আজকাল ওয়েবডেস্ক: বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানের সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত? বন্ধুত্বের না ছাত্র-শিক্ষকের মতো? উত্তর, কোনওটাই না। বাবা মা এবং সন্তানের সম্পর্ক একেবারেই মৌলিক। বাবা মা যেমন শাসন করবেন, তেমনই জীবনের জরুরি পাঠও দেবেন খোলা মনে। কিন্তু আজও সমাজের একটি বড় সংখ্যক বাবা মা সন্তানের সঙ্গে কোনও জটিল বিষয় নিয়ে কথা বলতে চান না।
2
8
১. খোলামেলা আলোচনা ও বিশ্বাস: বয়ঃসন্ধিকালে বাবা-মায়ের উচিত তাঁদের সন্তানদের সঙ্গে খোলা মনে এবং বন্ধুত্বপূর্ণভাবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করা। প্রথমেই সন্তানদের এটা বোঝানো দরকার যে তাঁরা যেন যেকোনও বিষয়ে দ্বিধাহীন কথা বলতে পারে। বাবা মায়ের কর্তব্য সন্তানের বিশ্বাস অর্জন করা এবং এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা যেখানে তারা ভয় বা সংকোচ ছাড়াই নিজের চিন্তা, অনুভূতি এবং সমস্যাগুলো শেয়ার করতে পারে।
3
8
২. শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য: বয়ঃসন্ধিকালে শারীরিক ও মানসিক অনেক পরিবর্তন আসে। বাবা-মায়ের উচিত সন্তানদের শরীরের পরিবর্তন, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, পর্যাপ্ত ঘুম এবং নিয়মিত শরীরচর্চার গুরুত্ব সম্পর্কে বলা। পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া, যেমন - মানসিক চাপ মোকাবিলা করা, আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা এবং প্রয়োজনে মনোবিদের সাহায্য চাওয়া সম্পর্কেও আলোচনা করা উচিত।
4
8
৩. বন্ধুত্ব ও সামাজিক সম্পর্ক: এই বয়সে বন্ধু এবং সামাজিক সম্পর্কের গুরুত্ব অনেক। বাবা-মায়ের উচিত সন্তানদের ভাল বন্ধু নির্বাচন করতে উৎসাহিত করা এবং সুস্থ সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া। সেই সঙ্গে খারাপ সঙ্গ এড়িয়ে চলা এবং অন্যদের সম্মান করার বিষয়েও বলা উচিত।
5
8
৪. যৌনতা ও সম্মতি: বয়ঃসন্ধিকালে যৌনতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাবা-মায়ের উচিত সন্তানদের বয়স-উপযোগী যৌন শিক্ষা দেওয়া। নিরাপদ যৌন সম্পর্ক, গর্ভধারণের ঝুঁকি, যৌনরোগ এবং সম্মতির গুরুত্ব সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দেওয়া উচিত।
6
8
৫. অনলাইন নিরাপত্তা ও দায়িত্বশীল আচরণ: আজকালকার যুগে ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার অপরিহার্য। বাবা-মাযকেও সন্তানদের অনলাইন নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। সাইবার বুলিং, ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করার ঝুঁকি এবং অনলাইনে দায়িত্বশীল আচরণের বিষয়ে খোলাখুলি কথা বলা উচিত।
7
8
৬. পড়াশোনা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা: সন্তানের আগ্রহ ও লক্ষ্য অনুযায়ী ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করতে উৎসাহিত করা বাবা মায়ের দায়িত্ব। নিজের নয় বরং সন্তানের স্বপ্ন এবং আকাঙ্ক্ষা সম্পর্কে আলোচনা করা এবং সেই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা উচিত।
8
8
৭. মূল্যবোধ ও নৈতিকতা: বাবা-মায়ের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব সন্তানদের মধ্যে সঠিক মূল্যবোধ এবং নৈতিক গুণাবলী গড়ে তোলা। সততা, ন্যায়পরায়ণ হওয়া, সহানুভূতি, অন্যের প্রতি সম্মান এবং দায়িত্ববোধের মতো বিষয়গুলো সম্পর্কে আলোচনা করা এই সব কিছুই সন্তান বাবা মাকে দেখে দেখে। কাজেই নিজেদের আচরণের মাধ্যমে সন্তানকে এই বিষয়গুলি শেখানো উচিত।