আজকাল ওয়েবডেস্ক: ২০২৪ সালের জুন মাসে বাঁকুড়ার বাসিন্দা মনোজ হাতি এবং পিয়ালী হাতির সংসার আলো করে জন্ম নেয় ঈশান। জন্মের কয়েকদিন পরেই জানা যায় বিরল স্পাইনাল মাস্কুলার অ্যাট্রফি (এসএমএ) টাইপ ১ রোগে আক্রান্ত হয়েছে ছোট ঈশান। কী এই রোগ। পেশির সঞ্চালনকে নিয়ন্ত্রণ করে যে মোটর নিউরোন, তা নষ্ট হয়ে গেলে এই রোগ হয়। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বুদ্ধির বিকাশ ঘটলেও স্নায়ুর বিকাশ ঘটবে না। ক্রমে শুকিয়ে যাবে। যেহেতু রোগটি জিনবাহিত, তাই বাবা-মায়ের থেকেই তা আসে শিশুর শরীরে। 

স্পাইনাল মাস্কুলার অ্যাট্রফি এমন এক জিনগত রোগ যার ওষুধ ভারতে পাওয়া যায় না। আমেরিকার ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ এই রোগের চিকিৎসায় বিশেষ এক রকম জিন থেরাপিতে অনুমোদন দিয়েছে। সেই থেরাপি যথেষ্টই খরচসাপেক্ষ। তাতে যে ওষুধটি প্রয়োগ করা হয়, তার নাম ‘জোলগেনসমা’। এর দাম ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৬ কোটি টাকা। আমেরিকা থেকে আমদানি করতে হয়। ২০২৪ সালের ৩১ জুলাই থেকে ওষুধটির আমদানিও বন্ধ হয়ে গিয়েছে এ দেশে। ওষুধটির প্রস্তুতকারী সংস্থা, গ্লোবাল ম্যানেজড অ্যাকসেস প্রোগ্রাম (জিএমএপি)-এর মাধ্যমে বিশ্বের ৩৬টি দেশ বিনামূল্যে এই থেরাপি দেওয়ার সুযোগ করে দেয়। তার জন্য লটারি হয়। 

এসএমএ টাইপ-১-এর একমাত্র জিন থেরাপির মাধ্যমেই চিকিৎসা সম্ভব। তাও দু'বছর বয়সের মধ্যে চিকিৎসা শুরু করতে হয়। নইলে আর কাজ করে না ওষুধ। শিশুটির হাতে সময় খুব কম। ঈশানের পরিবারে লোকজন দোরে দোরে ঘুরছেন টাকা জোগাড় করার জন্য। কিন্তু টাকার পরিমাণ ১৬ কোটি টাকা। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সাহায্যের জন্য এগিয়ে এলেও যে পরিমাণ টাকা উঠছে যথেষ্ট নয়। ক্রাউড ফান্ডিংও করা হচ্ছে। রবিবার রাতে শ্বাসকষ্টের সমস্যার কারণে শিশুটিকে বাঁকুড়া মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সোমবার তাকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। সরকারের সাহায্য ছাড়া শিশুটির পরিবার অসহায়।