আজকাল ওয়েবডেস্ক: ‘ভাইপো ভাইপো করবেন না। সাহস থাকলে নাম নিয়ে কথা বলবেন।’ সাগরে অমিত শাহর সভার ঠিক পরেই পৈলানে দাঁড়িয়ে হুঁশিয়ারি দিলেন মমতা। একই মঞ্চে তখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সেখানে দাঁড়িয়েই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বললেন, ‘আগে ভাইপোর সঙ্গে লড়ে দেখান।’ ছাড়লেন না অমিত শাহর ছেলে জয় শাহকে। বললেন, দুর্নীতির অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধেও কম নয়। তবে মনে রাখতে হবে জয়ও আসলে তাঁর ‘ভাইপো’ই।
এদিন সাগরে সভা করেন অমিত শাহ। খোঁচা দেন মমতা ব্যানার্জিকে। নির্বাচনী প্রচারে এসে বারবার বিজেপি–র নেতা–মন্ত্রীরা নাম না করে ‘পিসি–ভাইপো’ বলে কটাক্ষ করেছেন। এদিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
শাহর সভার কিছুক্ষণের মধ্যেই পৈলানে দাঁড়িয়ে মমতা ফিরিয়ে দেন একের পর এক কটাক্ষের জবাব। বলেন, ‘খালি পিসি–ভাইপো করছে। আগে ভাইপোর সঙ্গে লড়াই করে দেখাও। মনে রাখুন অমিত শাহ, দুর্নীতির অভিযোগ থেকে আপনার ছেলেও রক্ষা পাবে না। নিজের ছেলেকে আড়াল করবেন আর বাকিদের ভয় দেখাবেন? আপনার ছেলে কী করে ক্রিকেটের মাথায় বসল? কী করে কোটি কোটি টাকা করল? মনে রাখবেন সেও আমার ভাইপো।’
নির্বাচনী প্রচারে এসে তৃণমূলের পরিবারতন্ত্র নিয়েও বারবার সরব হয়েছেন বিজেপি–র শীর্ষনেতারা। এমনকী এই নিয়ে প্রাক্তন দলকে সব সভাতেই একহাত নিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। এবার তারও জবাব দিলেন মমতা। স্পষ্ট ভাষায় বললেন, অভিষেককে তিনি মোটেও বাড়তি প্রাধান্য দেন না। তাহলে কেন শুধু পরিবারের এক জনই রাজনীতিতে? জবাবে মমতা বললেন, ‘হাজরায় যখন আমাকে মারা হয়েছিল, মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ও তখন ছোট। মাথায় ব্যান্ডেজ দেখে একা একাই কংগ্রেসের পতাকা নিয়ে মিছিল করত। স্লোগান দিত, দিদিকে কেন মারলে জবাব দাও। তার জন্যই ওকে রাজনীতিতে এনেছি। তোমাদের ছেলেমেয়েরা তো বিদেশে চলে যায়। আমাদের ছেলেমেয়েরা এই মাটিতে থেকে লড়াই করে।’
এর পরেই ফের অভিযোগ তুললেন তিনি। বললেন, ‘অভিষেককে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা হয়নি? আজও একটা চোখে দেখতে পায় না ও।’ তাঁর আশ্বাস, ‘আমার পরিবার এমন কোনও কাজ করবে না, যাতে বাংলার মানুষের ক্ষতি হবে।’
এর পর মঞ্চে দাঁড়ানো অভিষেককে সমবেদনাও জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। বললেন, ‘আমার খারাপ লাগে রোজ আমার জন্য অভিষেককে কথা শুনতে হয়। আমার বাড়ির মেয়েদের আর ছোটদের গালাগালি দেবেন না। সে অভিষেক হোক বা অন্য কেউ হোক। তাঁকে আমি কিছুই করিনি। লোকসভায় দাঁড়িয়েছে অভিষেক নিজে। অমিত শাহ তোমার ছেলেকেও পার্টিতে নামাও। আগুন নিয়ে খেল না।’
এর পরেই মমতার ফের কটাক্ষ, ‘একটা দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে এত মিথ্যে বলতে পারে, আগে দেখিনি। কৃষকদের অপমান করে পাঞ্জাব থেকে সাফ হয়ে গিয়েছে।’ তাঁর হুঙ্কার, এবার পালা বাংলায়। তৃণমূল সাংসদ অভিষেক স্পষ্ট জানিয়েছেন, এবার বাংলায় ২০০–র বেশি আসন পেয়ে জিতবে তৃণমূল।
Aajkaal © 2017