বাধ্যতামূলক নয়, চাইলেই ডিলিট করতে পারেন ব্যবহারকারীরা! তুমুল বিতর্কের মাঝে সঞ্চার সাথী নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত সরকারের

ছবি: সংগৃহীত।

আজকাল ওয়েবডেস্ক: সোমবারেই জানা গিয়েছিল, সাইবার ক্রাইম রুখতে এবার স্মার্টফোনে আসছে নতুন সরকারি অ্যাপ। আনছে কেন্দ্র। ফোনে আগে থেকেই এই অ্যাপ প্রি-ইনস্টলড থাকবে। তারপর থেকেই শুরু হয়েছে শাসক-বিরোধী তরজা। বিরোধীদের দাবী, সঞ্চার সাথী অ্যাপ মূলত গ্রাহকদের, দেশের নাগরিকদের উপর গোপন নজরদারি চালানোর জন্য। তুমুল রাজনৈতিক তরজার মাঝেই মঙ্গলবার সামনে এল বিরাট আপডেট।

সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া স্পষ্ট করেছেন, মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের কাছে এই অ্যাপটি মুছে ফেলার বিকল্প থাকবে। অর্থাৎ এই অ্যাপ ফোনে রাখা বাধ্যতামূলক নয়। 

মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় যোগাযোগমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বলেন, সঞ্চার সাথী অ্যাপটি সম্পূর্ণ ঐচ্ছিক। অ্যাপটি যেকোনও সময় মুছে ফেলা যেতে পারে এবং ব্যবহারকারী যখন এটি সক্রিয় করতে চান তখনই এটি কাজ করবে।

তাঁর বক্তব্য, সরকারের ভূমিকা জননিরাপত্তার জন্য একটি হাতিয়ার হিসেবে অ্যাপটি উপলব্ধ করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তারা ফোনে অ্যাপটি রাখেবন না রাখবেন না, তা নির্ভর করছে ব্যবহারকারীদের উপরেই। 

 

এর আগে, কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধী সঞ্চার সাথীকে স্ন্যুপিং অ্যাপ বলেছেন। তিনি বলেন, 'এটি একটি গুপ্তচরবৃত্তির অ্যাপ। আমি বলতে চাইছি, এটি হাস্যকর। নাগরিকদের গোপনীয়তার অধিকার রয়েছে। তাঁরা পরিবার, বন্ধুবান্ধবদের কাছে তাদের নিজস্ব বার্তা পাঠাবেন, কিন্তু সেসব কিছু সরকার দেখবে কেন। তারা এই দেশকে প্রতিটি আঙ্গিক থেকে একনায়কতন্ত্রে পরিণত করছে।' 

কংগ্রেস সাংসদ রেণুকা চৌধুরী রাজ্যসভায় একটি মুলতবি প্রস্তাবের নোটিস দাখিল করেছেন, যাতে নতুন মোবাইল হ্যান্ডসেটে সঞ্চার সাথী অ্যাপ ইনস্টল করার বিষয়ে সরকারের নির্দেশিকা নিয়ে আলোচনা করার জন্য কার্যবিবরণী স্থগিত করার দাবি জানানো হয়েছে। প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী আবার এই সিদ্ধান্তকে 'বিগবস-এর নজরদারি' চালানোর সঙ্গে তুলনা করেছেন। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কেসি বেনুগোপালও এই সিদ্ধান্তকে অসংবিধানিক বলে মন্তব্য করেছেন। 

 

সোমবারেই জানা যায়, ভারতের টেলিকম মন্ত্রক গোপনে দেশের শীর্ষ স্মার্টফোন নির্মাতাদের নির্দেশ দিয়েছে, আগামী ৯০ দিনের মধ্যে বাজারে আসা সব নতুন ফোনে বাধ্যতামূলকভাবে সরকারি সাইবার সিকিউরিটি অ্যাপ ‘সঞ্চার সাথী’ প্রি-ইনস্টল করতে হবে, এবং এই অ্যাপ ব্যবহারকারীরা মুছে ফেলতে বা নিষ্ক্রিয় করতে পারবেন না। যদিও, মঙ্গলবার অপর আপডেট এল সামনে। 

জানুয়ারিতে চালু হওয়া সঞ্চার সাথী অ্যাপটির মাধ্যমে ইতিমধ্যেই ৭ লক্ষের বেশি হারানো বা চুরি হওয়া ফোন উদ্ধার হয়েছে। শুধু অক্টোবরেই উদ্ধার হয়েছে ৫০ হাজার ফোন।

জানা গিয়েছে, এই গোপন নির্দেশ পাঠানো হয়েছে অ্যাপল, স্যামসাং, ভিভো, ওপ্পো, শাওমি সহ একাধিক সংস্থার কাছে। তবে সবচেয়ে বেশি অস্বস্তিতে পড়তে পারে অ্যাপল, কারণ নীতি অনুযায়ী অ্যাপলের সংস্থা কোনও সরকারি বা তৃতীয় পক্ষের অ্যাপ ফোন বিক্রির আগে প্রি-ইনস্টল করে না।