আজকাল ওয়েবডেস্ক: সরকারি কর্মীদের পেনশন, গ্র্যাচুইটি নিয়ে বড় নির্দেশ দিল ঝাড়খণ্ড হাইকোর্ট। উচ্চ আদালত জানিয়েছে, কোনও রাজ্য সরকাই সরকারি কর্মীর পেনশন, গ্র্যাচুইটি, ছুটি নগদীকরণের টাকার অংশ কেটে নিতে পারে না। এমনকি প্রশাসনিক নির্দেশ থাকলেও তা সম্ভব নয়। মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়া থেকে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি আধিকারিক রাজকুমার গোনেকরের একটি মামলার শুনানি ছিল শুক্রবার। রাজকুমার বর্তমানে প্রয়াত, কিন্তু তাঁর করা মামলাতেই এই নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

এ দিনের আদেশে বিচারপতি বিভু দত্ত গুরু বলেছেন, "একটি স্বীকৃত অবস্থান যে গ্র্যাচুইটি এবং পেনশন অনুদান বা অনুগ্রহ নয়। একজন কর্মচারী তার দীর্ঘ, অবিচ্ছিন্ন, বিশ্বস্ত এবং নির্দোষ পরিষেবার মাধ্যমে এই সুবিধাগুলি অর্জন করেন। সুতরাং এটি একটি কঠোর পরিশ্রমের মূল্য, যা একজন কর্মীর কাছে জমা হয়। এটির প্রকৃতিও সম্পত্তি। তাই সম্পত্তির অধিকার সংবিধানের ৩০০-এ অনুচ্ছেদের অধীনে সুরক্ষিত এবং যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই কেড়ে নেওয়া যাবে না।"

মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়ার বাসিন্দা রাজকুমার গোনেকার এক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি আধিকারিক। ২০২৪ সালের ২০ জুন তিনি প্রয়াত হন। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে তাঁর অবসরের পর, রাজ্য সরকার তাঁর বিরুদ্ধে অর্থ তছরুপের অভিযোগে একটি শোকজ নোটিশ জারি করে। তাঁর পেনশনের অঙ্ক থেকে ৯.২৩ লক্ষ টাকা কেটে নেওয়ার কথা বলে। গোনেকার সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন। কিন্তু সেই সময় ছত্তিশগড় সরকার ওই পরিমাণ টাকা কেটেই নেয়।

এরপর গোনেকার ছত্তিশগড় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। শুনানিতে উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, রাজ্য সরকার তার অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর থেকে ওই টাকা কেটেছে অপরাধের কোনও বিচার বিভাগীয় রায় ছাড়াই। এই পদক্ষেপ ছত্তিশগড় সিভিল সার্ভিস (পেনশন) আইন, ১৯৭৬-কে লঙ্ঘন করে। ওই আইন অনুসারে একমাত্র তখনই কোনও কর্মীর পেনশনের অঙ্ক কেটে নেওয়া যায়, যখন কর্মীটির অপরাধ প্রমাণিত হবে। এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিগত পর্যবেক্ষণের উল্লেখ করে ছত্তিশগড় হাইকোর্ট পেনশনভোগীর পেনশন কেটে নেওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তিসঙ্গত সুযোগ দেওয়ার গুরুত্বের উল্লেখ করে। 

ছত্তিগড় হাইকোর্টের নির্দেশ, অবসরপ্রাপ্ত কর্মী গোনেকর প্রয়াত হওয়ায় তাঁর পরিবারকে ৪৫ দিনের মধ্যে কেটে নেওয়া টাকা ফেরাতে হবে রাজ্য সরকারকে।