আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতের হাইওয়ে মানেই শুধু ধুলো, গতি আর ক্লাক্সনের কোলাহল নয়—পিছন থেকে চোখে পড়ে এক অদ্ভুত কিন্তু চেনা বার্তা: “Horn OK Please”। বহু দশক ধরে এটি ভারতীয় ট্রাক ও বাসের পেছনের চিহ্ন হয়ে উঠেছে। কিন্তু এই বাক্যটির পেছনের ইতিহাস জানলে অবাক হবেন অনেকেই।
এই শব্দবন্ধটির মূল কাজ ছিল অতিক্রমকারী ড্রাইভারকে পথ নির্দেশ দেওয়া। আগের দিনে ভারতের বেশিরভাগ রাস্তাই ছিল সরু ও অপ্রশস্ত, ট্রাক বা বড় গাড়ির রিয়ারভিউ ছিল সীমিত। তাই পিছনের গাড়ির চালকদের জানাতে হতো, কখন তারা নিরাপদে ওভারটেক করতে পারবেন। এই উদ্দেশ্যে ট্রাকের পেছনে লেখা হতো—“Horn OK Please”—মানে, হর্ন বাজিয়ে অনুমতি নিয়ে এগিয়ে যান। এমনকি ‘OK’-এর নিচে একটি ছোট বাল্বও লাগানো থাকত, যা জ্বলে উঠলে বুঝতে হতো, ওভারটেক করা নিরাপদ।
কিন্তু ‘Horn Please’ নয় কেন? এই প্রশ্ন বহুবার উঠেছে—হর্ন বাজাও, এটাই তো উদ্দেশ্য। তবে মাঝখানে ‘OK’ কেন? এর উত্তরে দুইটি ব্যাখ্যা জনপ্রিয়:
"OK" মানে On Kerosene:
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ডিজেলের সংকটে গাড়ি চলত কেরোসিনে। কেরোসিন ছিল অত্যন্ত দাহ্য, তাই অন্য গাড়িদের সতর্ক করতে চালকেরা 'OK' (On Kerosene) লিখতেন। যেন বোঝা যায় এই গাড়ি বিশেষ সাবধানতার দাবি রাখে।
Tata-র OK সাবান:
১৯৪০-এর দশকে টাটা অয়েল মিলস (TOMCO) ‘OK’ নামক একটি ডিটারজেন্ট বাজারে আনে। সেই সাবানের বিজ্ঞাপন হিসেবে তারা ট্রাকের পেছনে ‘OK’ লিখতে শুরু করে। এর চারপাশে ফুল, রঙের খেলা ও পরে যুক্ত হয় “Horn” ও “Please”—তৈরি হয় এক আশ্চর্য কোলাজ: Horn OK Please।
২০১৫ সালে মহারাষ্ট্র সরকার এই লেখাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। কারণ: অপ্রয়োজনীয় হর্ন বাজানোর প্রবণতা ও শব্দদূষণ। আধুনিক রাস্তায় যেখানে ইন্ডিকেটর ও হেডলাইটে যোগাযোগ সম্ভব, সেখানে এই ‘আওয়াজ’-ভিত্তিক সংকেত পুরনো হয়ে পড়েছে।
