Reporter: শ্যামশ্রী সাহা | লেখক: উপালি মুখোপাধ্যায় ০৭ মে ২০২৪ ১৪ : ২০

২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন শুরু। আসানসোলে একের পর এক প্রচারে বাবুল সুপ্রিয়। যন্ত্রের মতো সমস্ত গুরু দায়িত্ব নিখুঁত পালনের চেষ্টা করছেন। কিন্তু মন পড়ে কলকাতায়। মঙ্গলবার সকালে প্রয়াত টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপ–এর কো চেয়ারপার্সন, সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটির গভর্নিং বডির সদস্য, "আজকাল" এর ডিরেক্টর, শিল্পোদ্যোগী ও সাহিত্যিক মৌ রায়চৌধুরী। সেই খবর জেনেছেন রাজনীতিবিদ বাবুলও। তারপর থেকেই তিনি আনমনা। আজকাল ডট ইন যোগাযোগ করতেই তাঁর আক্ষেপ, ‘‘আমার বাবা ৮৬। রোজ রাত আড়াইটে-তিনটেতে ফোন করেও বাবার খবর নিতেন, ‘কাকু তুমি কেমন আছ? শরীর ভাল আছে তো?’ এমন মনের একজন মানুষ রাতারাতি নেই! ভাবতে কষ্ট হচ্ছে। আজ একবার আমার ওঁর পাশে থাকা উচিত ছিল। দায়িত্বের কারণে হল না।’’

বাবুলের মনে পড়ছে, কলকাতায় এলে তিনি খুব কম বাড়িতে যেতেন। সেখানে খাওয়াদাওয়া করতেন। মৌ রায়চৌধুরীর কাছে তাঁর অবারিত দ্বার। যাওয়ার আগে পছন্দের মেনু জানিয়ে রীতিমতো আবদার জুড়তেন, পোস্ত, চিংড়ি মাছ, মাংস খাবেন। ভাল খেলা হলেই তাঁর বাবাকে টিকিট পাঠিয়ে দিতেন মৌ রায়চৌধুরী। শুধু পাঠিয়েই থেমে থাকতেন না। ফোন করে জানাতেন, তাঁর কাকু যেন অবশ্যই খেলা দেখতে যায়। তাঁর কথায়, ‘‘দিন কয়েক আগে একই ভাবে খেলার টিকিট পাঠিয়েছিলেন বাবাকে। পাঠিয়ে ফোন, কাকু যেও। তোমার ভাল লাগবে। বাবা পাল্টে বলল, তুমি যাবে? তোমার সঙ্গে বসে দেখলে আরও ভাল লাগবে। তখনই মৌ জানিয়েছিলেন, ওঁর শরীর খুব ভাল যাচ্ছে না।’’

এমনই ছিলেন "মানুষ" মৌ রায়চৌধুরী। রাজনীতিবিদ-গায়কের মতে, প্রশংসা করতে প্রচণ্ড ভালবাসতেন তিনি। যতবার ‘চাঁদের বাড়ি’ দেখেছেন ততবার তাঁকে ফোন করেছেন। তরুণ মজুমদারের ওই ছবির নায়ক বাবুল। জানিয়েছেন, যেমন ভাল গান তেমনি ভাল অভিনয় করেন। ছবিটা দেখলেই মন ভরে যায়। এমনই অনেক স্মৃতি তাঁর সদ্যপ্রয়াত প্রযোজক, কর্মদক্ষ এক মানুষকে ঘিরে। বাবুল বলেছেন, ‘‘সমবয়সী আমরা। চলে যাওয়ার মতো বয়সই না। আমায় ফোঁটা দিতেন। পরিবারের সবকিছু খুঁটিয়ে জানতেন। এরকম একজনের চলে যাওয়া আমাদের সবার পক্ষে ক্ষতির। ওঁর ছেলের মুখটা বারবার মনে পড়ছে। আমিও তো দুই সন্তানের বাবা। খুব অল্পবয়সে মাতৃহারা হল। ওকে অন্তর থেকে সমবেদনা জানাচ্ছি।"