‘বনের রাজা’ সিংহ। তার গর্জনে কেঁপে ওঠে জঙ্গল, তার দাপটে নত হয় অন্য প্রাণীরা। কিন্তু সেই রাজার উপরেও যে রয়েছে এক রানির শাসন, সে খবর রাখেন ক'জন? বন্যপ্রাণীর জগতে এমন অনেক ঘটনাই ঘটে, যা মানুষের কল্পনাকেও হার মানায়।
2
8
সম্প্রতি সিংহদের প্রজনন সংক্রান্ত কিছু তথ্য সামনে এনেছেন গবেষকরা, যা থেকে স্পষ্ট, সিংহের সংসারে শেষ কথা বলে সিংহীই। বিশেষত, বংশরক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তার আধিপত্য প্রশ্নাতীত।
3
8
বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে, পশুদের জগতে মিলন নিছক প্রেম বা রোম্যান্সের বিষয় নয়, এটি সরাসরি অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ের সঙ্গে জড়িত। সিংহের ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়া আরও বিস্ময়কর।
4
8
বংশের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে এবং সফল গর্ভধারণ নিশ্চিত করতে একটি সিংহী তার ঋতুকালে দিনে প্রায় ৪০ বার পর্যন্ত সঙ্গমে লিপ্ত হতে পারে। এই নিরন্তর মিলনই তাদের বংশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার একমাত্র চাবিকাঠি।
5
8
গবেষকরা দীর্ঘদিন ধরে আফ্রিকার সাভানায় সিংহদের জীবনযাত্রা পর্যবেক্ষণ করে দেখেছেন, প্রজননের সময় একটি সিংহ এবং সিংহী কয়েক দিনের জন্য দল থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই সময়ে প্রতি ১৫-২০ মিনিট অন্তর তারা মিলিত হয়।
6
8
এই ‘ম্যারাথন সঙ্গম’ চলতে পারে টানা বেশ কয়েক দিন ধরে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই গোটা প্রক্রিয়ার চালকের আসনে থাকে সিংহীই।
7
8
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, বারংবার মিলনের ফলে পুরুষ সিংহটি যদি ক্লান্ত হয়ে পড়ে বা তার মধ্যে কোনও রকম অনীহা দেখা দেয়, তবে সিংহীই তাকে পুনরায় উত্তেজিত করে তোলে। কখনও মৃদু ধাক্কা দিয়ে, কখনও থাবা দিয়ে আলতো আঘাত করে, আবার কখনও বা তীব্র গর্জনের মাধ্যমে সে সঙ্গীকে নিজের কর্তব্য মনে করিয়ে দেয়।
8
8
সিংহীর এই ‘শাসন’-এর সামনে বনের রাজার কার্যত কিছুই করার থাকে না। তাকে রানির নির্দেশ মেনে চলতেই হয়। প্রকৃতির এই অদ্ভুত নিয়মেই যেন তেন প্রকারেণ প্রজনন সফল হয়।