আজকাল ওয়েবডেস্ক: শুক্রবার ভারতের ৭৯তম স্বাধীনতা দিবসে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম কাণ্ডারি ভগৎ সিংয়ের বাড়িতে গিয়ে শ্রদ্ধা জানাল এসএফআই। ছিলেন এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য সহ আরও অনেকে। এদিন শহিদ-এ-আজম ভগৎ সিংয়ের পৈতৃক বাড়ি পাঞ্জাবের খাটকার কালান, নওয়াশহরে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তাঁরা। সৃজনের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন সিপিআই(এম)-এর পাঞ্জাব রাজ্য সম্পাদক এবং ডিওয়াইএফআই কর্মীরাও। ভগৎ সিং শুধুমাত্র স্বাধীনতা সংগ্রামী নন, তিনি ছিলেন একজন সমাজতন্ত্রী বিপ্লবী।

ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তি ছিনিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি তাঁর স্বপ্ন ছিল ভারতে শ্রমিক-কৃষকের সরকার প্রতিষ্ঠা। মাত্র ২৩ বছর বয়সে শহিদ হলেও তিনি আজও অসংখ্য প্রজন্মের অনুপ্রেরণা হয়ে রয়েছেন। এসএফআই জানিয়েছে, তারা নিজেদের ভগৎ সিংয়ের মতাদর্শের উত্তরাধিকারী হিসেবে মনে করে। তাদের মতে, যে আরএসএস-বিজেপি স্বাধীনতা সংগ্রামে বিশ্বাসঘাতকতার ভূমিকা নিয়েছিল, বর্তমান ভারতে তাদের পরাজিত করা অপরিহার্য। দলের তরফে জানানো হয়েছে, তারা সারা বছর ধরেই দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস ও সংগ্রামীদের স্মরণ করে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে থাকে।
এদিনও সারা দেশে অগণিত ‘Freedom Rally’ আয়োজন করেছে এসএফআই। আগামী দিনে এই কর্মসূচি আরও জোরদার করার কথাও জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা। ভগৎ সিংহের জন্ম একটি শিখ পরিবারে। তাঁর পরিবার আগে থেকেই ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিল। কৈশোরেই ভগৎ ইউরোপীয় বিপ্লবী আন্দোলনের ইতিহাস সম্পর্কে পড়াশোনা করেন এবং নৈরাজ্যবাদ ও কমিউনিজমের প্রতি আকৃষ্ট হন। এরপর তিনি একাধিক বিপ্লবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন। হিন্দুস্তান রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে মেধা, জ্ঞান ও নেতৃত্বদানের ক্ষমতায় তিনি অচিরেই এই সংগঠনের নেতায় পরিণত হন।

সংগঠনটিতে ব্যাপক পরিবর্তন এনে এটিকে হিন্দুস্তান সোশ্যালিস্ট রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশনে রূপান্তরিত করেন। তাকে এবং তার সংগঠনকে নৈরাজ্যবাদী আখ্যা দেওয়া হলে তিনি ক্ষুরধার যুক্তিতে তা খণ্ডন করেন। জেলে ভারতীয় ও ব্রিটিশ বন্দীদের সমানাধিকারের দাবিতে ৬৪ দিন টানা অনশন চালিয়ে তিনি সমর্থন আদায় করেন। এটিই ছিল দীর্ঘতম অনশন। প্রবীণ স্বাধীনতা সংগ্রামী লালা লাজপত রাইয়ের হত্যার প্রতিশোধে এক ব্রিটিশ পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট স্যান্ডার্সকে গুলি করে হত্যা করেন ভগৎ। বিচারে তাঁর ফাঁসি হয়। তার দৃষ্টান্ত শুধুমাত্র ভারতীয় যুবসমাজকে স্বাধীনতা সংগ্রামে উদ্বুদ্ধই করেনি, ভারতে সমাজতন্ত্রের উত্থানেও প্রভূত সহায়তা করেছিল।
