আজকাল ওয়েবডেস্ক: মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস)-এর প্রধান রাজ ঠাকরে রবিবার ঔরঙ্গজেবের সমাধি নিয়ে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টির চেষ্টার নিন্দা জানিয়ে জনগণকে ইতিহাসকে জাতি ও ধর্মের দৃষ্টিকোণ থেকে না দেখার আহ্বান জানান। মুম্বাইয়ের শিবাজি পার্কে গুঢ়ি পাডওয়া সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বিভ্রান্তিকর ঐতিহাসিক বর্ণনা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ভুল তথ্য থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।
তিনি ঔরঙ্গজেবের সমাধিকে কেন্দ্র করে ছত্রপতি সংভাজীনগর জেলায় উদ্ভূত বিতর্ক এবং নাগপুরে ছড়ানো উত্তেজনা প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা জলাশয় ও গাছপালা নিয়ে চিন্তিত নই, কিন্তু ঔরঙ্গজেবের সমাধি নিয়ে উদ্বিগ্ন হচ্ছি?” তিনি জনগণকে বিভেদের রাজনীতির ফাঁদে না পড়ার পরামর্শ দেন এবং বলেন, “রাজনৈতিক নেতারা মানুষকে ইতিহাসের নামে লড়াইয়ে নামিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করছে।”
ঠাকরে ঔরঙ্গজেবের ইতিহাস স্মরণ করিয়ে বলেন, তিনি ২৭ বছর মহারাষ্ট্রে থেকে মারাঠাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন, কিন্তু শিবাজি মহারাজের আদর্শকে ধ্বংস করতে পারেননি। তিনি আরও জানান, শিবাজি মহারাজের পুত্র সংভাজী মহারাজ একসময় ঔরঙ্গজেবের পুত্রকেও আশ্রয় দিয়েছিলেন। ঔরঙ্গজেবের সমাধি ভাঙার দাবির প্রসঙ্গে ঠাকরে বলেন, সেখানে একটি ফলক বসানো উচিত যাতে লেখা থাকবে, “আমরাই এই সম্রাটকে হত্যা করেছি।”
তিনি আফজল খানের সমাধির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, সেটিও শিবাজি মহারাজের অনুমতি ছাড়া তৈরি হতে পারত না। ইতিহাসকে সঠিকভাবে বোঝার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ইতিহাসকে বিকৃত করে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করা উচিত নয়।
সমসাময়িক রাজনীতির সমালোচনা করে ঠাকরে বলেন, ধর্মনির্ভর রাজনীতি দেশের অগ্রগতির পথে বাধা সৃষ্টি করছে। তিনি তুরস্কের উদাহরণ টেনে বলেন, "ধর্মকে ঘরের চার দেয়ালের মধ্যেই রাখা উচিত। হিন্দুরা কেবল তখনই হিন্দু বলে পরিচিত হয় যখন মুসলিমরা রাস্তায় নামে বা দাঙ্গার সময়, নাহলে তারা নিজেরাই জাতিভেদে বিভক্ত থাকে।”
তিনি বিজেপি সরকারকে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের জন্য অভিযুক্ত করেন এবং 'মুখ্যমন্ত্রী মঝি লাড়কি বহিন' প্রকল্পের অধীনে আর্থিক সহায়তার বৃদ্ধি না হওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এছাড়া, মহারাষ্ট্রে মারাঠি ভাষার বাধ্যতামূলক ব্যবহারের পক্ষে জোর দিয়ে তিনি বলেন, "যারা এখানে থাকবেন কিন্তু ভাষা শেখার চেষ্টা করবেন না, তাদের উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।”
