ভারতীয় সিনেমার দুই আইকন নাসিরুউদ্দিন শাহ ও শাবানা আজমি। প্রায় ১৮ বছর পর ফের একসঙ্গে পর্দায় ফিরছেন তাঁরা। শেষবার তাঁদের দেখা গিয়েছিল ২০০৭ সালে, রোহিত রায়ের পরিচালিত দশ কাহানিয়া ছবির রাইস প্লেট গল্পের সেগমেন্টে। তার আগে সাত ও আটের দশকে তাঁরা ছিলেন ভারতীয় অন্যধারার ছবির মুখ্য মুখ. একসঙ্গে করেছেন একাধিক কালজয়ী সিনেমা। তার মধ্যে রয়েছে ‘নিশান্ত’, ‘মন্ডি’, ‘স্পর্শ’, ‘খন্ডহর’, ‘পার’, ‘খামোশ’, ‘পেস্টনজি’, ‘লিবাস’ - প্রতিটি ছবিই আজ ঠাঁই পেয়েছে ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে।
এবার আবার সেই জুটি ফিরছে শে়খর কাপুরের হাত ধরে. ১৯৮৩ সালের কাল্ট ক্লাসিক ‘মাসুম’-এর সিক্যুয়েল ‘মাসুম: আ নিউ জেনারেশন’-এ। শাবানা নিজেই জানিয়েছেন, “এক সময় আমরা একইসঙ্গে দশটা সিনেমা করতাম। আমি নাসিরের সঙ্গে এতটা সময় কাটাতাম, যতটা নিজের স্বামী জাভেদ আখতারের সঙ্গেও কাটাতাম না!”
শাবানা আরও জানিয়েছেন, সম্প্রতি নাসিরুদ্দিন শাহ অভিনীত ‘গুস্তাখ ইশক’–এ (প্রযোজক মণীশ মলহোত্রা, পরিচালক বিজু শাহ) তাঁর কাজ দেখে তিনি অভিভূত। মণীশ মলহোত্রাকে নাসিরের প্রশংসা জানানো বার্তা নিয়েও তিনি মজা করে বলেন, “পঞ্চাশ বছরের কেরিয়ারে ও কাউকেই এমন প্রশংসা করেনি। বলেছে, ‘তুমি অন্যতম সেরা প্রযোজক যার সঙ্গে আমি কাজ করেছি।’ এটা সত্যিই বিরল।”
এদিকে, অভিনেতা বিজয় বর্মাও জানালেন, তাঁর স্বপ্নপূরণ হয়েছে নাসিরুদ্দিন শাহের সঙ্গে ‘গুস্তাখ ইশক’–এ কাজ করে। “আমি ছোটবেলা থেকে ওঁকে হিরো হিসেবে দেখি। নাসির স্যারের সঙ্গে অভিনয় করা মানেই সিনেমার পাঠ। এক সময় এফটিআইআই–এ (ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া) তিনি গেস্ট ফ্যাকাল্টি ছিলেন। তখন তাঁর ক্লাসে ঢোকার সুযোগ পাইনি, কারণ তিনি ঢুকতে দেননি !তবু ওঁর ক্লাসের বাইরে দাঁড়িয়ে পুরো দিন অপেক্ষা করেছিলাম,” বলেন বিজয়। পরের দিন নাসির নিজে তাঁদের পরের দিন ক্লাসে ডাকেন। “ওঁর সঙ্গে দু’মাস কাজ করার অভিজ্ঞতা আমার জীবন পালটে দিয়েছে। তবে হ্যাঁ, উনি অত্যন্ত প্রখর বুদ্ধিসম্পন্ন একজন মানুষ। খুঁটিয়ে দেখেন সবকিছু। ওঁর সঙ্গে কোনও চালাকি করতে গিয়েছেন কী মরেছেন! ঐসব চালাকি-টালাকি ওঁর সামনে করলেই বিপদ। বিরাট বিপদ! ” যোগ করেন বিজয়।
সাত ও আটের দশকের অন্যধারার ছবির জুটি এখন ফের ফিরছেন নতুন প্রজন্মের দর্শকদের সামনে, যেখানে গল্পের ভিতরেও থাকবে সময়ের পরিবর্তনের প্রতিফলন। এক কথায়, মাসুম: আ নিউ জেনারেশন হতে চলেছে শুধুই রিইউনিয়ন নয়, যেখানে দুই কিংবদন্তি ফের ছুঁয়ে দেবেন আবেগ ও বাস্তবের সীমারেখা।
