অতীশ সেন, ডুয়ার্স: প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি সাংসদ জন বার্লার বানানো বানারহাটের বহুতল দলীয় কার্যালয়ের দরজা বিজেপি কর্মীদের জন্য লোকসভা ভোটের আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এখন এই বহুতলেই ছেলের নামে মার্কেট কমপ্লেক্স এর হোর্ডিং, ফ্লেক্স ঝোলালেন বার্লা। 'জর্ডন কমপ্লেক্স' নামের এই বহুতলটি ভাড়া দেওয়া হবে বলে বিজ্ঞাপনে যে যোগাযোগ নম্বরটি দেওয়া রয়েছে তা প্রাক্তন বিজেপি সাংসদের ছেলের।
লোকসভা ভোটে আলিপুরদুয়ার আসন থেকে টিকিট না পাওয়ার পর প্রকাশ্যেই ওই আসনের প্রার্থী মনোজ টিগ্গা বিরুদ্ধে বার্লা মুখ খুলেছিলেন। ভোটের পর দলীয় কোনও কর্মসূচীতেই তাঁকে দেখা যায়নি। বিজেপির চা শ্রমিক সংগঠন 'ভারতীয় টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন' থেকেও তিনি বহিস্কৃত। এই অবস্থায় বিতর্কিত ভবনে জন বার্লার ছেলে জর্ডন-এর নামে কমপ্লেক্স এর হোর্ডিং লাগতেই আবারো নতুন করে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
আলিপুরদুয়ার থেকে সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পরই বানারহাট চামুর্চি মোড় সংলগ্ন এলাকায় জন বার্লা একটি বহুতল ভবন নির্মান শুরু করেন। অভিযোগ, বানারহাট চা বাগান ও পূর্ত দপ্তরের জমি দখল করেই এই বহুতলটি নির্মাণ করা হয়। শপিং কমপ্লেক্সের আদলে বহুতল নির্মাণ শুরু হতেই জোর বিতর্কও শুরু হয়েছিল। বিল্ডিংটির নাম 'বার্লা কমপ্লেক্স' হিসেবে প্রচারিত হতে থাকে। বিতর্কে জল ঢালতে জন বার্লা ঘোষণা করেন তিনি বিজেপির দলীয় কার্যালয় তৈরি করছেন। ২০২১ সালের ১৩ই জুলাই তাঁর অনুপস্থিতিতে তাঁর ভাই ভিক্টর বার্লা ও স্থানীয় চা শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্ব এই বিতর্কিত বহুতলে বিজেপির দলীয় কার্যালয় শুরু করে।
বানারহাট ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সাগর গুরুং লোকসভা ভোটের আগেই অভিযোগ জানিয়েছিলেন, ওই বহুতলটি কখনওই বিজেপির পার্টি অফিস ছিল না। যখন বার্লা আর সাংসদ কিংবা মন্ত্রী থাকবেন না, তখন তিনি অবৈধ ভাবে বানানো ওই বহুতলে মার্কেট কমপ্লেক্স খুলে ব্যবসা করবেন। এই ফ্লেক্স লাগানোর পর তিনি একই কথা জানালেন। বলেন, 'বর্তমানে প্রাক্তন হয়ে যাওয়া সাংসদ যা করতে চলেছেন, সে সম্পর্কে এলাকার সকলেই বহু আগে থেকে অবগত। জন বার্লা পার্টি অফিস বানাবেন বলে ওটি নির্মাণ করেননি। তিনি তাঁর ব্যক্তিগত মার্কেট কমপ্লেক্সের তৈরি করেতে চেয়েছিলেন। মাঝে কিছুদিন লুকোচুরি করলেও এখন তা প্রকাশ পেয়েই গেল।'
জন বার্লা বলেন, 'নিজের এত বড় প্রপার্টির সমস্ত দলীয় কার্যালয়ের জন্য কেউ কখন ও দেয় নাকি? তিনতলা বিল্ডিংটির ১৮ দোকান ভাড়া দেওয়া হবে। একটি অংশে দলীয় কার্যালয়ও থাকবে।' সঙ্গেই জানান, আগামীতে একটি নতুন চা শ্রমিক সংগঠন তৈরির কাজ তিনি করছেন। রেজিস্ট্রেশন এর কাজ চলছে, দ্রুত তা আত্মপ্রকাশ করবে।
