আজকাল ওয়েবডেস্ক: মঙ্গলবারও উত্তেজনা বজায় রয়েছে এনআরএস হাসপাতালে। সকাল থেকে হাসপাতালের মূল দুটি গেটে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন জুনিয়র ডাক্তাররা। ভোগান্তিতে পড়েন হাসাপাতালে আসা রোগী এবং তাদের পরিজনেরা। তালা না খোলায় বিক্ষুব্ধ রোগী এবং তাঁদের পরিজনরা শিয়ালদার সামনে এপিসি রোড অবরোধ করেন। একটি গেটের তালা ভেঙে ফেলেন। ঠেকাতে গেলে পুলিসের সঙ্গে হাতাহাতি বাঁধে রোগীর পরিজনদের। কিন্তু হাসপাতাল সুপারের ঘরের সামনের গেট এখনও তালাবন্ধ জুনিয়র ডাক্তাররা সাফ জানিয়ে দেন মঙ্গলবার কোনও বহির্বিভাগ চালু হবে না। কোনও নতুন রোগীকে টিকিট দেওয়া হবে না। ছোট দুটি গেট দিয়ে যে সব রোগীরা ভর্তি আছেন তাঁদের পরিজনদের টিকিট দেখিয়ে হাসপাতালে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালজুড়ে মোতায়েন রয়েছে প্রচুর পুলিসকর্মী। নেমেছে র্যাফ।
দুপুরের দিকে এনআরএস–এ গিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেছেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
তিনি বলেছেন, সকালে বন্ধ থাকলেও পরে জরুরি বিভাগ খোলা হয়েছে। মৃত রোগী শাহিদের পরিবারের চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, জখম জুনিয়র ডাক্তার পরিবহ মুখার্জির সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। তাঁর শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। পরিবহ মল্লিকবাজারের ইন্সটিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সের আইটিইউ–তে ভর্তি আছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন সকালে পরিবহের খিঁচুনি হওয়ায় কার্ডিয়্যাক অ্যারেস্টের আশঙ্কা হয়েছিল। তবে আপাতত পরিবহর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকলেও স্থিতিশীল।
সকাল ৯.৩০ মিনিট নাগাদ শিক্ষা–স্বাস্থ্য অধিকর্তা প্রদীপকুমার মিত্র হাসপাতালে গিয়ে বিক্ষোভরত জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলে সমাধান সূত্র খোঁজার চেষ্টা করলেও তা ব্যর্থ হয়। কিন্তু অবস্থানে অনড় জুনিয়র ডাক্তাররা সাফ জানিয়ে দেন, প্রায়ই এভাবে রোগী মৃত্যুর পর পরিষেবায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে রোগীর আত্মীয়রা তাঁদের মারধর করেন। সেসময় আশ্বাস দিলেও প্রশাসন বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের নিরাপত্তার কোনও ব্যবস্থাই করেনি আজও।
নিরাপত্তা না মেলা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলবে। এরপর দুপুরের দিকে ফের আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন প্রদীপকুমার মিত্র এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এনআরএস–এ জুনিয়র ডাক্তারদের উপর হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার কলকাতা সহ জেলার সব হাসপাতালের চিকিৎসকরা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য প্রতীকী কর্মবিরতি পালন করছেন। তবে জরুরি বিভাগ চালু রাখা হয়েছে সব হাসপাতালেই। বারবার এভাবে চিকিৎসকদের উপর হামলা রুখতে প্রশাসন কী ব্যবস্থা নিচ্ছে সেই প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, সোমবার শাহিদের মৃত্যুতে গাফিলতির অভিযোগ তুলে জুনিয়র ডাক্তারদের মারধর করেন রোগীর পরিজনরা। জুনিয়র ডাক্তাররাও পাল্টা মারধর করেন। রোগীর পরিজনদের ছোড়া ইটের ঘায়ে মাথা ফেটে যায় পরিবহ মুখার্জির। রণক্ষেত্র হাসপাতাল চত্বরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিস লাঠিচার্জ করে।
ছবি: এএনআই