বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার ফিউচার রেট কিছুটা কমলেও, স্পট মার্কেটে সোনার দাম বেড়েছে। সামগ্রিকভাবে, মার্কিন ডলারের দুর্বলতার কারণে সোনার দামে প্রায় ২ শতাংশের লাফ দেখা গেছে।
2
10
বৃহস্পতিবার স্পট গোল্ডের দাম বেড়ে প্রতি আউন্সে ৩,৯৮০ ডলারে পৌঁছেছে, যা ১.৩ শতাংশ বৃদ্ধি নির্দেশ করে। অপরদিকে, ডিসেম্বর ডেলিভারির জন্য মার্কিন গোল্ড ফিউচার ০.২ শতাংশ কমে প্রতি আউন্সে ৩,৯৯১.৫০ ডলারে নেমে এসেছে।
3
10
এই ওঠানামার মূল কারণ হিসেবে বাজার বিশ্লেষকরা উল্লেখ করছেন মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সাম্প্রতিক সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্তকে। বুধবার ফেড ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে বেঞ্চমার্ক সুদের হারকে ৩.৭৫% থেকে ৪.০০% সীমার মধ্যে নামিয়ে এনেছে। এটি চলতি বছরে ফেডের দ্বিতীয়বারের মতো সুদের হার কমানোর পদক্ষেপ।
4
10
সোনার দাম বর্তমানে ঊর্ধ্বমুখী। কারণ বিনিয়োগকারীরা ডোনাল্ড ট্রাম্প ও শি জিনপিংয়ের বৈঠকের ফলাফল এবং ফেডের সুদ কমানোর সিদ্ধান্তের প্রভাব বিশ্লেষণ করছেন। মুদ্রা নীতির ক্ষেত্রে ট্রেডাররা এখনো ডিসেম্বর মাসে আরেকটি সুদ কমার ৭০ শতাংশ সম্ভাবনা ধরে বাজারে অবস্থান নিচ্ছেন, যদিও ফেড চেয়ার জেরোম পাওয়েল বাজারের এই প্রত্যাশাকে ঠান্ডা করার চেষ্টা করেছেন।
5
10
জেরোম পাওয়েল বৃহস্পতিবার জানান, ফেড কর্মকর্তারা এখনো পরবর্তী দিকনির্দেশনা নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেননি। তিনি সতর্ক করে বলেন, বাজারকে ধরে নেওয়া উচিত নয় যে ডিসেম্বর মাসে আরেকটি সুদ কমানো অনিবার্য।
6
10
বিশ্লেষকদের মতে, সোনা এমন এক ধরণের সম্পদ যা কোনো সুদ দেয় না, ফলে সুদের হার কমে গেলে এর আকর্ষণ বাড়ে। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বা ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার সময় বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে সোনার দিকে ঝুঁকতে শুরু করেন। ফেডের সুদ কমানোর পদক্ষেপ মার্কিন ডলারের উপর চাপ সৃষ্টি করেছে, যা পরোক্ষভাবে সোনার দামে উর্ধ্বগতি ঘটাচ্ছে।
7
10
একইসঙ্গে, ট্রাম্প-শি বৈঠকের পর বাণিজ্যিক উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হয়েছে বলে বাজারে ধারণা তৈরি হয়েছে। তবে চীনের বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ এবং মার্কিন অর্থনীতির মন্থরতা বিনিয়োগকারীদের সতর্ক রেখেছে। এই অবস্থায় সোনাকে অনেকেই ‘নিরাপদ আশ্রয়’ হিসেবে ধরে রাখছেন।
8
10
শুধু সোনা নয়, অন্যান্য মূল্যবান ধাতুর দামও বৃহস্পতিবার বৃদ্ধি পেয়েছে। স্পট সিলভার ১ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্সে ৪৮.০৩ ডলারে পৌঁছেছে। প্লাটিনামের দাম ১ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১,৬০০.৬৬ ডলার এবং প্যালাডিয়ামের দাম ২.৯ শতাংশ লাফিয়ে বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রতি আউন্সে ১,৪৪১.৯৯ ডলার।
9
10
বাজার পর্যবেক্ষকদের মতে, নভেম্বর ও ডিসেম্বরে সোনার দামে আরও অস্থিরতা দেখা যেতে পারে। যদি ডিসেম্বর মাসে ফেড আবারও সুদের হার কমানোর পথে হাঁটে, তবে সোনার দাম নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে। অপরদিকে, যদি ফেড সুদের হার স্থিতিশীল রাখে এবং ডলার পুনরায় শক্তিশালী হয়, তাহলে কিছুটা মুনাফা-তোলা বিক্রি হতে পারে।
10
10
সব মিলিয়ে, বছরের শেষ প্রান্তে সোনা বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় এবং কৌশলগত সম্পদ হিসেবে থেকে যাবে বলেই মনে করছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা।