নিজস্ব সংবাদদাতা: বছর শেষে চলচ্চিত্র জগতের এক মহিরূহের পতন। প্রয়াত কিংবদন্তি পরিচালক শ্যাম বেনেগাল। সোমবার ৯০ বছর বয়সে থামল পরিচালকের জীবন। বেশ অনেকদিন কিডনি সহ বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। এদিন সন্ধ্যা ৬টা ৩৯ মিনিটে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন সত্যজিৎপুত্র সন্দীপ রায়। আজকাল ডট ইন-কে তিনি বলেন, “ওঁর সঙ্গে বহুদিনের সম্পর্ক। শরীর খারাপের খবর পেয়েছিলাম। আর কি বলব...।”

১৯৭৩ সালে প্রথম ছবি ‘অঙ্কুর’ তৈরি করেই অসামান্য প্রতিভায় সকলকে চমকে দেন শ্যাম বেনেগাল। সেই ছবি দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেন সত্যজিৎ রায়। এরপর থেকেই রায় পরিবরের সঙ্গে হৃদ্যতার সম্পর্ক তৈরি হয় পরিচালকের। সন্দীপ রায়ের কথায়, “সেই ‘অঙ্কুর’র সময় থেকে ওঁর সঙ্গে সম্পর্ক। বাবা ছবিটা দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেন। উনি বাবাকে দেখান। তখন থেকেই কাছের লোক হয়ে যান। যখনই বাবা বম্বে যেতেন, দেখা করতে আসতেন। কলকাতায় এলে এবাড়ি অবশ্যই আসতেন।”

অনামি, অপরিচিত অথচ প্রতিভাধর অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সঙ্গে কাজ করেছেন শ্যাম বেগেগাল। তাঁর হাত ধরেই শাবানা আজমি, অনন্ত নাগ, নাসিরুদ্দিন শাহ, ওম পুরি, স্মিতা পাটিল, শাবানা আজমি, কুলভূষণ খারবান্দি ও অমরিশ পুরীর মতো অভিনেতাদের সঙ্গে পরিচয় হয় দর্শকের। সন্দীপ রায়ের স্মৃতিচারণাতেও উঠে আসে এই প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, “উনি যেমন অসম্ভব ভাল ছবি করেছেন, তেমনই অসম্ভব ভাল অভিনেতা-অভিনেত্রীদের দিয়েছিলেন। যাদের সঙ্গে কাজ করে বাবাও খুব তৃপ্তি পেয়েছিলেন।”   

বিস্তৃত সিনেমা যাপনে শ্যাম বেনেগালের কাছে এসে ধরা দিয়েছেন সত্যজিৎ রায়ও। সত্যজিতকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্র করেছিলেন তিনি। সন্দীর রায়ের কথায়, “বাবার উপর খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা তথ্যচিত্র করেছিলেন। সেইজন্য যাতায়াত খুব বেশি রকমের ছিল। বাবা চলে যাওয়ার পর যখন রায় সোস্যাইটি গঠন করি তখন উনি একথায় আসতে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। রায় মেমোরিয়ালে বক্তৃতা  দিয়েছিলেন। অসম্ভব ভাল বক্তা ছিলেন। ভারী সুন্দর কথা বলেছিলেন।” 

গত ১৪ ডিসেম্বরে ৯০ বছর বয়সে পা রাখেন বর্ষীয়ান পরিচালক। ৯০ বছর বয়সে পদার্পণ করেও তিনি নিজের কাজ নিয়ে এখনও ব্যস্ত ছিলেন। গত বছর ‘মুজিব: দ্যা মেকিং অফ নেশন’ নামক ছবির পরিচালনা করেছিলেন তিনি যে সিনেমায় ভারত এবং বাংলাদেশের একাধিক নামিদামি অভিনেতারা অভিনয় করেছিলেন। হাতে ছিল বেশ কয়েকটি কাজ। কিন্তু তার মাঝেই না ফেরার দেশে শ্যাম বেনেগাল।