আজকালের প্রতিবেদন, আলিপুরদুয়ার, ১০ সেপ্টেম্বর- পুজোর আগে ফের বিপাকে ডুয়ার্সের বেশ কিছু চা–বাগান। ভুটান পাহাড়ে একটানা বর্ষণের জেরে জেলার কালচিনি ব্লকের মেচপাড়া, সেন্ট্রাল ডুয়ার্স–সহ বেশ কয়েকটি চা–বাগান ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। স্থানীয় পানা–বাসরা নদীর জল বৃদ্ধি পাওয়ায় ২ টি বাগানে পলি মিশ্রিত জল ঢুকে পড়েছে। তেমনি মেচপাড়া চা–বাগানের মুল ফ্যাক্টরির সঙ্গে বাগানের যোগাযোগ রক্ষাকারী প্রধান রাস্তাটি জলের তোড়ে ভেসে গেছে। বাগান ও ফ্যাক্টরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
সেন্ট্রাল ডুয়ার্স চা–বাগানের বড় অংশ নদীর জলে প্লাবিত। এছাড়াও জেলার নাংডালা চা–বাগান, নাগরাকাটা ব্লকের বেশ কিছু বাগান ক্ষতির মুখে পড়েছে। টি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার ডুয়ার্স শাখার সম্পাদক রাম অবতার শর্মা জানান, মেচপাড়া চা–বাগানের বিষয়টি আজই আমরা জেলাশাসককে জানিয়েছি। রাস্তাটির দ্রুত মেরামত না হলে বাগানের চায়ের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। মেচপাড়া ছাড়াও গোপালপুর, নাংডালা, আর্যমান চা–বাগানগুলিতে প্রচুর চা–গাছ নষ্ট হয়েছে। শেষ ২৪ ঘণ্টায় অনেক বাগানে ১৫–১৭ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। যা এই শিল্পের পক্ষে ক্ষতিকর। চা–মালিকদের অপর সংগঠন ডিবিআইটিএ–র সচিব সুমন্ত গুহঠাকুরতা বলেন, ‘এই মরশুমে দ্বিতীয়বার বৃহৎ ক্ষতির মুখে পড়ল চা–শিল্প। বর্ষার প্রথমে একবার কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে দ্বিতীয়বার ফের ক্ষতির মুখে পড়তে হল। আমরা আমাদের সদস্যভুক্ত সবকটি বাগানের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। আর কিছুদিন পরই দুর্গাপুজোর বোনাস রয়েছে। তার আগে পরিবেশগত একটা ধাক্কা সামলে উঠতে সময় লাগবে।’
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, কম বেশি ৫০ টি চা–বাগান ক্ষতিগ্রস্ত। চা–বিশেষজ্ঞদের মতে, ডুয়ার্সের পলি মিশ্রিত নদীর জল চা–বাগানের ভেতর ঢুকলে জমিতে পিএইচ–এর পরিমাণ বাড়ে। চা পাতা ঝলসে যায়। উৎপাদন ব্যাপকভাবে কমে যায়। এছাড়াও বৃষ্টিতে চা–বাগানের ভেতর রাস্তাঘাট, সেতু, কালভার্ট, শ্রমিক আবাসন সবকিছুরই ক্ষতি হয়। আগামী কয়েকদিন টানা বৃষ্টি চললে আরও বড় ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে এই শিল্পে চা–শিল্পে।
রবিবার রাত থেকে প্রবল বর্ষণে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে আলিপুরদুয়ার থেকে শিলিগুড়ি। অনেক রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত। তার মধ্যে সবথেকে খারাপ অবস্থা নাগরাকাটার এই ৩১ সি জাতীয় সড়ক। জলের তোড়ে ভয়ানক অবস্থা। ছবি: অতীশ সেন