শ্যামশ্রী সাহা, উপালি মুখোপাধ্যায় | ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৪ : ৩৮

‘অযোগ্য’ শব্দের ‘অ’ অক্ষরটির উপরে আঙুলের ছাপ। যেন অক্ষরটি মুছে দেওয়ার প্রবল চেষ্টা। আগামী ছবিতে সম্পর্কে অযোগ্য থেকে যোগ্য হয়ে ওঠার গল্প বলবেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়? বুধবার সুরিন্দর ফিল্মসের আগামী ছবি ‘অযোগ্য’র লোগো উন্মোচন করে আজকাল ডট ইনকে তেমনই আভাস দিলেন পরিচালক। এই ছবি বাংলা বিনোদন দুনিয়ায় বিশেষ জায়গা জুড়ে থাকতে চলেছে। কারণ, ছবিটি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়-ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর ৫০তম ছবি। পরিচালকের দাবি, ‘‘যতদূর জানি, উত্তমকুমার-সুচিত্রা সেনও একসঙ্গে ৫০টি ছবি করেননি। বুম্বাদা-ঋতু কিন্তু সেই কাজ করে দেখাল।’’

কী বলছেন প্রসেনজিৎ? তাঁর কথায়, ‘‘প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণার ৫০তম ছবির জন্য চওড়া কাঁধের প্রয়োজন ছিল। সেটা একমাত্র কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের রয়েছে। পরিচালকের সঙ্গে এই নিয়ে সাতটি কাজ। সুরিন্দর ফিল্মসেরও একাধিক ছবিতে আমি। তালিকায় ‘কিশোরকুমার জুনিয়র’, ‘দৃষ্টিকোণ’, ‘জ্যেষ্ঠপুত্র’, ‘কাবেরী অন্তর্ধান’। দর্শকেরা না থাকলে আমরা এই জায়গায় পৌঁছতে পারতাম না। এই ছবির ভাগ্যও তাই দর্শকরাই ঠিক করবে।’’

৫০টি ছবির উদযাপন বিশেষ হবে, জানা কথা। সেই মতো লোগো উদ্বোধনে উপস্থিত স্বয়ং ইন্ডাস্ট্রি, নায়িকা, পরিচালক এবং বন্ধু প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতা। এসভিএভ কর্ণধার এদিন এসেছিলেন নিছক বন্ধুত্বের খাতিরে। কথায় কথায় বলেন, ‘‘দেখতে দেখতে ১৫০টিরও বেশি ছবি করে ফেললাম। কিন্তু একটা সময় ভেবেছিলাম, আর ছবি করব না। সেই সময় বুম্বাদা-ঋতু ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’ করলেন। ওঁদের ব্লকবাস্টার ছবি আমায় বিনোদন দুনিয়ায় পাকা জায়গা করে দিল। ওঁরাই পারেন এতগুলো বছর ইন্ডাস্ট্রিতে সসম্মানে টিকে থাকতে। জুটি বেঁধে দর্শকদের ৫০টি ছবি উপহার দিতে।’’ 



২০১৮-য় প্রযোজক-পরিচালক-অভিনেতা জুটি উপহার দিয়েছিলেন ‘দৃষ্টিকোণ’। কৌশিকের কথায়, ‘‘তখন থেকেই মাথায় ছিল, জুটির ৫০তম ছবি বিশেষ ছবি হবে। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। প্রযোজক নিসপাল সিং রানে সবুজ সংকেত দিতেই ‘অযোগ্য’র জন্য কোমর বাঁধি। এই ছবিও ভালবাসার গল্প শোনাবে। ইতিবাচক না নেতিবাচক? পরকীয়া না বিচ্ছিন্ন-ভগ্ন প্রেম? এক্ষুণি সেটা নিয়ে বিশ্লেষণে বসবেন না। সঠিক সময়ে ছবির গল্প, চরিত্র, অভিনেতা এবং মুক্তির তারিখ আমরা জানাব।’’ এও জানান, ১৪ বছর ব্যবধানের পরে এই প্রজন্মের দর্শকদের কাছে নিজেদের প্রমাণ করা সহজ নয়। বিশেষ করে প্রত্যাবর্তনের পরেই পরপর দুটো হিট ছবি তাঁরা করেছেন, ‘প্রাক্তন’, ‘দৃষ্টিকোণ’। সেটাই করেছে এই জুটি। ছবির শুটিং হয়েছে পুরীতে।

৫০টি ছবিতে একসঙ্গে পথচলা। আগের অভিনয় আর এখনকার অভিনয়ের ধারা কতটা পরিবর্তন হয়েছে? আজকাল ডট ইন প্রশ্ন রাখতেই ঋতুপর্ণার জবাব, ‘‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেকটাই পরিবর্তন হয়। মানসিকতার, পরিণতমনস্কতার। তবে আমরা যখনই কোনও স্ক্রিপ্ট শুনি, স্ক্রিপ্টের মধ্যে থাকি। তাতেই নিবেদিতপ্রাণ হওয়ার চেষ্টা করি। তার থেকেই স্ক্রিনে সেই এনার্জিটা তৈরি হয়। এবং আমরাও চেষ্টা করি, দর্শকদের যাতে আমাদের সেরাটাই উপহার দিতে পারি।’’ প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণার ছবি মানেই অন্তমিলে মধুরেণ সমাপয়েৎ। গত দুটো ছবিতে বিরহের সুর। আর কি তাঁরা উত্তম-সুচিত্রার মতো ছবির শেষে আলিঙ্গনে জুড়ে যাবেন না? ‘‘ছবির গল্প বলা যাবে না। তাই এই ছবির শেষে বিরহ না মিলন কিছুই বলতে পারব না। এবং আগামীতেও পুরনো ছবির ছায়া পড়বে কিনা, এক্ষুণি সেটাও বলা সম্ভব নয়।’’ একটু থেমে ছোট্ট হেঁয়ালি, ‘‘প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণার রসায়নের এই রহস্যটুকু না হয়না হয় থেকে যাক।’’

ছবি: বিপ্লব মৈত্র