আজকাল ওয়েবডেস্ক: জল্পনা ছিলই। জল্পনার জল এতদূর গড়িয়েছে যে এবার মুখ খুলতে হল সরকার পক্ষকে। জল্পনা কী নিয়ে? জল্পনা ছিল, দীর্ঘকালের পর নাকি এবার বদলে যেতে চলেছে মিজোরামের রাজধানী। আর আইজল থাকবে না স্টেট ক্যাপিটাল। বদলে নতুন রাজধানী হবে থেনজল।

কোথায় এই থেনজল? থেনজল হল আইজল থেকে প্রায় ৯৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি আদমশুমারি শহর। এটি সেরছিপ নির্বাচনী এলাকার অন্তর্গত, যেখান থেকে মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা ২০১৮ এবং ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পরপর নির্বাচিত হয়েছিলেন। জল্পনা ছড়িয়েছিল, লালদুহোমার নির্বাচনী এলাকাই এবার থেকে পরিচিত হবে স্টেট ক্যাপিটাল হিসেবে। অভিযোগ ছিল, সরকার পক্ষ প্রয়োজন ছাড়াই রাজ্যের রাজধানী আইজল থেকে সেরছিপ জেলার থেনজালে স্থানান্তরের চেষ্টা করছে।

আরও পড়ুন: 'বাংলাদেশি'? লাল কেল্লায় জোর করে ঢুকে যাওয়ার চেষ্টা! একদল যুবককে তুলে নিয়ে গেল দিল্লি পুলিশ


যদিও সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, সোমবার মিজোরাম সরকার লাগাতার উঠে আসা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এক বিবৃতিতে, জোরাম পিপলস মুভমেন্ট (জেডপিএম) সরকার দাবি করেছে, কেন্দ্র কর্তৃক রাজ্য প্রশাসনের কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে "ক্রিটিক্যাল এরর" থেকেই রাজধানী থেনজালে স্থানান্তরিত হওয়ার ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি করেছে।

মিজোরামের প্রধান বিরোধী দল, মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট (এমএনএফ) ১ আগস্ট মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে রাজ্যের রাজধানী আইজল থেকে থেনজালে স্থানান্তরের "গোপনে" চেষ্টা করার এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য কেন্দ্রের কাছ থেকে তহবিল চাওয়ার অভিযোগ করেছে। ঘটনা প্রসঙ্গে গত কয়েকদিন ধরেই উত্তাল পরিস্থিতি।

এমএনএফের সাধারণ সম্পাদক জোদিনপুইয়া যেমন ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘২৪শে এপ্রিল, আবাসন ও নগর বিষয়ক মন্ত্রণালয় মিজোরামের মুখ্য সচিব এবং দিল্লির আবাসিক কমিশনারকে 'আইজল থেকে থেনজলে রাজ্যের রাজধানী স্থানান্তর' বিষয়ের অধীনে চিঠি পাঠিয়েছিলেন, যাতে তাঁদের এই বিষয়ে একটি বিস্তারিত প্রকল্প প্রতিবেদন (ডিপিআর) প্রস্তুত করতে বলা হয়েছিল।‘

রাজ্যের নগর উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচন বিভাগ এক বিবৃতিতে স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে কেন্দ্র কর্তৃক রাজ্য সরকারকে পাঠানো চিঠিতে একটি ত্রুটি ছিল, যা থেকেই মূলত রাজ্যের রাজধানী আইজল থেকে থেনজলে স্থানান্তর করার ভুল বার্তা ছড়িয়ে পড়ে।

 

তবে চিঠি ছিল থেনজল প্রসঙ্গে। স্টেট ক্যাপিটাল বানানো লক্ষ্য না হলেও, 'থেনজল শান্তি শহর' প্রকল্পের জন্য বিস্তারিত প্রকল্প প্রতিবেদন তৈরির জন্য আবাসন ও নগর বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক ১০ কোটি টাকার তহবিল অনুমোদনের বিষয়েই ছিল চিঠিটী। জানা গিয়েছে সেকথাও।

৪শে এপ্রিল, লালদুহোমা বলেছিলেন যে থেনজল এবং আশেপাশের অঞ্চলগুলিকে প্রায় ১০ লক্ষ লোকের থাকার জন্য 'শান্তির শহর' হিসাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা চলছে। লালদুহোমা এও বলেন যে, তিনি প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী, কারণ তিনি এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তাঁর ভাবনা, পরিকল্পনা নিয়ে বিশদ আলোচনা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেছিলেন যে তিনি ষোড়শ অর্থ কমিশনের সঙ্গে পরিকল্পনাটি নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি একথা বলার পরেই জল্পনা তুঙ্গে ওঠে। জল্পনা ছড়ায়, তাহলে কি নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রকে আদতে রাজধানী বানিয়ে তুলতেই শহরকে ঢেলে সাজাতে চাইছেন তিনি।  তবে বিষয়টি নিয়ে সে রাজ্যের রাজনিতিতে জোর চর্চা শুরু হওয়ায়, আগে ভাগেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইছে সরকার পক্ষ। বিবৃতি সে কারণেই, মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।