েছেন আলকারাজ। ছ’টি ম্যাচে একটিও সেট না খুইয়ে ফাইনালে উঠলেন তিনি।


এই ম্যাচের আগে মুখোমুখি সাক্ষাতে ৩–৫ পিছিয়ে ছিলেন আলকারাজ। শেষ দু’বারের সাক্ষাতে হেরেছিলেন আলকারাজ। এই ম্যাচের পর ব্যবধান কমে হল ৪–৫। 


প্রথম গেমেই জকোভিচের সার্ভিস ভাঙেন আলকারাজ। এই ধরনের খেলায় একটি ভুল পার্থক্য গড়ে দেয়। দিলও তাই। পরের ন’টি গেমে দুই খেলোয়াড় নিজেদের সার্ভিস ধরে রাখলেও জকোভিচকে সেটে হারতে হল।


আলকারাজের খেলা দেখে বোঝা যাচ্ছিল, তিনি আক্রমণ ছাড়া আর কিছুই ভাবছেন না। ঘণ্টায় ২২৮ কিলোমিটার গতিবেগে সার্ভিস করলেন। তার জবাব জকোভিচের কাছেও ছিল না। তিনি জকোভিচকে ভুল করতে বাধ্য করলেন। আলকারাজকে দেখে জকোভিচও গায়ের জোরে শট খেলার চেষ্টা করলেন। তাতেই নিয়ন্ত্রণ হারালেন তিনি। কয়েকটি সহজ রিটার্নে আনফোর্সড এরর করলেন তিনি। ডবল ফল্টও হল। জকোভিচকে তাতাতে মাঝেমধ্যেই চিৎকার করছিলেন দর্শকরা। কিন্তু তাতেও জেগে উঠতে পারলেন না জোকার।


তবে জকোভিচ যে লড়াই না করে হার মানবেন না তা দ্বিতীয় সেটের শুরুতেই দেখা গেল। দ্বিতীয় গেমে আলকারাজের সার্ভিস ভাঙলেন তিনি। এর আগে ৭৪টি সার্ভিস গেমের মধ্যে ৭৩টি জিতেছিলেন স্প্যানিশ তারকা। অবশেষে জকোভিচের কাছে তাঁকে সার্ভিস খোয়াতে হল। যদিও দ্রুত নিজের ভুল শুধরে নিলেন আলকারাজ। ০–৩ পিছিয়ে থেকে ৩–৩ করলেন তিনি। আরও এক বার জকোভিচের সার্ভিস ভাঙলেন। 


প্রথম গেম থেকে খুব একটা লম্বা র‌্যালি খেলছিলেন না দুই তারকা। দ্রুত পয়েন্ট তোলার চেষ্টা করছিলেন। দ্বিতীয় সেটের নবম গেমে ২৭ শটের র‌্যালি হল। 
দ্বিতীয় সেট গড়াল টাইব্রেকারে। সেখানে বাজিমাত করলেন আলকারাজ। দ্বিতীয় সেটের পর মেডিক্যাল বিরতি নেন জকোভিচ। ফিজিও কোর্টেই তাঁর ঘাড় মালিশ করে দিচ্ছিলেন। কিন্তু তাতেও লাভ হল না। তৃতীয় সেটে আরও চেপে ধরলেন আলকারাজ। সেটটা জিতলেন ৬–২ ব্যবধানে।


জকোভিচকে দাঁড় করিয়ে স্ট্রেট সেটে জিতে ফাইনালে উঠলেন আলকারাজ। বোঝা গেল, সময় হয়ে এসেছে ২৪ গ্র‌্যান্ড স্ল্যামের মালিকের। আর বেশি দিন হয়তো কোর্টে দেখা যাবে না সার্বিয়ান তারকাকে। ফাইনালে চলে গেলেন জানিক সিনারও। শীর্ষবাছাই সিনার ৬–১, ৩–৬, ৬–৩, ৬–৪ গেমে হারালেন ফেলিক্স অগার আলিয়াসিমেকে। ফাইনালে এবার লড়াই এক ও দু’‌নম্বরের।