আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতের বৃহত্তম তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস (টিসিএস) এখনও এই মাসে কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। ১০ জুলাই, বৃহস্পতিবার একটি সাংবাদিক সম্মেলনে সংস্থার এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং প্রধান মানবসম্পদ কর্মকর্তা (সিএইচআরও), মিলিন্দ লাক্কাড় জানিয়েছেন যে সম্ভাব্য বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে সংস্থার তরফ থেকে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, "বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে আমরা এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি।"
সংস্থার প্রথম ত্রৈমাসিকের ফলাফলের রিপোর্ট ঘোষণা করা হয়েছে ১০ জুলাই। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে নিট মুনাফা ৬% বৃদ্ধি পেয়ে ১২,৭৬০ কোটি টাকা হয়েছে। গত বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকের তুলনায় মুনাফায় ১.৩% বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গিয়েছে।
২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিকে ‘অনিশ্চিত কাজের পরিবেশ’কে দায়ী করে কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির প্রক্রিয়া স্থগিত করে দেওয়া হয়েছিল। মিলিন্দ জানিয়েছেন, বেতন বৃদ্ধি বছরের যে কোনও সময় করা যেতে পারে। সবই সংস্থার ব্যবসার উপর নির্ভর করে। তিনি বলেন, "অনিশ্চিত পরিবেশের কারণে, আমরা এই বছরের মধ্যেই বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। ব্যবসার উপর নির্ভর করে এটি যে কোনও সময়য়েই হতে পারে।"

২০২৫-২৬ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকের শেষে গত ১২ মাসের ভিত্তিতে কর্মী ছাঁটাইয়ের হার ১৩.৮% বৃদ্ধি পেয়েছে। যা ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের চতুর্থ ত্রৈমাসিকের শেষে ১৩.৩% থেকে বেশি। ২০২৫-২৫ অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে এক বছর আগের একই ত্রৈমাসিকের তুলনায় সামান্য বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গিয়েছে।
টিসিএস-এর কর্মী ছাঁটাইয়ের হার গত দুই বছরে সর্বোচ্চ। মিলিন্দ জানিয়েছেন, কর্মী ছাঁটাইয়ের হার স্বস্তি মাত্রা ১৩ শতাংশের উপরে রয়েছে। আমরা সেই হার কমিয়ে আনার চেষ্টা করছি।
টিসিএস-এর কর্মী ছাঁটাইয়ের হার বৃদ্ধি পেলেও সংস্থাটির কর্মী সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ, চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে পাঁচ হাজারেরও বেশি কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। টিসিএস-এর মোট কর্মী সংখ্যা বর্তমানে ৬,১৩,০৬৯ জন। আগে যা ছিল ৬০৭,৯৭৯ জন।
আরও পড়ুন: ওষুধের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে, এই ১৭টি ওষুধ এখনই কোমডে ফ্লাশ করুন, নইলে সমূহ বিপদ
তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্র ভারতীয় অর্থনীতির অন্যতম বৃহৎ নিয়োগকর্তা এবং রাজস্ব আদায়কারী। প্রতি বছর এই ক্ষেত্র হাজার হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে। ইন্ডিয়ান ব্র্যান্ড ইক্যুইটি ফাউন্ডেশন (IBEF) এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবর্ষের শেষে ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের ব্যবসার পরিমাণ ছিল ২২৭ বিলিয়ন ডলার এবং বার্ষিক (YoY) ১৫.৫% বৃদ্ধির হার লক্ষ্য করা গিয়েছিল। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে তা আনুমানিক ২৪৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
এই বছরের শুরুতে প্রকাশিত ইন্ডাস্ট্রি রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে ভারতীয় সফটওয়্যার পণ্য শিল্প ২০২৫ সালের শেষ দিকে ১০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। কারণ বিদেশে বিনিয়োগ করা সংস্থাগুলির প্রধান লক্ষ্য।
ক্লাউড প্রযুক্তির বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প ২০২৬ সালের শেষে প্রায় এক কোটি ৪০ লক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে বলে আশা করা হচ্ছে। যার ফলে দেশের জিডিপিতে প্রায় ৩৮০ বিলিয়ন ডলারের অবদান থাকবে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের।
