আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিভিন্ন ধরনের জালিয়াতি হলেও বর্তমানে সবচেয়ে বেশি মানুষ প্রতারিত হচ্ছেন সাইবার জালিয়াতিতে। গত এক বছরের হিসেব দেখলে বোঝা যায়, এর প্রভাবে কত মানুষ সমস্ত কিছু খোয়াচ্ছেন। দ্য ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো অনুসারে, গত বছরে ১১ লাখেরও বেশি সাইবার জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। বারংবার সতর্ক করা হচ্ছে যাতে নাগরিকেরা সাইবার প্রতারণা থেকে মুক্ত হন। মূলত সাইবার জালিয়াতি চার ধরনের হয়। 

 

 

প্রথমত, গ্রাহক সহায়তা কেলেঙ্কারি। গ্রাহকেরা বিভিন্ন ভিডিও শেয়ারিং সাইটগুলিতে গেলে সেখানে প্রতারকেরা স্ক্রিন শেয়ারিং সফটওয়্যার ডাউনলোডের অপশনে ক্লিক করতে প্ররোচনা দেয়। অনেকসময় না বুঝেই অনেক গ্রাহক সেটা করেও ফেলেন। ব্যাস সফটওয়ার ডাউনলোড হয়ে গেলেই তার মাধ্যমে ঢুকে যায় ভাইরাস। হাইজ্যাকিং হয়ে যায় মোবাইল। 

 

 

দ্বিতীয়ত, ডিজিটাল গ্রেপ্তার। এই ধরনের প্রতারণার শিকার হয়ে টাকা-পয়সা খোয়াছেন বহু মানুষ। এক্ষেত্রে প্রতারকেরা পুলিশ/ইডি/কাস্টমস কর্মকর্তা সাজে। এরপর অভিযুক্তকে ভিডিও কল দিয়ে বলা হয় তাঁর কোনও আইডি দিয়ে অপরাধ সংঘটিত করা হয়েছে। বলা হয়, এই অপরাধের জন্য তাকে ডিজিটাল গ্রেফতার করা হচ্ছে। সেখান থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য টাকা দাবি করতে থাকে তারা। এরপর ভয় পেয়ে অনলাইনে পেমেন্ট করে দিলে বা সেই সংক্রান্ত সমস্ত ডিটেলস দিয়ে দেওয়া হলে আর খুঁজে পাওয়া যায় না প্রতারকদের। নেটাগরিকরা এইভাবে সর্বস্রান্ত হচ্ছেন অনেক ক্ষেত্রে। 

 

 

তৃতীয়ত, আধার কেলেঙ্কারি। এই কেলেঙ্কারি হল এক ধরনের আর্থিক জালিয়াতি। এর মাধ্যমে অপরাধীরা গ্রাহকের সম্মতি ছাড়াই ব্যাংক একাউন্ট থেকে আধার বায়োমেট্রিকের ডেটা ব্যবহার করে টাকা তোলে। 

 

 

চতুর্থত, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে জালিয়াতি। প্রতারকরা সোশ্যাল বিভিন্ন মেসেজিং চ্যানেলে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট তৈরি করে। ইন্টারনেটে অন্যদের ছবি ব্যবহার করে অ্যাকাউন্ট বানায়। এরপর অনলাইন চ্যাটের মাধ্যমে আর্থিক কষ্টের কথা বলে কিছু টাকা সাহায্যের জন্য বলে। পরিচিত লোক হওয়ায় অনেকেই সেই টাকা দিয়ে দেয়। পরে জানা যায় অ্যাকাউন্টটি ভুয়ো।   

 

 

কীভাবে বাঁচবেন সাইবার প্রতারণা থেকে? 

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সকলের প্রথমে, আপনার অজান্তে যেন লেনদেন না করতে পারে কেউ সেই ব্যবস্থা নিন। সেটা করতে গেলে আধার বায়োমেট্রিক সকলের প্রথমে লক করতে হবে। UIDAI ওয়েবসাইটের myaadhaar বিভাগে যান এবং সেখান থেকে বায়োমেট্রিক্স লক/আনলকের অপশন বাছুন।  

দুই, অপরিচিত কোনও ব্যক্তির থেকে কোনও পরিষেবা নেওয়ার সময় সতর্ক থাকুন। বিশেষ করে যদি তারা কোনও অ্যাপ ডাউনলোড করতে বা কোনও সফ্টওয়্যার ইনস্টল করতে বলে। যে কোনও ডিভাইসে অ্যাক্সেস দেওয়ার আগে একজন বিশ্বস্ত বিশেষজ্ঞের সঙ্গে আলোচনা করে নিন। 

তিন, QR কোড স্ক্যান করে যখন টাকা পাঠাবেন তখন খেয়াল রাখবেন। 

চার, যদি কেউ দাবি করে ভুল করে অতিরিক্ত অর্থ পাঠিয়েছে তাহলে একজন অভিজ্ঞের সাহায্য নিন। 

পাঁচ, কোনও লিংক বা এসএমএস এলে তার রিপ্লাই দেওয়ার আগে ভালো করে বিষয়টি জেনে নিন। 

 

 

যদি বোঝেন প্রতারিত হচ্ছেন, বা কোনও বিষয় নিয়ে সন্দেহ জাগে, তাহলে অতি অবশ্যই সাইবার ক্রাইম নম্বর ১৯৩০ তে কল করুন। অভিযোগ দায়ের করুন।