বলি অভিনেতা আমির খানের সঙ্গে যতটা মধুর তাঁর দুই বোনের সম্পর্ক, ঠিক ততটাই তিক্ত ভাই ফয়সল খানের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক। এক সময় পারিবারিক সম্পত্তির ভাগাভাগির জেরে বিতণ্ডা তৈরি হয়েছিল তাঁদের মধ্যে। বলিউডের অন্দরের খবর, শুধুমাত্র আমির নন, পরিবারের কারওর সঙ্গেই নাকি সদ্ভাব নেই ফয়সলের। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে আমিরের বিরুদ্ধে গুরুতর এক অভিযোগ এনেছিলেন ফয়সল।
ফয়জল ১৯৮৮ সালে 'কায়ামত সে কায়ামত তক' ছবিতে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করে বলিউডে ডেবিউ করেছিলেন। তিনি তাঁর বাবার ১৯৯০ সালের ছবি 'তুম মেরে হো'-তে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছিলেন। তিনি 'মদহোশ' (১৯৯৪) এবং 'দস্তান-ই-ইশক' (২০১৫) এর মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন। ২০২১ সালে তিনি পরিচালক হিসেবে অভিষেক করেছিলেন এবং 'ফ্যাক্টরি' ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। ২০২২ সালে ফয়সল কন্নড় ছবি 'অপ্পান্ডা'য় অভিনয় করেন। তবে কয়েক বছর বিনোদন জগৎ থেকে দূরে সরে রয়েছেন তিনি।
তবে আবারও নাকি বিনোদন জগতে ফিরতে চলেছেন তিনি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ফয়জল জানান, তিনি লকডাউনের সময় বেশকিছু চিত্রনাট্য লিখেছিলেন। সেগুলো এবার পরিচালনা করার সময় এসেছে। তাঁর আগামী ছবিটি হতে চলেছে 'মাল্টি স্টারার', অর্থাৎ এই ছবিতে বহু তারকার সমাগম হতে দেখবেন দর্শক। ইতিমধ্যেই নাকি প্রায় ১৪ জন তারকার সঙ্গে তাঁর কথাবার্তা হয়েছে, এমনকী তাঁরা ইচ্ছুক এই ছবিতে কাজের জন্য। তবে কারা থাকবেন ফয়সলের ছবিতে তা এখনও খোলসা করেননি তিনি। তবে আমির যে মোটেই থাকছেন না তা স্পষ্ট করেছেন ফয়সল। কিন্তু তিনি নিজে ওই ছবিতে ক্যামিও করতে পারেন বলেও জানিয়েছেন।

কিছুদিন আগে আমিরের বিরুদ্ধে আরও এক বিস্ফোরক অভিযোগ করেছিলেন তিনি। ফয়সালের বক্তব্য অনুযায়ী, রিনা দত্তের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক থাকাকালীনই আমির এক সাংবাদিক জেসিকার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। শুধু তাই নয়, তাঁদের নাকি এক অবৈধ সন্তানও রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। যদিও এতদিন এ বিষয়ে আমির বা জেসিকা কেউই প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি।
ফয়সল আরও জানিয়েছেন, এক সময় তাঁর পরিবার তাঁকে জোর করে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। এমনকী, পাত্রী হিসেবে ফয়সলের পরিবার তাঁর মাসিকে বেছে নিয়েছিল। মায়ের বড়বোনকে বিয়ে করতে কিছুতেই রাজি হননি ফয়সল। এর ফলে নাকি পরিবারের সঙ্গে তাঁর বিরোধ আরও জোরালো হয়।
কয়েকদিন আগে ফয়জল খান দাবি করেছেন যে, কয়েক বছর আগে আমির খান তাঁকে মুম্বইয়ে তাঁর বাড়িতে এক বছরের বেশি সময় ধরে বন্দি করে রেখেছিলেন। মুম্বই সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফয়জল জানান জানিয়েছেন যে তাঁর পরিবার বলেছিল যে তিনি স্কিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত, তিনি এর ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, "ওঁরা আমায় বুঝিয়েছিল আমি একজন মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ এবং সমাজের জন্য ক্ষতিকারক।"
সেই এক বছর ধরে তাঁর সঙ্গে কী কী ঘটেছিল, তা ভাগ করে নেন ফয়জল খান। ফয়জল খান দাবি করেন, ভাই আমির খান তাঁকে এক বছর ধরে বন্দি করে রেখেছিলেন। তিনি বলেছেন যে সেই সময় তিনি অনুভব করেছিলেন যে তিনি একটা ফাঁদে আটকে আছেন। তিনি বলেন, "ওঁরা বলছিল আমার স্কিজোফ্রেনিয়া হয়েছে এবং আমি একজন পাগল মানুষ। আমি সমাজের জন্য ক্ষতিকারক। এই সব কথা বলা হচ্ছিল, আমি ভাবছিলাম যে, আমি এই চক্রব্যূহ থেকে কীভাবে বের হব? বাড়িটাই চক্রব্যূহ হয়ে গিয়েছিল আমার জন্য। আমি তাতে আটকে গিয়েছিলাম কারণ সারা পরিবার আমার বিরুদ্ধে ছিল। আমাকে পাগল প্রমাণ করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিল।"
তাঁর কথায়, "আমার ঘরের বাইরে বডিগার্ড ছিল। জোর করে নানা রকম ওষুধ দেওয়া হচ্ছিল।" এরপর তিনি বলেন যে, "কপিল শর্মার শো-এ আমির গোটা পরিবার নিয়ে গিয়েছিল। আমায় নিয়ে গেল না কেন? হয়তো ওঁরা ভেবেছিলেন আমায় লোক সমাজে নিয়ে গেলে কোনও বিপদ হবে। হয়তো এমন কিছু কথা বলে ফেলব, যা ওঁরা চায় না আমার মুখ থেকে বেরিয়ে যাক। এইসবের জন্যই আমি অনেককিছু থেকে বঞ্চিত হই।"
